করোনার প্রভাব কমলে রাজ্যের যে যে সামুদ্রিক স্থানে ভিড় বাড়বে পর্যটকদের
করোনার প্রভাব কমলে রাজ্যের যে যে সামুদ্রিক স্থানে ভিড় বাড়বে পর্যটকদের
করোনা ভাইরাসের প্রভাবে আতঙ্কিত হয়ে রয়েছেন মানুষ। কাজের সময় ছাড়া মূলত বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন না কেউই। কেউ তো বাড়ি থেকেই অফিসের কাজ করে কুল পাচ্ছেন না। এসবের মধ্যে ভ্রমণ তো দূর, বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা সেরে ফেলাও অধিকাংশ মানুষের কাছে বাড়াবাড়ি। তবু সাহস করে বেরিয়ে পড়ছেন কেউ কেউ। সেই প্রয়াস যে আদৌ সুরক্ষিত নয়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অগত্যা অতিমারী পরিস্থিতি কেটে যাওয়ার অপেক্ষায় বসে রয়েছেন যাঁরা, তাঁদের জন্য রইল রাজ্যের কিছু সামুদ্রিক এলাকার ঠিকানা।
করোনা ভাইরাসে মনোভাব পরিবর্তন
পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় ভ্রমণস্থান হয়ে ওঠা দিঘায়, বিপুল পরিমাণ পর্যটকের আনাগোনা ঘটে থাকে প্রতি বছর। ঘরের কাছে এই টুরিস্ট স্পটকে ঢেলে সাজিয়েছে রাজ্য সরকার। কম খরচায় দুই-তিন দিনের জন্য ঘুরে আসার জায়গা দিঘায় সব মরশুমেই থিক থিক করে ভিড়। করোনা ভাইরাসের আবহে সেই স্থানেই মাছি তাড়ানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ভিড়ে ঠেলে ঘুরুঘুরু করার দিন যে এখন আর নেই, তা বুঝতে পারছেন পর্যটকরা। তাই তো ফাঁকা জায়গাগুলিকেই বেছে নেওয়া হচ্ছে বেশি। করোনা-উত্তর কালেও এই সব এলাকাতেই ভিড় জমাবেন মানুষ।
তাজপুর
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র তাজপুরে এখনও সেভাবে ভ্রমণ-পিপাসুদের নজর পড়েনি। তাই তুলনামূলকভাবে কার্যত ফাঁকাই থাকে এখানকার সমুদ্র সৈকত। হাতেগোনা কয়েকটি রিসর্ট ও হোটেল তাজপুরের রসদ। দিঘার নিকটবর্তী মন্দারমণি ও শঙ্করপুরের মাঝে অবস্থিত এই পর্যটন কেন্দ্রের জনপ্রিয়তা বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। তাজপুরে পর্যটনের প্রসারের পাশাপাশি সমুদ্র বন্দর তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। হাওড়া কিংবা বারাসত থেকে সরকারি ও বেসরকারি বাস পর্যটকদের পৌঁছে দেবে মূল ভ্রমণ স্থানের নিটকবর্তী এলাকায়। ট্রেনে রামনগর স্টেশনে নেমেও টোটো কিংবা অটোতে পৌঁছে যাওয়া যায় তাজপুরে।
মন্দারমণি
দিঘার মতো ততটা জনপ্রিয় না হলেও পূর্ব মেদিনীপুরের আরও এক টুরিস্ট স্পট মন্দারমণির জনপ্রিয়তা বেড়েছে ইদানীংকালে। কলকাতা এবং হাওড়া থেকে জাতীয় সড়কের মাধ্যমে সংযুক্ত এই এলাকার সমুদ্র সৈকত অগণিত লাল কাকড়ার দেশ। কাঁথি থেকে চাওয়ালখোলা হয়ে মন্দারমণি যেতে বেশি সময় লাগে না। তাজপুরের মতো না হলেও তুলনামূলক ভিড়হীন এবং শান্ত এই এলাকায় সমুদ্রের ছোটো ঢেউয়ের সাক্ষী থাকতে করোনা-উত্তর কালে সদলবলে পৌঁছে যাওয়াই যেতে পারে।
শঙ্করপুর
দিঘা থেকে ১৪ কিলোমিটার পূর্বে দুটি সমুদ্র সৈকত জুড়ে শঙ্করপুর তৈরি হয়েছে। সমুদ্রের উঁচু ঢেউ, ঝাউ বন, নিস্তব্ধতা, বালিয়াড়ি ছাড়াও মৎস্য আহরণ কেন্দ্রে এই এলাকার অন্যতম আকর্ষণ।
হেনরী আইল্যান্ড
দক্ষিণ ২৪ পরগনার অন্যতম সামুদ্রিক পর্যটন কেন্দ্র বকখালির নিকটে অবস্থিত হেনরী আইল্যান্ড কার্যত ফাঁকাই থাকে। ম্যানগ্রোভ অরণ্য, নানারূপ মৎস্য চাষের প্রকল্প এবং ওয়াচ টাওয়ার এই দ্বীপের অন্যতম আকর্ষণ। শীতকালে পরিযায়ী পাখির সমাবেশ বসে এই হেনরী আইল্যান্ডে।