২১ দিনের অনশনের জেরে মৃত্যু হল এসএসসি প্রার্থীর
মালদহের ইংলিশবাজারের মহেশপুরের বাসিন্দা নিত্যগোপাল। স্ত্রী ও ১১ বছরের ছেলের সঙ্গে থাকতেন। স্নাতোকত্তর পর্বের পড়াশোনা শেষ করেন তিনি। কিন্তু চাকরি কিছুতেই মিলছিল না। ব্যবসায় চেষ্টা করলেও সেখানেও ভাগ্য সদয় হয়নি। তার পর একটি বেসরকারি সংস্থায় সেলসম্যানের চাকরি করছিলেন তিনি।
সেই সময়ই ২০১২ সালের ২৯ জুলাই এসএসসি পরীক্ষায় বসেন নিত্যগোপাল। ২০১৩ সালে পরীক্ষার ফল ঘোষণার পর তিনি জানতে পারেন তিনি উত্তীর্ণ হয়েছেন পরীক্ষায়। উত্তর ভাগ থেকে ৪৩৮ পর্যায়ক্রম ছিল তাঁর। কিন্তু সরকারি স্কুলে চাকরি পাওয়ায় তাঁর স্বপ্ন বাকিদের মতোই ক্ষীণ হতে থাকে। নিত্যগোপাল ক্রমে লক্ষ্য করেন তাঁর চেয়ে খারাপ পর্যায়ক্রমের ছেলেরা আগে চাকরি পেয়ে যাচ্ছেন। অথচ বাকিদের চাকরি হচ্ছে না।
ফেব্রুয়ারি ৬ বঞ্চিত সরকারী চাকুরিপ্রার্থীরা কলকাতায় অনশনে বসে। সেই অনশনে যোগ দেন নিত্যগোপালও। তাঁর স্ত্রী ও পরিবার বন্ধুরা এই প্রতিবাদ অনশনে যোগ দেওয়ার জন্য বারবার বারণ করেছিল তাঁকে। কিন্তু তিনি কারও কথা শোনেননি। ২১ ধরে টানা অনশন করেন নিত্যগোপাল। অনশনের ফলে তার শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে শুরু করে। কলকাতার চিকিৎসকরা সন্দেহ করেন নিত্যগোপালের ক্যান্সার হয়েছে। ৭ জুন তাঁকে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। বেশ কয়েকদিন চিকিৎসা শেষে ফেরার পথে হাওড়া স্টেশনেই মৃত্যু হয় তাঁর।
নিত্যগোপাল মন্ডলের দেব মালগহে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁর স্ত্রী ঝুমার কথায়, মাঝে মাঝেই মাথা যন্ত্রণায় ভুগতেন নিত্য। জ্বরও আসত। বারবার বারণ করেছিলাম অনশনে যোগ না দিতে। কিন্তু কথা শোনেনি, বলেই অঝোরে কেঁদে ফেললেন ঝুমা।
মালদহের সিপিএম নেতৃত্ব জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের ত্রুটিপূর্ণ নীতির কারণেই পরিবারটি ছাড়খাড় হয়ে গেল। আরও কতজনে অনশনে রয়েছেন। রাজ্য সরকারকে এই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানিয়েছে তাঁর। নইলে এই প্রতিবাদ আরও দূর গড়াবে বলেও সরব হয়েছে সিপিএম মালদহ নেতৃত্ব।