পুর-দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল অশোক ভট্টাচার্যকে! হেরেও প্রশাসকের পদ পেয়ে পুরস্কৃত গৌতম
একুশের বিধানসভা ভোটা ঐতিহাসিক জয় তৃণমূল কংগ্রেসের। নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে বাম-কংগ্রেস। বামেদের সব হেভিওয়েট প্রার্থী গো-হারা হেরেছেন। শিলিগুড়ির লালদুর্গে পর্যন্ত পদ্ম ফুটেছে। এই লজ্জাজনক হারের পর আগামীদিনে আর কোনও ভোটে না
একুশের বিধানসভা ভোটা ঐতিহাসিক জয় তৃণমূল কংগ্রেসের। নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে বাম-কংগ্রেস। বামেদের সব হেভিওয়েট প্রার্থী গো-হারা হেরেছেন। শিলিগুড়ির লালদুর্গে পর্যন্ত পদ্ম ফুটেছে। এই লজ্জাজনক হারের পর আগামীদিনে আর কোনও ভোটে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্ষীয়ান বাম নেতা অশোক ভট্টাচার্য।
আলিমুদ্দিন এবার ইয়ং ব্রেগেড নামিয়েও শূন্য হয়ে গিয়েছে। শুধু শিলিগুড়ি বা চণ্ডীতলা নয় জামুড়িয়ার মতো শক্ত ঘাঁটিও এবার সবুজ হয়ে গিয়েছে। দলের এই অবস্থার পরেই সরে দাঁড়ালেন অশোকবাবু।
প্রশাসক পদ থেকে অপসারিত অশোক
একদিকে যখন ভোটে না দাঁড়ানোর কথা বলছেন অশোক ভট্টাচার্য অন্যদিকে শিলিগুড়ি পুর নিগমের প্রশাসক পদ থেকে অপসারিত তিনি। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব পেলেন তৃণমূল নেতা ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব। তাঁকে মাথায় রেখে চার সদস্যের নতুন পুরবোর্ড গঠন করেছে রাজ্য সরকার।
হেরেও পুরস্কৃত গৌতম
করোনার কারণে রাজ্যে পুরসভার ভোট হয়নি নির্দিষ্ট সময়ে। তাই পুর আইন মেনে আপাতত প্রশাসক বোর্ডের হাতে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং রাজ্য সরকারের সেই বোর্ড তৈরির এক্তিয়ার রয়েছে। বিধানসভা ভোটে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্র থেকে গৌতম দেবের পরাজয়ের পরই তাঁকে শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক হিসেবে বসানো হল বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। অনেকেই বলছেন হেরেও গৌতমবাবুকে পুরস্কৃত করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে গৌতম দেব জানিয়েছেন, ''আমি নিয়োগপত্র পেয়েছি। শুক্রবারই শিলিগুড়ি পুরসভার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসব। আমার প্রথম কাজ হচ্ছে কোভিড নিয়ন্ত্রণ।''
আমার সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি
এভাবে অপসারণ নিয়ে অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ''আমি হেরে গিয়েছি। তাই পদে থাকতে চাই না, এটা ঠিক।'' কিন্তু তাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি বলে দাবি প্রাক্তন মেয়রের। একই সঙ্গে তিনি জানান, কলকাতায় আগে প্রশাসক ছিলেন ফিরহাদ হাকিম। এ বার তাঁকেই দায়িত্ব দেওয়া হল। তা হলে শিলিগুড়ির ক্ষেত্রে সমতা থাকবে না কেন? অর্ডার একই রকম হওয়ার কথা। একই সঙ্গে অশোকবাবু আরও বলেন, ''মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেরে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। গৌতম দেবও হেরে গিয়েছেন। তবে সে সব নিয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। আমি হেরে গিয়েছি বলে আর প্রশাসকের পদে বসতে চাই না।''
বিপুল ভোটে হার অশোকের
বামেদের দুর্দিনেও একা মুখ রক্ষা করেছিলেন অশোক ভট্টাচার্য। রাজ্য যখন পরিবর্তনে ঝড় বইছে শিলিগুড়ি তখনও ছিল লাল। কিন্তু এবার আর সেই লালদুর্গ রক্ষ করা হল না বামেদের। যদিও ভোট গণনার শুরু থেকেই এগিয়ে ছিলেন অশোকবাবু। কিন্তু বেলা বাড়তেই খেলা ঘুরে যায় খেলা। ক্রমশ পিছিয়ে পড়েন অশোকবাবু। যা দেখে দুপুরেই গণনা কেন্দ্র ছাড়েন তিনি। বিজেপির শঙ্কর ঘোষের কাছে হার স্বীকার করলে হল দুঁদে সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যকে। গোটা রাজ্যে ভাল ফল না করেও শিলিগুড়ি দখল করাকে বিজেপি নিজেদের বড় জয় বলে মনে করছে। তবে অশোকবাবুকে অপসারণ নিয়ে মুখে খুলেছেন বিজেপি বিধায়ক। বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ বলেন, ''এই সিদ্ধান্ত অনৈতিক। যাঁরা পরাজিত হয়েছেন, তাঁদের প্রশাসক পদে বসানো হল। মানুষ এর বিচার করবে।''