তৃণমূলত্যাগী 'নব্য'দের মানছেন না বিজেপির 'আদি'রা! একুশে বুমেরাংয়ের আশঙ্কা সঙ্ঘের
তৃণমূলের নব্যদের মানছেন না বিজেপির আদিরা! একুশে বুমেরাংয়ের আশঙ্কা সঙ্ঘের
বাংলায় ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে পদ্মশিবিরে যোগদানের হিড়িক বিপাকে ফেলতে পারে বিজেপিকে। সঙ্ঘ পরিবার সম্প্রতি এই আশঙ্কা করেছে। তৃণমূল নেতাদের যোগদানে যেভাবে বিজেপিতে অশান্তির কালো মেঘ জমছে, তাতেই অশনি সংকেত দেখছে আরএসএস। তাই সঙ্ঘের তরফে আগেভাগে সাবধান করে দিয়েছে বিজেপিকে।
যোগদানে সমস্যা জট পাকাতে শুরু করেছে বিজেপিতে
তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার হিড়িক ফেলে দিয়েছে। তা দেখে উপরে উপরে বাড়বাড়ন্ত মনে হলেও, ভিতরে সমস্যা জট পাকাতে শুরু করেছে। বহু জায়গাতেই তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের মানতে নারাজ স্থানীয় নেতৃত্ব। কর্মীদের মধ্যেও তৈরি হচ্ছে বিক্ষোভ। তাঁরা দলবদলের কাণ্ডারিদের নাম করেও বিদ্রোহ দেখাচ্ছে।
আর যোগদান নয়, ভোট ফুরোলে আবার হবে দলবদল
বঙ্গ বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয় এদিন স্পষ্ট জানিয়েছেন, ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য দল থেকে আর কাউকেই দলে নেওয়া হবে না। ভোট ফুরালে আবার বিজেপি তাদের দরজা খুলবে। গত কয়েকমাস ধরে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগদান করেছেন বিধায়ক-মন্ত্রী-সাংসদরা। ছোট-বড় সমস্ত নেতারাই যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে।
স্রোতের মতো লোক নিলে দাম চোকাতে হবে, আশঙ্কা
এখানেই প্রশ্ন, কেন হঠাৎ এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিল বিজেপি। আসলে যেভাবে যোগদান মেলা চলছে, তা না-পসন্দ সঙ্ঘের। আরএসএসের তরফে গতদিনই বিজেপিকে কড়া বার্তা দিয়ে জানানো হয়েছে সে কথা। দলের নীতি-আদর্শের সঙ্গে পরিচয় না করিয়ে স্রোতের মতো লোক নিলে দাম চোকাতে হবে বলে বার্তা দিয়েছে আরএসএস। সেই কারণেই কৈলাশের এই সিদ্ধান্ত বলে অভিমত।
আদি-নব্যের বনিবনা নেই, সিঁদুরে মেঘ দেখছে সঙ্ঘ
সম্প্রতি তৃণমূল ও অন্য দল থেকে বিজেপিতে যোগাদেনর হিড়িক পড়ে গিয়েছে। সম্প্রতি যাঁরা আলছেন, তাঁরাই এখন নব্য। এই নব্যদের সঙ্গে আদিদের দ্বন্দ্ব লেগেই রয়েছে। বহু ক্ষেত্রেই নব্যদের মেনে নিচ্ছেন না আদি নেতা-কর্মীরা। এই দ্বন্দ্বের ফল বুমেরাং হতে পারে একুশের ভোটে। আদি-নব্যের বনিবনা না থাকায় বিজেপিকে নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে আরএসএস।
হিতে বিপরীত হবে বলে মনে করছে আরএসএস
আরএসএসের নিষেধ মেনেই বিজেপি পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। বেনো জল আটকাতে গেট বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে বিজেপি। ভোটের মুখে নতুনদের নিয়ে সংগঠন মজবুত করতে গিয়ে হিতে বিপরীত হবে বলে মনে করছে আরএসএস। কর্মীদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যাবে। তখন বুমেরাং হতে বাধ্য। তবে স্থানীয় স্তরে যোগদান প্রক্রিয়া চলছেই।
তৃণমূলের কোমর ভেঙেছে, বিজেপিতে স্থগিত যোগদান
শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো শাসক দলের প্রথম সারির নেতা বিজেপিতে যোগদান করেছেন। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে দুই দফায় যোগদান তৃণমূলের কোমর ভেঙে দিয়েছে। এরপর আর কাউকে বিজেপিতে যোগদান করানো হবে না, এমনই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়।
শুভেন্দু-রাজীবের হাত ধরে বিজেপিতে ফের যোগদান
এখন প্রশ্ন, তবে কি বিজেপির টার্গেট সম্পূর্ণ হয়েছে? নাকি একুশের আগে আরও যোগদান হবে। হয়তো কেন্দ্রীয়ভাবে না হয়ে স্থানীয়ভাবে হবে। যেমন কৈলাশের সিদ্ধান্তের পরও মঙ্গলবার বারুইপরে যোগদান হল। ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল বিধায়ক দীপক হালদার যোগ দিলেন বিজেপিতে। তাঁর সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেন আরও ১৩৫ জন।
দরজা বন্ধ, তবু বিজেপিতে যোগদান চলছে অবাধে
তৃণমূল-সহ বিভিন্ন দল থেকে অবাধ যোগদান চলছে বিজেপিতে। দরজা কণ্ঠে দিলীপ ঘোষরা বলেছিলেন, তাঁদের দরজা বড় করে খোলা আছে। কিছুদিন আগে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ফের আভাস দেন, এবার তাঁরা দরজা ছোট করে ফেলবেন। সোমবার বঙ্গ বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয় দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিলেন, ভোটের মুখে বিজেপিতে যোগদানের দরজা বন্ধ। কিন্তু তারপরও যোগদান চলছেই অবাধে।
'ভোটের সময় চা বাগানে উপর নজর পড়েছে অনেকের', উত্তরবঙ্গ থেকে বিজেপিকে তোপ মমতার