একুশের জয় কি বিভাজনের পথেই! মুকুল থেকে মান্নান-একটাই লক্ষ্য তৃণমূলে ভাঙন
একুশের জয় কি বিভাজনের পথেই! মুকুল থেকে মান্নান-একটাই লক্ষ্য তৃণমূলে ভাঙন
তবে কি তৃণমূল না ভাঙলে রাজ্যে পরিবর্তনের কোনও সম্ভাবনা নেই! অন্তত বিরোধীদের অবস্থানে সেটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ। ২০১৯ থেকে ২০২১-এর প্রেক্ষাপট কিন্তু ওই একটা পথেই আবর্ত হচ্ছে। একুশের আগেই তৃণমূল ফিনিশ। মুকুল রায়ই বলুন আর দিলীপ ঘোষ, কিংবা আবদুল মান্নান- সবার মুখেই একই বাণী।
কম তৃণমূলীকে ভাঙিয়ে আনেননি মুকুল-দিলীপরা
২০১৯-এর নির্বাচন বিজেপি লড়েছে তৃণমূলকে ভেঙে। তৃণমূলের তাবড় নেতাদের ভাঙিয়ে এনে লোকসভা নির্বাচনে দাঁড়া করিয়েছিলেন মুকুল রায়। তাঁরাই সাংসদ নির্বাচিত হয়ে দিল্লি গিয়েছেন। মুকুলের পাশাপাশি এই কাজে সমান দক্ষতা দেখিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষও। তিনিও কম তৃণমূলীকে ভাঙিয়ে আনেননি বিজেপিতে।
তৃণমূলের ১০০ বিধায়ক দল ছাড়বেন!
এবার মুকুল-দিলীপদের পাশাপাশি এই অবস্থান নিয়েছেন কংগ্রেসের আবদুল মান্নান। তৃণমূল এককালে কংগ্রেসকে ভেঙে শক্তি বাড়িয়েছিল। এবার মান্নানও একই পথে হেঁটে কংগ্রেসের শক্তি বাড়াতে উৎসাহী। তাই তাঁর মুখে এখন বাজছে তৃণমূলের ভাঙনের ধ্বনি। তিনি বলছেন, আগামী জানুয়ারিতেই তৃণমূলের ১০০ বিধায়ক দল ছাড়বেন।
যদি কোনও মঞ্চ গড়া যায় লাভ কংগ্রেসের
এর আগে সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখে আবদুল মান্নান জানিয়েছিলেন, তৃণমূলে ভাঙুন অবশ্যম্ভাবী। অনেক তৃণমূল নেতাই উপযুক্ত বিরোধী অভাবে দল ছাড়তে পারছে না। তাঁদের অধিকাংশই বিজেপিতে যেতে নারাজ। তাই যদি কোনও মঞ্চ গড়া যায়, সেখানে তৃণমূল ভেঙে বিধায়ক-মন্ত্রীরা আসতে পারেন।
তৃণমূল ভেঙে কংগ্রেসের শক্তি বাড়ানোর ভাবনা
তাহলে ২০২১-এর আগে একটা মহাজোট গড়ে ওঠে। বিক্ষুব্ধ তৃণমূলীদের নিয়ে বাম-কংগ্রেস জোট শক্তিশালী হয়ে তৃণমূল ও বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। এবং তৃণমূলের এই বিরাট ভাঙনে কংগ্রেস ভবিষ্যতে আগের মতো শক্তিশালী হয়ে উঠতেও পারে। তার জন্য বিশেষ প্রস্তুতির প্রয়োজন।
ফোন আসছে, মমতাও স্বীকার করছেন
মান্নানের ভাঙনের বার্তার সঙ্গে মুকুল রায়-দিলীপ ঘোষদের কথার হুবহু মিল। ২০১৯-এর আগে থেকেই তাঁরা বলে আসছেন তৃণমূলের শতাধিক বিধায়ক তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। একুশে জুলা্ইয়ের ভার্চুয়াল সমাবশেই তিনি বলেন, বিজেপি রাতের বেলায় ফোন করছে তাঁর দলের নেতাদের।
ভাঙন ছাড়া বিকল্প রাস্তার বড্ড অভাব
অতএব ২০২১-এর প্রাক্কালে এ কথা বলাই যায়, তৃণমূলের বিপুল সংখ্যক বিধায়কের দিকেই এখন শ্যেন দৃষ্টি পড়েছে মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষ বা আবদুল মান্নানদের। তৃণমূলকে ভাঙা ছাড়া তাঁদের বিকল্প রাস্তার বড্ড অভাব। তৃণমূলে তৃণমূলে লড়িয়ে দিয়েই তাঁরা ক্ষমতা কায়েম করতে চায়। সেই ফন্দিই আঁটছে সবাই।
বর্তমানে কার কত ক্ষমতা
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের বিধানসবা বাম-কংগ্রেসের চ্যালেঞ্জ উপেক্ষা করে বিপুল সংখ্যক আসন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ২১১টি আসন, বিজেপি পায় ৩টি, কংগ্রেস ৪৪টি এবং সিপিএম ৩৩টি। তারপর দলবদল ও উপনির্বাচনের ফলে কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২৫ এবং বামেদের ২৬। তৃণমূল ও বিজেপি বেড়ে হয় যথাক্রমে ২২৭ ও ১৩।
বিজেপি ও কংগ্রেস উভয়েরই এক টার্গেট
এই অবস্থায় ফের ভাঙনের খেলা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের অসন্তোষ কাজে লাগিয়ে বিপুল সংখ্যক বিধায়ককে ভাঙিয়ে শক্তিশালী হতে চাইছে বিরোধীরা। মিশন ২০২১-এ বিজেপি ও কংগ্রেস উভয়েই একই টার্গেট নিয়েছে। তাই বারে বারে মিলে যাচ্ছে মুকুল-মান্নানদের কণ্ঠস্বর। তৃণমূলে ভাঙন বার্তা দিয়ে রাখছেন তাঁরা।
গুলবাজ দি গ্রেট! পরিযায়ীদের সাহায্য করা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা সুজনের