তৃণমূলের পথে বিজেপির ২১ হেভিওয়েট নেতা ! ‘মমতা-ফ্যাক্টর’ কি তবে কাজ করতে শুরু করে দিল
বিজেপির ২১ জন ইতিমধ্যেই লাইনে! ‘মমতা-ফ্যাক্টর’ কি তবে কাজ শুরু করে দিল
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 'বাড়ি' ফেরার ডাক দিয়েছিলেন একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে। তার সাতদিনের মধ্যেই দক্ষিণ দিনাজপুরের 'হেভিওয়েট' নেতা সদলবলে বিজেপি ছেড়ে ফিরে এসেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। এখনও ২১ জন নেতা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসার জন্য পা বাড়িয়ে রয়েছেন খবর। যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সাফ জানিয়ে দেন, তৃণমূল বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে মিথ্যা রটনায়।
একুশের আগে ফাঁক পূরণের পরিকল্পনায় মমতা
২০১৯ লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূল কংগ্রেসে ভাঙন ধরিয়ে দিয়েছিলেন মুকুল রায়-দিলীপ ঘোষরা। তার পুনরাবৃত্তি হতে দিতে চান না তৃণমূল সুপ্রিমো। বরং যে ফাঁক তৈরি হয়েছিল নেতারা বিজেপিতে চলে যাওয়ায়, তা পূরণের পরিকল্পনা নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই পথে হেঁটে তৃণমূল এখন পাল্টা দেওয়া শুরু করেছে বিজেপিকে।
আরও ২১ জন নেতাকে নিয়ে জল্পনা শুরু
লোকসভা নির্বাচনের মতো ২০২১-এ শক্তি খোয়াতে চায় না তৃণমূল। বরং যাঁরা ভুল বুঝে বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন তাঁদের আবার ফিরিয়ে আনতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই নিজেদের সংগঠন ধরে রেখে বিজেপি ভেঙে শক্তি বাড়ানোয় মন দিয়েছে তৃণমূল। বিপ্লব মিত্র এবং প্রশান্ত মিত্র ফেরার পর এখন আরও ২১ জন নেতাকে নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টই বিজেপিতে থরহরিকম্প
বিজেপির ২১ জন নেতা তৃণমূলে আসার জন্য পা বাড়িয়ে রয়েছেন বলে একটি পোস্ট করা হয়েছে তৃণমূল নেতার ফেসবুক পেজে। সেই এক পোস্টই বিজেপিতে থরহরিকম্প তুলে দিয়েছে। যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু ভট্টাচার্যের পোস্টের পরই তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক করে দিলীপ ঘোষ বুঝিয়ে দিয়েছেন ওসব তৃণমূলে চাল।
দেবাংশুর ‘উহ্য’ পোস্টে রাজ্য রাজনীতিতে ঝড়
দেবাংশু সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন- বিজেপির চার সাংসদ, এক বিধায়ক ও ১৬ কাউন্সিলর...। তিনি তাঁর পোস্টটি এমনভাবেই করেছেন, যা মানুকে ভাবাবে। দেবাংশু বলেননি যে, বিজেপির চার সাংসদ, এক বিধায়ক ও ১৬ কাউন্সিলর তৃণমূল ফিরছেন বা তৃণমূলে পা বাড়িয়ে রয়েছে। তিনি উহ্য রেখেছেন বিষয়টি। রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় তুলে দিয়েছে এই পোস্ট।
দেবাংশুর পোস্টে দিলীপের সাফাই
এরপর দিলীপ ঘোষ সংবাদিক বৈঠক করে জানান, বিজেপি ছেড়ে কোনও নেতা তৃণমূলে যাচ্ছেন না। এসব তৃণমূলের রটনা। আর কিছু পেটোয়া সংবাদমাধ্যম ফলাও করে এই খবর করছে। মানুষকে বিভ্রান্তিরে মধ্যে ফেলা হচ্ছে। পাগল না হলে কেউ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাবেন না।
প্রশান্ত কিশোর দায়িত্ব নেওয়ার পর...
কিন্তু রাজনৈতিক মহল মনে করছে, প্রশান্ত কিশোর দায়িত্ব নেওয়ার পর মুকুলের হাত ধরে বিজেপিতে যাওয়া নেতারা ফের কামব্যাক করতে শুরু করেছিল। তৃণমূলের হাতছাড়া হওয়া অনেক পুরসভা ও পঞ্চায়েত ফিরে আসে তৃণমূলের হাতে। এবং তারপর ধারাবাহিকভাবে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরতে থাকেন কর্মীরাও। বিপরীতমুখী ভাঙনও হয় বেশকিছু জায়গায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফিরে আসার ডাক দিতেই
এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ফিরে আসার ডাক দিয়েছেন ভুল করে বিজেপিতে যাওয়া নেতাদের। রাগ না করে ঘরে ফেরার বার্তায় অনেকেন মন গলতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। ইতিমধ্যেই জেলার খোলনোলচেও বদলেছে। তাতেই বিপ্লব-প্রশান্ত মিত্ররা ফিরে এসেছেন।
যে ২১ জন নেতাকে নিয়ে জল্পনা তারা কারা
এবার সেই পথ ধরে আরও অনেক নেতার আগমন ঘটতে পারে তৃণমূলে। দেবাংশু যে ২১ জন নেতাকে নিয়ে জল্পনা তৈরি করেছেন, তার মধ্যে রয়েছেন চারজন সংসদ, একজন বিধায়ক ও ১৬ জন কাউন্সিলর। এখন দেখার সোশ্যাল মিডিয়ায় তৈরি এই জল্পনা জল্পনাই রয়ে যায়, নাকি বাস্তব হয়। দেবাংশু না দিলীপ- কে সত্য সেটাও পরীক্ষা।
২০২১-এর আগে বিজেপিতে জল্পনা শুরু মুকুলকে নিয়ে
২০২১-এর আগে ক'দিন ধরেই মুকুল রায় ও শুভ্রাংশু রায়কে নিয়ে জল্পনা চলছিল। তারপর জল্পনা শুরু হয় অর্জুন সিংকে নিয়ে। এরই মধ্যে বিপ্লব মিত্র ও প্রশান্ত মিত্র তৃণমূলে ফিরে আসেন। তারপরই দেবাংশুর পোস্ট বিজেপি শিবিরকে চিন্তায় ফেলে দেয়। যার জেরে দিলীপ ঘোষ সাফাই দেন, তৃণমূল বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে।
বিজেপির ২০২১-এর রূপরেখা তৈরির বৈঠকের পরই
দিল্লিতে সম্প্রতি বিজেপির ২০২১-এর রূপরেখা তৈরি করতে বৈঠকে বসে। সেই বৈঠক নিয়ে এমন কিছু খবর ফাঁস হয়, তা বিজেপির বিপক্ষে যায়। মুকুল রায়ের বৈঠক ছেড়ে কলকাতায় ফেরা, তারপর অনেক নেতা-নেত্রী, সাংসদ-বিধায়কের উষ্মা প্রকাশে বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্ব চাপে পড়ে যায়। যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সাফ জানিয়ে দেন ওসবই মিডিয়ার কল্পিত গল্প।
বিজেপি নিজেদের মধ্যেই খেলছে, যারা জিতবে তারাই রানার্স! জল্পনা উসকালেন কুণাল