প্রশান্ত কিশোরের লক্ষ্য আদিবাসী-তফশিলি ভোটে, বিজেপিতে মাত দিতে কত আসনে টার্গেট
বাংলার লড়াই এবার শেয়ানে শেয়ানে। সংখ্যালঘু ভোটে তৃণমূলের প্রভাব, তো আদিবাসী ও তফশিলি ভোটে প্রভবা বিজেপির। এ বলে আমায় দেখ, তো ও বলে আমায়।
বাংলার লড়াই এবার শেয়ানে শেয়ানে। সংখ্যালঘু ভোটে তৃণমূলের প্রভাব, তো আদিবাসী ও তফশিলি ভোটে প্রভাব বিজেপির। এ বলে আমায় দেখ, তো ও বলে আমায়। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল ঝাঁপাল তাঁদের আদিবাসী-তফশিলি ভোট ফেরাতে। প্রশান্ত কিশোরের কৌশল আদিবাসী-তফশিলি ভোট ফেরালেই তৃণমূলের ক্ষমতায় ফেরা আরও সহজ হয়ে যাবে।
আদিবাসী-তফশিলি ভোটের লক্ষ্যে প্রশান্ত কিশোর
প্রশান্ত কিশোর আদিবাসী-তফশিলি ভোটের লক্ষ্যে আসন বেছে এগোনোর পরিকল্পনা করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দলের রাজনৈতিক ভোট কৌশলীর ভোট-অঙ্ক মেনে নেমে পড়েছেন সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ। সামাজিক যোগাযোগ বাড়িয়ে মমতা আদিবাসী ভোট নিজের দিকে টানার কৌশল নিয়ে প্রচারে ঝড় তুলছেন।
৮৪টি আসন তফশিলি সংরক্ষিত আসনে কে এগিয়ে
বাংলায় মোট ৮৪টি আসন তফশিলি সংরক্ষিত। তার মধ্যে তফশিলি জাতির ৬৮টি এবং তফশিলি উপজাতির জন্য ১৬টি আসন বরাদ্দ। এই আসনগুলির মধ্যে বেশিরভাগ আসনে প্রভাব ছিল বিজেপির। ৬৮টি এসসি আসনের ৩৪টি জিতেছিল তৃণমূল, বিজেপি জিতেছিস ৩৩টি আসনে। আর এসটি-র ১৬টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ৩টি এবং বিজেপি ১৩টি আসন পায়।
৮৪টি মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ টার্গেট তৃণমূলের
অর্থাৎ মোট ৮৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের দখলে ৩৭টি আসন আর বিজেপির জখলে ৪৬টি। ২০২১-এর ভোটে আদিবাসী ভোট নিজেদের দিকে এনে অন্তত ৫৮টি আসনে জয়ের টার্গেট রেখেছে তৃণমূল। দুই-তৃতীয়াংশ আদিবাসী ও তফশিলি আসনে দখল কায়েম করাই লক্ষ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সে জন্যই আসন বেছে এগোচ্ছে তৃণমূল।
আদিবাসী ভোট ফেরাতে কমিটি, পদক্ষেপ মমতার
একুশের লক্ষ্যপূরণে কোমর বেঁধে নেমেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আদিবাসী ভোট ফেরাতে নতুন কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। সেই কমিটির মাথায় রাখা হয়েছে আঞ্চলিক আদিবাসী নেতাদের। আর মমতা নিজে আদিবাসীদের কাছে যাচ্ছেন। ভোটের মুখে গণবিবাহ, চা-বাগানের শ্রমিকদের জন্য চা-সুন্দরী প্রকল্প, রাজবংশী বিয়েবাড়িতে হঠাৎ ঢুকে পড়ে তিনি আদিবাসী সমাজে নিজের গ্রহণযোগ্যতা পরখ করে নিচ্ছেন।
প্রশান্ত কিশোরের ভোট-অঙ্ক ২০২১-এর নির্বাচনে
প্রশান্ত কিশোর সম্প্রতি যে ভোট-অঙ্ক সামনে এনেছেন, তার ভিত্তিতে বিজেপি তিন অঙ্কে পৌঁছবে না বলে দাবি করা হয়েছে। অর্থাৎ দুই অঙ্কে থমকে যাবে বিজেপি। তাঁর এই দাবির সমর্থনে যুক্তিও দিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। তিনি বলেন সংখ্যালঘু ৩০ শতাংশ ভোটের অধিকাংশ রাজ্যের শাসকদলের দিকে। মতুয়া ভোট এখন পর্যন্ত ৫০-৫০ অবস্থায় রয়েছে। আদিবাসী ভোটে কিঞ্চিৎ প্রভাব বিজেপির। তাই মতুয়া ও আদিবাসী-তফশিলি ভোট ফেরাতে পারলেই বাজিমাত করা সহজ হয়ে যাবে তৃণমূলের।
আদিবাসী ভোট টানতে মমতার জনসংযোগ
২০১৯-এ তৃণমূলের আদিবাসী ও তফশিলি ভোট অনেকটাই বিজেপির দিকে সরে গিয়েছিল। তা ফিরিয়ে আনতে পারলে আর জয়ের জন্য অন্য কোনও দিকে তাকাতে হবে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাই আদিবাসী ভোটের দিকেই নজর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আদিবাসী ভোট টানতে তাঁর বিখ্যাত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেই হাতিয়ার করেছেন।
আদিবাসীদের সঙ্গে মিশে প্রত্যয়ী মমতা
এদিন গণবিবাহের অনুষ্ঠানে আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে পা মেলান মমতা। আদিবাসীদের মন কাড়ার চেষ্টা করেন। গনবিবাহের অনুষ্ঠানে হাজির থেকে নবদম্পতিদের আশীর্বাদ করেন, তাঁদের হাতে উপহার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে নিজের মতো করে মিশে যান আদিবাসী মানুষদের সঙ্গে। এদিন রাজবংশী পরিবারেও একটি বিবাহ অনুষ্ঠানে যান তিনি। আবার চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য তিনি চা-সুন্দরী প্রকল্প চালু করেন। তিনি প্রত্যয়ী যে আদিবাসী-তফশিলি সম্প্রদায় এবার নিরাশ করবে না তৃণমূলকে।