শেষ ৫ অলিম্পিকে ভারতের সেরা সাফল্য জানুন, টোকিওর উদ্বোধন নিয়ে নিরুত্তাপ অ্যাথলিটরা
করোনা আবহে কাল থেকে শুরু হতে চলেছে টোকিও অলিম্পিক। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকছে না জাঁকজমক। অনেক রাষ্ট্রপ্রধানই শেষ মুহূর্তে টোকিও সফর বাতিল করেছেন। অতিথি, আধিকারিক মিলিয়ে খুব বেশি হলে হাজার খানেক দর্শক স্টেডিয়ামে বসে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখবেন। আগ্রহ কম ভারতীয়দেরও। মেরেকেটে জনা ৪৪ অ্যাথলিট থাকতে পারেন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। এবারের অলিম্পিকে সেরা সাফল্যেই মনোনিবেশ ভারতীয় ক্রীড়াবিদদের।
মেরেকেটে ৪৪ অ্যাথলিট
করোনা পরিস্থিতিতে টোকিও অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অ্যাথলিটদের জন্য কোনও সীমারেখা না থাকলেও প্রতি দেশের সর্বাধিক ৬ আধিকারিক মার্চ পাস্টে অংশ নিতে পারবেন বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। কিন্তু ভারতের ৬ আধিকারিক নিয়ে মার্চপাস্টে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ৫০ পেরোবে না, তার কমও থাকতে পারে। খুব বেশি হলে ৪৪ জন অ্যাথলিট থাকতে পারেন। করোনা পরিস্থিতির কারণেই অ্যাথলিটরা অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে নিরুত্তাপ রয়েছেন। এবারের অলিম্পিকে ১২৭ জন অ্যাথলিটের পাশাপাশি কোচ, সাপোর্ট স্টাফ ও আধিকারিক নিয়ে ভারকীয় কনটিনজেন্টের সংখ্যা ২২৮। ফলে খুব বেশি হলে এক-তৃতীয়াংশ অ্যাথলিটই থাকবেন মার্চ পাস্টে। ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল রাজীব মেহতাই জানিয়েছেন, ভারত থেকে সর্বাধিক ৫০ জন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকবেন।
করোনা সংক্রমণের ভয়েই
টোকিও অলিম্পিকে ভারতের পতাকা বহন করবেন কিংবদন্তি বক্সার এমসি মেরি কম ও ভারতীয় হকি দলের অধিনায়ক মনপ্রীত সিং। মনপ্রীতের অধিনায়কত্বে ভারতের হকি ম্যাচ রয়েছে পরের দিনই। ভারতীয় দলের শেফ দ্য মিশন গতকালই জানিয়েছিলেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরদিন যাঁদের ইভেন্ট রয়েছে তাঁদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে না থাকার পরামর্শই দেওয়া হয়েছে। কেন না, স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তা শুরু হবে। চলতে পারে মাঝরাত অবধি। ভারতের শনিবার যে ইভেন্টগুলি রয়েছে তা হল শুটিং, তিরন্দাজি, বক্সিং এবং পুরুষ ও মহিলা হকির। সৌরভ চৌধুরী, অভিষেক ভার্মা, অপূর্বী চাণ্ডেলা, এলাভেনিল ভালারিভানের শুটিং ইভেন্ট রয়েছে শনিবার। পরের দিন মানু ভাকের, যশস্বিনী সিং দেসওয়াল, দীপক কুমার ও দিব্যাংশ সিং পানওয়ারের ইভেন্ট। ফলে প্রথম দিন যাঁদের ইভেন্ট রয়েছে তাঁরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকবেন না এটা নিশ্চিত।
শেষ ৫ অলিম্পিকে
এবারের টোকিও অলিম্পিকে ভারত সবচেয়ে বেশি পদক জিতবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। রিও অলিম্পিকের মতো হতাশাজনক পারফরম্যান্স এবার হবে না বলেই আশা। তবে শেষ ৫ অলিম্পিকে ভারত একটির বেশি সোনা পায়নি। ২০০০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিডনি অলিম্পিকে মহিলাদের ৬৯ কেজি বিভাগে ভারোত্তোলক কর্ণম মালেশ্বরী ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। ২০০৪ সালের ১৭ অগাস্ট এথেন্স অলিম্পিকে পুরুষদের ডাবল ট্র্যাপ শুটিংয়ে রুপো জেতেন রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোর। ২০০৮ সালের বেজিং অলিম্পিক থেকে এসেছিল তিনটি পদক। ১১ অগাস্ট পুরুষদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে সোনা জেতেন অভিনব বিন্দ্রা। পুরুষদের মিডলওয়েট বক্সিংয়ে ২০ অগাস্ট বিজেন্দ্র সিং ব্রোঞ্জ জেতার পরের দিন পুরুষদের ফ্রিস্টাইল ৬৬ কেজি বিভাগের কুস্তিতে ব্রোঞ্জ জেতেন সুশীল কুমার। ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকে ভারত ৬টি পদক জিতলেও সোনা আসেনি। ৩ অগাস্ট পুরুষদের ২৫ মিটার ব্যৃাপিড ফায়ার পিস্তলে বিজয় কুমার রুপো জেতেন। ১২ অগাস্ট পুরুষদের ফ্রিস্টাইল ৬৬ কেজি বিভাগের কুস্তিতে রুপো জেতেন সুশীল কুমার। ৪ অগাস্ট মহিলাদের সিঙ্গলস ব্যাডমিন্টনে সাইনা নেহওয়াল ব্রোঞ্জ জেতেন। ৮ অগাস্ট মহিলাদের ফ্লাইওয়েট বিভাগের বক্সিংয়ে ব্রোঞ্জ জেতেন মেরি কম, ৩০ জুলাই ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে ব্রোঞ্জ জেতেন গগন নারাং। ১১ অগাস্ট ফ্রিস্টাইল ৬০ কেজি বিভাগের কুস্তিতে ব্রোঞ্জ জেতেন যোগেশ্বর দত্ত। ২০১৬ সালের রিও অলিম্পিকে ১৯ অগাস্ট ব্যাডমিন্টনে মহিলাদের সিঙ্গলসে রুপো জেতেন পিভি সিন্ধু। ১৭ অগাস্ট মহিলাদের ফ্রিস্টাইল ৫৮ কেজি বিভাগের কুস্তিতে ব্রোঞ্জ জেতেন সাক্ষী মালিক।
|
লিয়েন্ডারের শুভেচ্ছা
১৯৮০ সালের ২৯ জুলাই মস্কো অলিম্পিকে সোনা জিতেছিল ভারতীয় পুরুষ হকি দল। তার পরের পদকের জন্য ভারতকে অপেক্ষা করতে হয় ১৬ বছর। ৩ অগাস্ট ১৯৯৬ আটলান্টা অলিম্পিকে পুরুষদের সিঙ্গলস টেনিসে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন লিয়েন্ডার পেজ। অলিম্পিক শুরুর আগে তিনি ভারতীয়দের জন্য শুভেচ্ছাবার্তা দিয়েছেন টুইটের মাধ্যমে। একে অপরকে নমিনেট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতীয় অ্যাথলিটদের জন্য শুভেচ্ছা-বার্তা দিচ্ছেন তারকারা।