২২ বছর পর ভাত খেলেন মমতা! হঠাৎ খাদ্যতালিকায় কেন বদল জানালেন নিজে মুখেই
২২ বছর পর ভাত খাচ্ছেন মমতা! করোনার জেরে খাদ্যাভ্যাসে কী কী বদল, একনজরে
২২ বছর তিনি ভাত খাননি, রুটিও বাদ দিয়েছিলেন খাবারের তালিকা থেকে। খেতেন মুড়ি-চিঁড়ের মতো শুকনো খাবার। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের জেরে ২২ বছর পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় ফিরিয়ে আনলেন ভাত। তিনি নিজেই জানালেন তাঁর প্রতিদিনকার খাদ্যতালিকায় সেই পরিবর্তনের কথা।
বদলে ফেললেন খাদ্যাভ্যাস
করোনার থাবা পড়েছে ভারতের বুকেও। বাংলাও বাদ নেই। বাংলায় এই মারণ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে রুখতে লড়াই করছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাস্তায় বেরিয়ে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে তিনি করোনা প্রতিরোধে সামিল। সতর্ক তো থাকছেন, সেই সঙ্গে সাবধানতাও অবলম্বন করছেন। আর ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়ানোর জন্য বদলে ফেলেছেন খাদ্যাভ্যাস।
খাদ্যের তালিকায় ভাত
এখন তিনি প্রতিদিন খাদ্যের তালিকায় রাখছেন ভাত। চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে নিয়ম করে তিনি ভাত খাচ্ছেন। তিনি ভাত খাওয়া শুরু করেছেন ২২ বছর কি তারও বেশিদিন পর। নিজেই জানিয়েছেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ডাক্তারের পরামর্শ মেনে ভাত খাচ্ছি, কিন্তু বেশি নয়।
মমতার খাদ্যতালিকায় কী কী
তাঁর কথায়, প্রতিদিন এক চামচ করে ভাত, একটু সিদ্ধডাল আর আলুসেদ্ধ খাচ্ছি। তবে মুড়ি ছাড়িনি, মুড়িও খাচ্ছি। অন্য যা খাবার খেতেন মুখ্যমন্ত্রী, সেগুলি ছাড়েননি। শুরু পরমাণ কমিয়ে ভা,-ডাল-আলুসেদ্ধ ঢুকিয়েছেন প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়। একান্তই তা তিনি করছেন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য।
করোনাকে হারাতে খাদ্যাভাসে বদল
করোনাকে হারাতে হবে। তার জন্যই যাবতীয় ব্যবস্থা। তিনি সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকার বার্তা দিতে গিয়ে বলেন, আগামী দু-সপ্তাহ খুব সাবধানে থাকতে হবে। কেউ বাড়ি থেকে বেরোবেন না। আমি একাই থাকি বাড়িতে। কাউকে সামনে আসতেও দিচ্ছি না। আপনারাও বাড়িতে থাকুন। এখন লাটসাহেবি করার সময় নয়, যা পাবেন, তাই খান। প্রয়োজনে সেদ্ধ ভাত খান।
সেদ্ধ ভাত আর জল খান
আগের দিন উষ্ণ গরম জলে লেবুর সর মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিযেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন গরম জলে লেবুর রস দিয়ে খেলে গলাটা ক্লিয়ার হয়ে যাবে। এবার বললেন, পেট একদম খালি রাখা যাবে না। পেট ভরে সেদ্ধ ভাত খান। জল খান আর জানলা-দরজা খোলা রাখুন। এরপরই তিনি জানান, তিনি কী খাচ্ছেন এখন।
পুরনো খাদ্যাভ্যাসও অটুট
এর আগে মুখ্যমন্ত্রী এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ২২ বছর ধরে ভাত খান না তিনি। রুটিও খান না। সেভাবে কোনও ভারী খাবারই খান না। শুধু মুড়ি আর চকোলেটটা তিনি বেশি করে খান। দু'ঘণ্টা অন্তর চা ও বিস্কুট খাওয়াটাও তাঁর অভ্যাস। যেখানেই থাকুন না কেন এই রুটিনটা পালনের চেষ্টা করে যান তিনি।
মিষ্টি আবার খুব প্রিয়
তিনি জানিয়েছিলেন, মিষ্টি খেতেও তিনি খুব ভালবাসেন। রাতে মিষ্টি খাওয়াটা নাকি তাঁর পছন্দের। দিনভর যে ভাবে না খেয়ে থাকেন রাতে নাকি তা কড়ায় গণ্ডায় পুষিয়েও নেন তিনি। নিয়ম মেনে তিনি মঙ্গলচণ্ডী ও সন্তোষী মা-এর ব্রতও রাখেন। মঙ্গলচণ্ডীতে তাঁর খাদ্যাভাসে খুব একটা প্রভাব পড়ে না।
রবিবার কী খান মমতা
সন্তোষী মা-এর ব্রত রাখলে নিরামিষ খেতে হয়। সেই কারণে সেদিন ধোকার ডালনা নিয়ে মুড়ি খান তিনি। এছাড়া সাধারণত রবিবার বাড়িতে থাকলে ডিমের ঝোল দিয়ে মুড়ি খেতে ভালবাসেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কেন খাবারের তালিকা থেকে ভাত ও রুটিকে চিরতরে বিদায় দিয়েছিলেন তিনি? তার ব্যাখ্যাও দেন মুখ্যমন্ত্রী।
কেন ভাত ব্রাত্য ছিল এতদিন
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, রাজনৈতিক জীবনে বহুবার আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে বেশকিছু হামলা তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার জন্যও হয়েছিল বলে মনে করেন তিনি। ফলে শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাত বইয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন এখনও। শরীরের বহুস্থানে অস্ত্রোপচারও করতে হয়েছে। এই সবের জন্য তাঁর খাওয়া-দাওয়ার উপরেও কিছু নিষেধ রয়েছে। আর সেই নিষেধকে মানতে গিয়ে দু'দশকেরও বেশি সময় ধরে ভাত-রুটিকে ব্রাত্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।