হাইভোল্টেজ লড়াই এবার পূর্ব মেদিনীপুরে, একুশের ভোটে নন্দীগ্রাম বাজি তৃণমূলের, কে করবে কিস্তি মাৎ
হাইভোল্টেজ লড়াই এবার পূর্ব মেদিনীপুরে, একুশের ভোটে নন্দীগ্রাম বাজি তৃণমূলের, কে করবে কিস্তি মাৎ
একুশের ভোটে আবার লাইমলাইটে নন্দীগ্রাম। এবার আর লালদুর্গ জয়ের লড়াই নয়। এবার খোদ পরিবর্তনের নেত্রী লড়াই করছেন এই কেন্দ্র থেকে। আর তাঁর প্রতিপক্ষ অধিকারী গড়ের রাজপুত্র শুভেন্দু অধিকারী। যাকে বলে বিজেপির এক্কা। অবশ্য এক্কাকে মাৎ দিতে শাসক দলও ছক সাজিয়ে ফেলেছে। কীন্তু ভোটে অঙ্ক কী বলছে। লোকসভা, বিধানসভার অঙ্ক কষলে মোটের উপর একটা আবছা হিসেব বেরিয়ে আসে।
তমলুক লোকসভা কেন্দ্র
তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে নন্দীগ্রাম। তালিকায় রয়েছে তমলুক,পাঁশকুড়া পূর্ব, ময়না, নন্দকুমার, মহিষাদল, হলদিয়া আর নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র। এই সাত বিধানসভা কেন্দ্রের সিংহভাগ জুড়েই রয়েছে অধিকারীদের দাপট। সাংসদ কে অধিকারী পরিবারের ছেলে দিব্যেন্দু। শুভেন্দুর ফুল বদলের পর তাকে ঘিরেও প্রতিদিনই নতুন নতুন জল্পনার পারদ চড়ছে। সেসব সরিয়ে রেখে দিব্যেন্দুর ভোটের অঙ্ক কষলে যা হয় তা হল ৭,২৪৪৩৩। সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র ভাগ করলে যা দাঁড়ায় তাতে নন্দীগ্রামই দিয়েছে সবচেয়ে বেশি ১,৩০৬৫৯। আর সবচেয়েকম ভোট জুড়েছে পাঁশকুড়া পূর্ব থেকে। ময়না, হলদিয়া মোটামুটি ১ লক্ষের উপর ভোট দিয়েছে। বাকি মহিষাদল, নন্দকুমার আর তমলুক ওই ১ লক্ষ ছুঁই ছুঁই।
বিজেপির ভোটের অঙ্ক
তমলুক লোকসভা কেন্দ্র ২০১৯-এ বিজেিপ ভাল টক্কর দিয়েছে দিব্যেন্দুকে। যদিও ২ লক্ষেরও বেশি ভোটে কুপোকাত হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী সিদ্ধান্ত সিদ্ধার্থশেখর নস্কর। তবে পূর্ণাঙ্গ রেজাল্ট বলছে দ্বিতীয় আসনে ছিল বিজেপি। বাম কংগ্রেস তাঁদের ধারের কাছেও ছিল না। অর্থাৎ লোকসভা ভোটেই বিজেপি কড়া চ্যালেঞ্জ দিয়ে ঘাসফুল শিবিরকে বুঝিয়ে দিয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরে পা জমাতে শুরু করে দিয়েছে তারা। লোকসভা ভোটে তমলুক কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছিলেন ৫,৩৪,২৬৮টি ভোট।
বিধানসভা নিরিখে ভোটের অঙ্ক
তমলুক লোকসভা কেন্দ্রর মধ্যে যে সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র পড়ে তারমধ্যে বিজেপি কিন্তু হাড্ডাহাড্ডি টক্কর দিয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। তমলুকে দিব্যেন্দু যেখানে ৯৩,৬৮০টি ভোট পেয়েছে সেখানে বিজেপি প্রার্থী সিদ্ধার্থশেখর নস্কর পেয়েছেন ৮৭,১৩২টি ভোট অর্থাৎ মাত্র ৫ হাজারের কাছাকাছি ভোটের ফারাক। ঠিক একই ভাবে পাঁশকুড়া পূর্ব, ময়না, হলদিয়াতেও ভোটের ফারাক হাজার ৫ থেকে ৮-র মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে।
নন্দীগ্রামেই খেল খতম
লোকসভা ভোটে তৃণমূলের হয়ে আসল লড়াইটা লড়ে দিয়েছে নন্দীগ্রাম। দিব্যেন্দু যেথানে এক লক্ষ পেরিয়েছে ভোটে। বিজেপি প্রার্থী সেখানে ৬২ হাজারের কিছু বেশি ভোটেই থমকে গিেয়ছে।নন্দীগ্রামকে এই লড়াইয়ে সহযোগিতা করেছে হলদিয়া। সেখানেও ঘাসফুল শিবির ১ লক্ষ পার করে গিয়েছে আর গেরুয়া শিবির থমকে গিয়েছে ৬১ হাজারের কাছে। যদিও এই ভোটই হয়েছে শুভেন্দুর কামালে। এমনই দাবি রাজনৈতিক মহলের। কিন্তু এবার কী হবে। যে শুভেন্দুর দাপটে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খায় সে তো রং বলদে সবুজ থেকে গেরুয়া হয়ে গিয়েছে।
মমতার চ্যালেঞ্জ
এবারে নন্দীগ্রামে শাসক দলের বাজি খোদ জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার দাপট বেশি শুভেন্দু না মমতা। ভোটের বাক্সে এই লড়াইটাই বেশি। একজন নিজেকে নন্দীগ্রামের ভোটার দাবি করে ঘরের ছেলে হিসেবে প্রচার শুরু করেছে। আরেকজন নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নেত্রী। যার নেতৃত্বে আন্দোলনে নতুন সূর্যোদয় হয়েছিল নন্দীগ্রামে। কে বেশি জনপ্রিয়। কার আধিপত্য বেশি তার লড়াই শুরু হয়ে যাবে। ১ এপ্রিল ভোট নন্দীগ্রামে। একুশের ভোটের মহারণের কুরুক্ষেত্রের দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। নন্দীগ্রাম পাশা ফলেই বাংলা জয়ের স্বপ্ন দেখছে বিজেপি।
কে কোথায় এগিয়ে, একুশের নির্বাচনের আগে ঝাড়গ্রামের সাত কেন্দ্রের হালহকিকৎ