মারা গেলেন পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণ কাণ্ডের পীড়িতা সুজেট জর্ডন, রেখে গেলেন শুধু লড়াইটা
কলকাতা, ১৪ মার্চ : পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণ কাণ্ডের পীড়িতা সুজেট জর্ডন যিনি সুবিচারের দাবিতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নিজের লড়াই চালিয়েছিলেন, সেই সুজেট মারা গিয়েছেন এনসেফেলাইটিসে আক্রান্ত হয়ে। কলকাতার একটি হাসপাতালে শুক্রবার ৪০ বছর বয়সী সুজেটের মৃত্যু হয়েছে।
গত ৩ দিন ধরে কলকাতার ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন সুজেট।
সুজেটের মতো সাহসী মহিলা আজকের ভারতীয় সমাজের মহিলাদের জন্য উদাহরণ। কলকাতার প্রাণকেন্দ্র পার্ক স্ট্রিটের ম গাড়িতে তো রাস্তায় চলন্ত গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন সুজেট। যদিও রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য ছিল, এটা সাজানো ঘটনা।
তৃণমূলের আর এক মহিলা সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার আরও এককাঠি এগিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন, এটা ধর্ষণের ঘটনা নয়, আসলে ওই মহিলার খদ্দেরের সঙ্গে গণ্ডগোল হয়েছিল, তারই ফল। কথা উঠেছিল কেন রাতে নাইট ক্লাবে গিয়েছিলেন ওই মহিলা? কেনই বা অচেনা কারোর গাড়িতে লিফ্ট নিয়েছিলেন।
রাজ্যসরকার এবং সমাজের এই মনোভাবের বিরোধীতায় রুখে দাঁড়িয়েছিলেন সুজেট। কলকাতায় একের পর এক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদ মিছিলে নিজের পরিচয় প্রকাশ করে সাহসীকতার পরিচয় দিয়েছিলেন দুই সন্তানের মা সুজেট।
দৃপ্ত কন্ঠে জানিয়েছিলেন, "কেন আমাকে আমার পরিচয় গোপন রাখতে হবে? এটা আমার ভুলই নয়। যে জিনিসটাকে আমি উৎসাহই দিইনি তার জন্য আমাকে লজ্জা পেতে হবে কেন? আমার উপর নির্মম ব্যবহার করা হয়েছিল, আমার উপর অত্যাচার হয়েছিল, আমাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। আমি তার জন্য লড়াই করছি, আগামী দিনেও এই লড়াই চালাব।"
চিকিৎসকদের কথায়, এনসেফেলাইটে সুজেটের শরীরের একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এর ফলেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।