মুকুল-কৈলাশ সমীকরণে চাপ বাড়ছে দিলীপের ওপর! একুশের আগে অশনি সঙ্কেত বিজেপিতে
মুকুল-কৈলাশ সমীকরণে চাপ বাড়ছে দিলীপের! একুশের আগে অশনি সঙ্কেত বিজেপিতে
করোনাকালে মুকুল-দিলীপের দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছিল বঙ্গ বিজেপিতে। দিল্লি থেকে অমিত শাহের দূত হয়ে এসে কৈলাশ বিজয়বর্গীয় যুযুধান দুই নেতাকে এক টেবিলে এনেছিলেন। কৈলাশের স্পর্শে বঙ্গ বিজেপিতে ফের ঐক্যের বাতাবরণে এক ফুরফুরে মেজাজ ফিরেছিল। আবার সেই কৈলাশের যুদ্ধজারিতেই মুকুল-দিলীপ দু-ভাগ।
মুকুলের হয়ে লড়াই চালাচ্ছেন কৈলাশ!
মুকুল রায়ের হয়ে এখন বঙ্গ বিজেপিতে লড়াই চালাচ্ছেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। তিনি মুকুল ঘনিষ্ঠ নেতাকে যুব মোর্চায় ঢোকানোর তদ্বির করছেন দিলীপ-ঘনিষ্ঠকে সরিয়ে। নেপথ্যে মুকুলের খেলা রয়েছে বলে অভিমত বিজেপির ঘরে-বাইরে সকলের। আর ঝোপ বুঝে কোপ মেরে দায় এড়াতে চাইছেন আর এক মুকুল ঘনিষ্ঠ সৌমিত্র খাঁও।
মুকুলের সঙ্গে সম্পর্ক বরাবরই মধুর কৈলাশের
বঙ্গ বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে মুকুল রায়ের সম্পর্ক প্রথম থেকেই বেশ মধুর। বরং দিলীপ ঘোষের সঙ্গে ততটা ঘনিষ্ঠ নয় কৈলাশের, যতটা মুকুল রায়ের সঙ্গে। আর বিগত দুই নির্বাচনে মুকুল-কৈলাশ জুটি ফের নামও করেছিলেন বিজেপিকে সাফ্যলের সরণিতে নিয়ে আসতে। দিলীপের থেকে কৈলাশকে বরাবরই দেখা গিয়েছে মুকুলকে বেশি গুরুত্ব দিতে।
মুকুল-দিলীপের কোন্দল থামতে অমিতের দূত
এবার বিজেপির দিল্লি বৈঠকের পর মুকুল রায়ের সঙ্গে দিলীপ ঘোষের কোন্দল যখন পৌঁছে গিয়েছিল চরমে, মুকুলের তৃণমূল যোগ নিয়ে প্রতিদিনই সংবাদমাধ্যমে নানা গল্প বের হচ্ছিল, তখন বঙ্গ রাজনীতিতে ফের মুকুল রায়কে প্রাসঙ্গিক করে তুলেছিলেন কৈলাশ। দিলীপের বাড়িতে মুকুলকে এনে দুই নেতার মিলমিশ করে দিয়েছিলেন।
মুকুল-দিলীপের হাত ধরাধরির বার্তার পর...
ওইদিন আলোচনা শেষে মুকুল-দিলীপ একসঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে করে বলেছিলেন, সামনেই একুশের বিধানসভা ভোট। সেই ভোটের লক্ষ্যে আমাদের উচিত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা। তাই মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষ উভয়েই একসঙ্গে হাত ধরাধরি করে লড়বে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কিন্তু সেই ঘোষণার এক মাস কাটতে না কাটতেই ফের একবার অন্তর্কলহ সামনে চলে এল।
মুকুল রায় বনাম দিলীপ ঘোষ ফের বিজেপিতে
এখন আবার মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ দুই নেতাকে নিয়ে লড়াই তুঙ্গে ওঠে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইছে মুকুল ঘনিষ্ঠ শঙ্কুদেব পণ্ডাকে যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক পদে বসাতে। দিল্লির এক নেতা সরাসরিই জানিয়েছেন সেই কথা। আর এক নেতা জানিয়েছেন, শঙ্কু সাধারণ সম্পাদক হোক বা না হোক, দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ প্রকাশ দাসকে ওই পদ থেকে সরাতে হবে।
মুকুল বনাম দিলীপ লড়াইটা এবার ঘনিষ্ঠদের
এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর বিজেপিতে মুকুল বনাম দিলীপ লড়াইটা রয়েই গিয়েছে। এমনকী তা বাংলা থেকে দিল্লির দরবার পর্যন্তও পৌছে গিয়েছে। এই অবস্থায় ফের একবার ঝড় উঠতে চলেছে বিজেপিতে। দিলীপ ঘোষ চাইছে, যে তালিকা হয়েছে তা-ই চূড়ান্ত করতে। অন্যদিকে সৌমিত্র খাঁ এই অবসরে শঙ্কুকে সাধারণ সম্পাদক করে দায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে চাইছেন।
কৈলাশ বিজয়বর্গীয় লড়ছেন মুকুলের হয়ে
বঙ্গ বিজেপির পর্যবেক্ষক তথা কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় চেয়েছিলেন মুকুল ঘনিষ্ঠ শঙ্কুদেবকে যুব মোর্চার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদে বসাতে। দিলীপ ঘোষ তাতে তীব্র আপত্তি জানান। তিনি যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁকে বলেন প্রকাশ দাসকে ওই পদে বসাতে। শেষে প্রকাশের নাম রেখেই সৌমিত্র তালিকা প্রকাশ করে দেন।
সৌমিত্রকে দিল্লিতে জরুরি তলবে কেন্দ্রীয় বার্তা
তারপরই সৌমিত্রকে তলব করা হয় দিল্লি থেকে। তিনি দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ সাফ বলে দেন, প্রকাশ দাস যাঁর লোকই হোক না কেন, তাঁকে পদ থেকে সরাতে হবে। আর কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র লড়াই জারি, যে কোনও প্রকারে শঙ্কুকে ওই পদে বসাতে।
মুকুল ঘনিষ্ঠকে ফেরাতে আরও এক মুকুল ঘনিষ্ঠকে নির্দেশ
কৈলাশের এই লড়াইয়ের নেপথ্যে মুকুল রায়ের হাত আছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। উল্লেখ্য, সৌমিত্র খাঁও মুকুল ঘনিষ্ঠ। তাই তিনি দিলীপের রোষানল থেকে বাঁচতে প্রথমে প্রকাশ দাসের নাম ঘোষণা করলেও এখন শঙ্কুকে ওই পদে ঢুকিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ঘাড়ে দায় চাপাতে চাইছেন যুব মোর্চার সভাপতি।
বঙ্গ বিজেপিতে অশনি সংকেত একুশের আগে
একুশের নির্বাচনের আগে দলীয় এই কোন্দল অশনি সংকেত বিজেপির কাছে। বিজেপি এখনও ক্ষমতায় আসেনি। সবেমাত্র একটা লোকসভা নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো ফল করেছে। এরই মধ্যে বঙ্গ বিজেপিতে মুকুল বনাম দিলীপ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় কৈলাশ আবার মুকুলের পক্ষে ব্যাট ধরেছেন। স্বভাবতই যুদ্ধের আগে চাপে সেনাপতি।
ইভিএম বা ব্যালট, ভোট যাতেই হোক গো-হারা হারবে তৃণমূল, মেয়ো রোডের মঞ্চে সুর চড়াল বিজেপি