শনিবাসরীয় দুপুরে আলবিদা বাবুলের: মন খারাপ ছিল ওর, বললেন সৌগত! দলেই থাকবেন আত্মবিশ্বাসী শমীক
শনিবাসরীয় দুপুর! হঠাত করেই ফেসবুকে বোমা ফাটালেন বাবুল সুপ্রিয়। আলবিদা...! ফেসবুকে লিখলেন তিনি। শুধু তাই নয়, তাঁর পোস্টজুড়ে রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার বার্তা। এমনকি সংসদ পদও নাকি ছাড়তে পারেন তিনি।
বাবুল তাঁর পোস্টে লিখেছেন,'' Social Work করতে গেলে রাজনীতিতে না থেকেও করা যায় ''। তবে তার আগে নিজেকে আরেকটি গুছিয়ে নিতে চান আসানসোলের এই বিজেপি সাংসদ।
তাঁর দাবি, ''বিজেপিতে কোনও একজন ব্যক্তি বিশেষের থাকা না থাকাটা যে কোন বড় ব্যাপার নয় তাও স্পষ্ট হয়েছে'। বাবুলের গোটা ফেসবুক জুড়েই ধরা পড়েছে আক্ষেপ। তবে একদিন অনেক কিছু বলবেন বলেও কার্যত পোস্টের শেষে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাবুল। তবে কি বলতে চান তিনি? তা নিয়ে রাজনৈতিকমহলে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
তবে বাবুলের রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণার পর থেকে শুরু হয়েছে একাধিক জল্পনা। এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন তৃণমূল থেকে শুরু করে সমস্ত রাজনৈতিক দলই।

রাজনীতি থেকে সরবেন না!
এখনই রাজনীতি থেকে সরবেন না! বাবুলের উদ্দেশ্যে বার্তা তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের। এক সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, লোকসভাতে বাবুলের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল। কথাও বলেছিলাম। দেখে মনে হয়েছিল ও একটু দুঃখিত। তবে বাবুল তো রাজনীতির জগতের লোক নয়। বিধানসভাতে বিজেপির পরাজয় কোথায় বোধহয় ওকে আহত করেছে। তবে এটা অর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তবে রাজনীতি থাকুন, অন্তত ২০২৪ সাল পর্যন্ত সাংসদ পদে থাকুন। এতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সুবিচার হবে না বলে দাবি তাঁর।

সাংসদ পদ কেন ছাড়ছেন না!
দলের সঙ্গে বারগেনিং করছেন বাবুল! বাড়ি ছেড়ে দেব এই ছেড়ে দেব না বলে আগে কেন সাংসদ পদ ছাড়ছেন না? বাবুলকে তোপ কুণাল ঘোষের। গায়ক থেকে তিনি নাটক করছেন বলেও তোপ তৃণমূল নেতার। দল যেই বলেছে মন্ত্রিত্ব করতে হবে না সঙ্গে সঙ্গে দুঃখ হয়েছে ওনার। শুধু তাই নয়, কুণাল ঘোষের দাবি, এই অবস্থায় দলের মধ্যে কোনঠাসা অবস্থাতে রয়েছেন বাবুল। আর এই সমস্ত পোস্ট করে দিল্লির আকর্ষণ পেতে চাইছেন বাবুল। কার্যত এই ভাষাতেই আক্রমণ কুণাল ঘোষের। তাঁর মতে, বাবুল যতক্ষণ না পর্যন্ত সাংসদ পদ ছাড়ছেন ততক্ষন পর্যন্ত সবটাই নাটক বলে মনে করেন এই তৃণমূল নেতা।

সবাইকে নিয়ে চলতে পারার মতো পার্টি নয়
বাবুল একজন শিল্পী মানুষ। হঠাত করেই সেই সময় রাজনীতিতে এসে হাজির হয়েছিলেন। রাজনীতিতে থাকা না থাকাটা ব্যক্তিগত ব্যপার। কিন্তু বিজেপি যে ভাবটা করছিল যে সবাইকে নিয়ে চলতে পারি তা আবারও ভুল প্রমাণিত হল। বিজেপি সবাইকে নিয়ে চলতে পারার মতো পার্টি নয়। সেটা আবার স্পষ্ট হল। বিজেপি একটা অন্য মনোভাবে চলা পার্টি। বাবুলের মতো লোক কীভাবে বিজেপিতে এলেন সেটাই প্রশ্নের। তবে গানটা ভালো ভাবে করুন বাবুল। সমাজসেবা করতে চাইলেও করতে পারেন।

বিজেপির সঙেই থাকবেন বাবুল!
বাবুল তাঁর মত বদলাবেন! এবং দলের সঙ্গেই থাকবেন। এমনটাই দাবি শমীক ভট্টাচার্যের। সংবাদমাধ্যমের তরফে বাবুলের কাছে বিজেপি নেতার আবেদন এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না তাতে ক্ষতি হয়। দল সবাইকে নিয়ে চলতে জানে এবং পারবেও। অন্যদিকে দিলীপ ঘোষের দাবি, বাবুলদা এখনও দলের সাংসদ রয়েছেন।

দিলীপ-বাবুল সংঘাত!
'বেশ কিছু সময়ে তো থাকলাম'.. কিছু মন রাখলাম কিছু ভাঙলাম.. কোথাও আপনাদের হয়তো আমার কাজে খুশি করলাম, কোথাও নিরাশ হতাশ করলাম | মূল্যায়ন আপনারাই নয় করবেন। বাবুল বলেছেন,
'আমার' মনে ওঠা সব প্রশ্নের জবাব দেওয়ার পরই বলছি.. আমার মতো করেই বলছি.. চললাম..! তাঁর এই ফেসবুক পোস্ট ঘিরে শুরু হিয়েছে জোর রাজনৈতিক চর্চা।
উল্লেখ্য, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর সংঘাত নতুন কিছু নয়। একে উপরের বিরুদ্ধে বারবার মুখ খুলেছেন। এমনকি মন্ত্রীত্ব যাওয়ার পরও বাবুলের বিরুদ্ধে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন দিলীপ। পাল্টা দিয়েছিলেন বাবুলও। যদিও বাবুল তাঁর ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি সুন্দর করে ছুয়ে গিয়েছেন। তবে কীসের জন্যে রাজনীতি ছাড়লেন বাবুল? সেই প্রশ্নটা থেকে গেল।