বোতামের আকারের ওয়্যারলেস অ্যান্টেনা! পেটেন্ট পেলেন বাঙালি বিজ্ঞানী
বিজ্ঞানের আবিষ্কারের সঙ্গে যুক্ত হল আরও এক বাঙালি নাম। মেসরার বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি অধ্যাপক এবং বিজ্ঞানী শ্রীকান্ত পাল ওয়্যারলেস অ্যান্টেনার জন্য পেটেন্ট পেয়েছেন। তবে এর জন্য তাঁকে নয় বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। ত
বিজ্ঞানের আবিষ্কারের সঙ্গে যুক্ত হল আরও এক বাঙালি নাম। মেসরার বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি অধ্যাপক এবং বিজ্ঞানী শ্রীকান্ত পাল ওয়্যারলেস অ্যান্টেনার জন্য পেটেন্ট পেয়েছেন। তবে এর জন্য তাঁকে নয় বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। তাঁর এই ওয়্যারলেস অ্যান্টেনাটি বোতামের আকারের। ব্লুটুথের থেকে ১০০ গুণ দ্রুতগতির।
বোতামের আকারের ওয়্যারলেস অ্যান্টেনার নাম সুপার কমপ্যাক্ট আলট্রা-ওয়াইডব্যান্ড প্ল্যানার অ্যান্টেনা। বিজ্ঞানী শ্রীকান্ত পালের দাবি, স্কুল হোক কিংবা হাসপাতাল, যে কোনও অফিস অটোমেশনের জন্য ব্যবহার করা অয়্যার্ড লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক-এর ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাবে। তাঁর এই অ্যান্টেনা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে কয়েক গিগাবাইট ডেটা ফাইল স্থানান্তর করতে পারে। এছাড়াও এটি ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল নয় এমন উচ্চগতির যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সক্ষম করে অভ্যন্তরীণ সংযোগকে নিরাপদ রাখবে।
বাঁকুড়ার বাসিন্দা, যাদবপুরের প্রাক্তনী শ্রীকান্ত পাল বিআইটি মেসরার ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অধ্যাপক। তিনি এই অয়্যারলেস অ্যান্টেনা নিয়ে কাজ শুরু করেন ২০১২ সালে। এব্যাপারে তাঁর সঙ্গী ছিলেন পিএইচডি স্কলার অপর বাঙালি মৃন্ময় চক্রবর্তী। বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির সহায়তায় ছাত্র-গাইডের এই জুটি একবছরের মধ্যে অ্যান্টেনা তৈরি করেন। ২০১৩ সালে জুলাইয়ে এই পেটেন্টের জন্য আবেদন করা হয়। ২০২২-এর ২৬ অক্টোবর কেন্দ্রীয় সরকারের পেটেন্ট অফিসে সেই আবেদন অনুমোদন পায়। এই পেটেন্টের জন্য যে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে, তাতে লেখা রয়েছে অধ্যাপক শ্রীকান্ত পাল, ড. মৃন্ময় চক্রবর্তী এবং বিআইটি মেসরা। আলট্রা ওয়াইব্যান্ড অ্যান্টেনাটি ২০ বছরের জন্য তৈরির পেটেন্ট দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় বিজ্ঞানী শ্রীকান্ত পাল বলেছেন, এই অ্যান্টেনাটি বিশ্বের সব থেকে ছোট( ১৪ মিমি x ১১ মিমি)। যার ব্যান্ডউইথ ১০.১। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই অ্যান্টেনাটি ব্লুটুথের চেয়ে ১০০ গুণ দ্রুত এবং পরিসীমা ১০০ মিটার। যেথানে একটি স্ট্যান্ডার্ড আলট্রা-ওয়াইড স্পেকট্রাম ৩.১ গিগাহার্জ থেকে ১০.৬ গিগাহার্জ ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে, সেখানে এই অ্যান্টেনাটি ১.৮ গিগাহার্জ থেকে ১৮ গিগাহার্জ ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে। এই অ্যান্টেনাকে প্ল্যানার প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড আকারে কনফিগার করা যায় এবং মাউন্ট করার সুবিধার জন্য যে কোনও পৃষ্টে আটকানো যায়। বিজ্ঞানী পাল আরও জানিয়েছেন, এই অ্যান্টেনার নকশাটিও সহজ। এটি তৈরিতে সস্তা উপাদান ফাইবার-রিইনফোর্সড প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, অ্যান্টেনাটি বহু কাজে ব্যবহার করা যাবে। এটিকে বেশি-রেজোলিউশনের ভিডিও-র মাধ্যমে অস্ত্রোপচারের সময়ও ব্যবহার করা যাবে। এছাড়াও বেশি গতির অয়্যালরেস ডেটা স্থানান্তর থেকে শুরু করে সিনেমা দেখার কাজে তা ব্যবহার করা যাবে।