সিন্ডিকেট ইস্যুতে রাজ্যের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক রাজ্যপাল ধনখড়
রাজ্যের বিরুদ্ধে ফের মুখ খুললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়! একেবারে সিন্ডিকেট ইস্যুতেই বিস্ফোরক তিনি। রাজ্যপালের দাবি, "রাজ্যে নিজের ইচ্ছায় ইট এবং সিমেন্ট কেনা যায় না। সিন্ডিকেট ধরে চলতে হয়।" যা নিয়ে চরম অস্বস্তিতে শাসকদল তৃণমূল। যদিও তৃণমূলের মতে, উনি অনেক সময়েই অনেক কিছু বলেন। তাতে কিছু যায় আসে না। তবে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের মন্তব্যকে সঠিক বলেই মনে করছে বিজেপি। বিজেপি নেতৃত্বের মতে, তোলাবাজি থেকে সিন্ডিকেট রাজ শাসকদলের সঙ্গে একাধিক নেতা-কর্মী জড়িত। এমনকি খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিন্ডিকেট নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। কর্মীদের সিন্ডিকেট নিয়ে সতর্ক করেছেন। তাহলে রাজ্যপালের মন্তব্যে সমস্যা কোথায়? প্রশ্ন বিজেপি নেতৃত্বের।
ঠিক কী বললেন রাজ্যপাল ধনখড়
রাজ্যের একাধিক বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রাজ্যপাল ধনখড়। কখনও সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তো আবার কখনও প্রকাশ্যে নেতা-মন্ত্রীদের কাজ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। আর যার ফলে অনেক ক্ষেত্রেই সরাসরি তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের কু-নজরে পড়তে হয়েছে রাজ্যপালকে। এবার সরাসরি সিন্ডিকেট ইস্যুতে সরকারের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন রাজ্যপাল ধনখড়। ক্ষোভ উগরে এদিন ধনকড় বলেন, "রাজ্যে দু'টি ইট এবং এক বস্তা সিমেন্ট কিনতে গেলেও আপনি নিজের ইচ্ছেয় কিনতে পারবেন না। আপনাকে সিন্ডিকেট ধরে চলতে হবে। এটা কি চলছে রাজ্যে?" শুধু তাই নয়, সিন্ডিকেট ইস্যুতে রাজ্যপালের আরও অভিযোগ, "সিন্ডিকেটের দেওয়া এক টুকরো কাগজ দেখিয়ে গোটা রাজ্যে কাজ চলছে। এও কি সম্ভব?"
রাজ্য সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ
শুধু সিন্ডিকেট ইস্যুতে নয়, রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রাজ্যপাল ধনকড়। ধনখড়ের বক্তব্য, "সরকারি কর্মীদের নিরপক্ষে থাকতে হবে। এটাই আমার নির্দেশ। রাজনীতি করা যাবে না।" সরকারি কর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, "আপনারা যদি রাজনীতি করেন, জেনে রাখুন, আপনি যতই নিজেকে চালাক ভাবুন, আপনার কাজের আগেই সেই কথা ঠিক জায়গায় পৌছে গিয়েছে।" তবে, এহেন মন্তব্য নতুন নয়, রাজ্য সরকারি কর্মী এবং প্রশাসনের ভুমিকা নিয়েও একাধিকবার প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। রাজ্য প্রসাসনের একাংশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছেন বহুবার। সেক্ষেত্রে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।
রাজ্য-রাজ্যপালের দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়
গত কয়েকদিন আগেই অন্তবর্তী বাজেটে রাজ্যপাল ধনখড়ের ভাষণ না রাখায় প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। সংবিধান বিরোধী বলেও মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু তাতে কর্ণপাত না করেই বাজেট পেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। শুধু তাই নয়, সরকারের একাধিক কর্মকান্ড নিয়ে লাগাতার প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। ভোটে হিংসা নিয়েও রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। রাজ্য প্রশাসনের একাংশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তাঁর। এবার সিন্ডিকেট নিয়ে সরাসরি রাজ্য প্রশাসনকে আক্রমণ রাজ্যপালের। উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই রাজ্যপালের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে নবান্নের। এই অবস্থায় সিন্ডিকেট রাজ নিয়ে রাজ্যপালের মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আজ শনিবার সেন্ট জেভিয়ার্সের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেন রাজ্যপাল ধনখড়। সেখানে দাঁড়িয়েই রাজ্য সরকারকে তোপ ধনখড়ের।