টিকা নিয়ে ছড়াচ্ছে গুজবে, ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে কী কী সতর্কতার কথা বলছেন চিকিৎসকেরা ?
ইতিমধ্যেই করোনা টিকা পেয়ে গেছেন ভারতের প্রায় ১.৬৩ কোটি মানুষ। প্রথম পর্যায়ে বড় অংশের প্রথমসারির কোভিড যোদ্ধাদের টিকাকরণও সম্পন্ন হয়েছে। সম্প্রতি দ্বিতীয় পর্যায়ে ষাটোর্ধ্ব ও ৪৫ বছরের নিচে কোমরবিডিটি যুক্ত নাগরিকদের টিকাকরণ শুরু হয়েছে। যদিও এরই মধ্যে করোনা টিকা নিয়ে ছড়িয়েছে নানাবিধ গুজব। করোনা টিকা নেওয়ার পর নানারকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথাও জানিয়েছেন বেশকিছু গ্রহীতা। এহেন অবস্থায় সবদিক বিচার করে চিকিৎসকদের সঙ্গে শলাপরামর্শ করে তারপরেই টিকা গ্রহণের নিদান দিচ্ছেন করোনাবিদরা।
করোনা টিকার ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অতি স্বাভাবিক ঘটনা
বৃহৎ সংখ্যক নাগরিকদের করোনা টিকাকরণ হলে যে কিছু সংখ্যক মানুষের মধ্যে সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে, সে সম্ভাবনার কথা আগেই জানিয়েছিলেন গবেষকরা। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের কোভিড টাস্কফোর্সের সদস্য শশাঙ্ক জোশি সেই দাবীতেই সহমত পোষণ করেছেন। ভারত বায়োটেকের 'কোভ্যাক্সিন' হোক বা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনেকার 'কোভিশিল্ড', যেকোনো প্রতিষেধক নেওয়ার পূর্বেই যে কিছু সাধারণ সাবধানতা অবলম্বন প্রয়োজন, তা জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
ভ্যাকসিন গ্রহণের পূর্বে দরকার চিকিৎসকের ছাড়পত্র
করোনাবিদদের মতে, ভ্যাকসিন নেওয়ার পূর্বে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে সম্পূর্ণ ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি), সি-রিয়্যাক্টিভি প্রোটিন (সিআরপি), ইমিউনোগ্লোবিউলিন-ই (আইজিই)-র মত পরীক্ষা করে নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি প্রতিষেধক নেওয়ার আগে প্রয়োজনীয় ওষুধ খাওয়া বা মনকে শান্ত রাখা অবশ্য প্রয়োজনীয়। পাশাপাশি টিকাকরণের আগে ডায়াবেটিস ও রক্তচাপের রোগীদের শারীরিক পরীক্ষা করা দরকারি। ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে কর্কট আক্রান্ত বা কেমোথেরাপি গ্রহীতাদের চিকিৎসকদের সঙ্গে শলাপরামর্শ বাধ্যতামূলক।
থাকতে হবে চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে
গবেষকদের মতে, কোভিডের চিকিৎসা হিসেব আগেই রক্তের প্লাজমা বা মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি নিয়ে থাকলে নেওয়া যাবে না টিকা। পাশাপাশি টিকাকরণের পর নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণের আওতায় থাকাটা বাধ্যতামূলক টিকা গ্রহীতাদের ক্ষেত্রে। টিকা নেওয়ার স্থানে প্রদাহ, বমিবমি ভাব বা হালকা জ্বর টিকার সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, আর তাই এতে আশঙ্কিত হতে নিষেধ করেছেন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি ডায়াবেটিস, রক্তচাপের সমস্যা বা কর্কট রোগ ধরা পড়ার একমাসের মধ্যে টিকাকরণ সম্পূৰ্ণ নিষিদ্ধ বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রকের আধিকারিকরা।
টিকা নেওয়ার পরেও সংক্রমণের সম্ভাবনা?
শরীরে বিজাতীয় কোভিড ভাইরাস প্রবেশ করলে কিভাবে আচরণ করা উচিত, তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধী শক্তিকে শেখায় কোভিড টিকা। গবেষকদের মতে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার শক্তিশালী হতে লাগে বেশ কয়েক সপ্তাহ। ফলে টিকা নেওয়ার পরেও যে নাগরিকরা করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন, সে সম্পর্কে সতর্ক করেছেন করোনাবিদরা। প্রতিষেধক নেওয়ার পরেও যে মাস্ক পরিধান, শারীরিক দূরত্ব বজায়ের ন্যায় অন্যান্য করোনাবিধি মেনে চলা বাধ্যতামূলক, তা স্পষ্ট করছেন ভ্যাকসিন সাইট অফিসাররা।