ধোপে টিকল না ‘অসুস্থ’ পার্থর গৃহবন্দি হওয়ার যুক্তি! আরও ১৪ দিন জেল হেফাজত অর্পিতারও
শিক্ষক দুর্নীতি-কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর প্রথম ১২ দিন ইডি হেফাজত, তারপর তিন দফায় ১৪ দিন করে জেল হেফাজত হল।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এক মাসভর জেলে বন্দিদশায় কেটে গেল হেভিওয়েট প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। শিক্ষক দুর্নীতি-কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর প্রথম ১২ দিন ইডি হেফাজত, তারপর দু-দফায় ১৪ দিন করে জেল হেফাজত হয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের। তৃতীয়বারেও জেলযাত্রা আটকানো গেল না তাঁদের।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী গৃহবন্দির যুক্তিরও সাজিয়েছিলেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অসুস্থতা ও বয়সজনিত সমস্যা দেখিয়েও শেষরক্ষা হল না। কোনও যুক্তিই ধোপে টিকল না। ব্যাঙ্কশাল আদালত পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল। ফের ১৪ সেপ্টেম্বর তাঁদের তোলা হবে আদালতে।
এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে ভার্চুয়ালি কোর্টে পেশ করা হয়েছিল। আবার ১৪ সেপ্টেম্বরও তাঁদের ভার্চুয়ালি পেশ করা হবে। এর মধ্যে ইডি তাঁদের জেলে গিয়ে জেরা করতে পারবে।
এদিন আদালতে ইডির আইনজীবী দাবি করেন, এখন পর্যন্ত পার্থ ও অর্পিতার শতাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও মিলেছে একাধিক ভুয়ো সংস্থার হদিশ। ওই সংস্থাগুলির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করা হত বলে দাবি ইডির। বিপুল সম্পত্তির উৎস সম্পর্কে জানতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে ফের জেরা করা দরকার বলে ইডির আইনজীবীরা জানান। এই কারণেই জেল হেফাজতের দাবি করা হয়।
উল্টোদিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবীরা জামিনেও পক্ষে সওয়াল করেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অসুস্থতার প্রসঙ্গে উত্থাপন করে এবং তাঁর বয়সের কারণ দেখিয়ে জামিন চাওয়া হয়। অন্তত তাঁকে গৃহবন্দি রাখার আবেদন মঞ্জুর করা হোক বলে জানান আইনজীবী। কিন্তু কোনও যুক্তিও ধোপে টেকেনি।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের পরদিন তার ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় টাকার পাহাড়, গয়নার ভাণ্ডার। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ইতিমধ্যেই আরও ফ্ল্যাট ও পার্লারে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি উদ্ধার করে। উদ্ধার করে আরও টাকা, গয়নাগাটি। সব মিলিয়ে ৫০ কোটির বেশি নগদ টাকা উদ্ধার হয়। বহু বেনামি সম্পত্তির হদিশ পাওয়া যায়।
গত ২৩ জুলাই গভীর রাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় দীর্ঘ জেরার পর গ্রেফতার করা হয়। আর অর্পিতাকে গ্রেফতার করা হয় পরদিন অর্থাৎ ২৪ জুলাই। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে প্রাথমিকভাবে দুদিনের হেফাজতে নিলেও তিনি এসএসকেএমে ভর্তি হয়ে যাওয়ায় জেরা পর্ব চালাতে পারেনি ইডি। পরে দুজনকেই ইডির স্পেশ্যাল আদালতে পেশ করার পর তাঁদের ১০ দিনের হেফাজতে নেওয়া হয়। তার মেয়াদ সে, হতে পর পর তিনবার জেল হেফাজতে কাটাতে হচ্ছে পার্থ ও অর্পিতাকে।