১৪ দিনের লকডাউনে কি ভ্যাকসিন পর্ব চলবে বাংলায়? সাধারণ মানুষের বিভ্রান্তি কাটিয়ে উত্তর দিল নবান্ন
সংক্রমণের চেন ভাঙতে অবশেষে লকডাউনের পথেই হাঁটল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ প্রায় ২১ হাজার ছুঁইছুঁই। এই অবস্থায় আরও কড়াকড়ির রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য হল রাজ্য সরকার। আর তাই করোনা ভাইরাসের চেন ভাঙতে আগামী
সংক্রমণের চেন ভাঙতে অবশেষে লকডাউনের পথেই হাঁটল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ প্রায় ২১ হাজার ছুঁইছুঁই। এই অবস্থায় আরও কড়াকড়ির রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য হল রাজ্য সরকার।
আর তাই করোনা ভাইরাসের চেন ভাঙতে আগামী দু-সপ্তাহর জন্য রাজ্যে আরও কড়াকড়ি করা হল।
কাল অর্থাৎ রবিবার সকাল ৬টা থেকে ৩০ মে পর্যন্ত গোটা রাজ্যে কড়াকড়ি চলবে।
নবান্নে শনিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনটাই জানালেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই মুহূর্তে রাজ্যজুড়ে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ চলছে। দুই সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করা হলেও ভ্যাকসিন বন্ধ থাকবে কিনা তা নিয়ে কোনও কিছু বলা হয়নি ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
ফলে এই বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়। অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করতে থাকে লকডাউনের কারণে সম্ভবত ভ্যাকসিনের কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু সেই আতঙ্ক কাটাতে প্রশাসনের তরফে বিষয়টি পরিষ্কার করে বলে দেওয়া হয়েছ।
নবান্ন বলছে, নতুন করে কড়াকড়ি চালু হলেও করোনার টিকাকরণ চালু থাকবে আগের মতোই। টিকাকরণ যে হেতু জরুরি পরিষেবার আওতায় পড়ছে তাই টিকাকরণ কেন্দ্রগুলি খোলা থাকবে। নির্দিষ্ট করে দেওয়া সেন্টারগুলিতে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ চলছে।
তবে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করতে হবে নিজেদেরই। সংক্রমণের চেন ভাঙতে আগেই লোকাল ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নয়া নির্দেশিকাতে বাস, মেট্রো, অটো, ট্যাক্সি চলাচলও বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। তাহলে কীভাবে টিকা কেন্দ্রগুলিতে মানুষ পৌঁছবে? সে বিষয়টিও পরিষ্কার করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
এক্ষেত্রে টিকাকেন্দ্রে টিকা নিতে যাওয়ার জন্য তাতে ছাড় দেওয়া হয়েছে। নিজের গাড়ি নিয়েও টিকাকেন্দ্রে যেতে পারবেন সাধারণ মানুষ। আবার ট্যাক্সি, অটো বা গাড়ি ভাড়া করেও যেতে পারবেন। তবে সব ক্ষেত্রেই মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক।
অন্যদিকে রবিবার থেকে ৩০ মে পর্যন্ত রাজ্যে কড়াকড়ি। আগামীকাল রবিবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হচ্ছে এই কড়াকড়ি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করা হয়েছে। চিকিৎসক কুণাল সরকার রাজ্য সরকারের এই সিন্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছন।
একই সঙ্গে এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডাক্তারবাবু বলেন, "সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তাতে এই সিদ্ধান্তের দরকার ছিল। এতে একটা সাময়িক নিয়ন্ত্রণ হবে। কিন্তু এই সাময়িক নিয়ন্ত্রণেরও দরকার রয়েছে। " এতে সংক্রমণ কিছুটা হলেও কমবে বলে আশা কুণাল সরকারের।
উল্লেখ্য, বাংলায় দৈনিক করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির হার প্রায় ৩০ শতাংশের কাছে। টেস্টিংয়ের সঙ্গেই তালমিলিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। রাজ্যের করোনা পরি্স্থিতির তাই সে অর্থে কোনও উন্নতি হয়নি। স্বস্তি শুধু এটুকুই যে, তালমিলিয়ে বাড়থে করোনা রোগীর সু্স্থতার সংখ্যা।
তবে করোনায় টানা ১১ দিন ১০০-র উপরে মৃত্যু কিন্তু উদ্বেগ বাড়িয়েই চলেছে। শুক্রবারের স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, বিগত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ২০৮৪৬ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা গতদিন পর্যন্ত ছিল ১০ লক্ষ ৭৩ হাজার ৯৫৬ জন।
২০৮৪৬ জন বেড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ লক্ষ ৯৪ হাজার ৮০২ জন। রাজ্যে করোনা সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২৯৯৩। এদিন মৃত্যু হয়েছে ১৩৬ জনের।
শুক্রবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মোট আক্রান্ত ১০ লক্ষ ৯৪ হাজার ৮০২ জনের মধ্যে এই মুহূর্তে সক্রিয় করোনা রোগী ১ লক্ষ ৩১ হাজার ৭৯২ জন। এদিন ১৫৭৯ জন বাড়ল সক্রিয়ের সংখ্যা। দৈনিক আক্রান্ত ২০৮৪৬ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা মুক্ত হয়েছেন ১৯১৩১ জন। মোট করোনা মুক্ত হলেন ৯ লক্ষ ৫০ হাজার ১৭ জন। সুস্থতার রেট হয়েছে ৮৬.৭৮ শতাংশ।