ম্যাডক্স স্কোয়ারে যুবক খুনের ঘটনায় গ্রেফতার ৩, তবু রহস্যের কিনারা হল না এখনও
কলকাতা, ২২ জুন : ম্যাডক্স স্কোয়ারে রমিত মন্ডলের (২৯) মৃত্যুর ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এখনও তিন জন পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। এদের মধ্যে ২ জনকে বালিগঞ্জ থেকে এবং একজনকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ম্যাডক্স স্কোয়ারে যুবকের মৃত্যুতে সন্দেহ চার বন্ধুকেই, উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চায় পরিবার
রমিত খুনের ঘটনার পর থেকেই তাঁর ৪ বন্ধুর দিকেই সন্দেহ গিয়েছিল পুলিশের। এরপর বন্ধুদের দফায় দফায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে। বন্ধুদের বয়ানের ভিত্তিতে স্কেচ আঁকানো হয়। সেই স্কেচ থেকে মূল অভিযুক্ত বিশালের ছবি পাওয়া যায়। পুলিশ তদন্তে জানতে পারে দুটি বাইকে করে ৬ ব্যক্তি এসেছিল। তাদের সঙ্গে বচসা হয়। এদের মধ্যেই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে অন্যতম বিশাল। বাকি ৩ জনের খোঁজে তল্লাসি চালাচ্ছে পুলিশ।
এরপরই বিশালকে তুলে এনে বালিগঞ্জ থানায় জিক্ষাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। বিশালের কথায় অনেক অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। পুলিশ সূত্রের দাবি, গ্রেফতার তিনজনের সঙ্গে রমিতের খুনের প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে। পলাতক তিনজনের বিরুদ্ধে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। তবে রমিতের মৃত্যু এখনও রহস্যই রয়ে গিয়েছে। যদিও পুলিশ আপাতত রমিতের বন্ধুদের ভূমিকা খতিয়ে দেখছে। কিংবা বন্ধুদের কোনও শত্রুতার স্বীকার রমিত হয়েছেন কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে।
পুলিশের কথায়, সেদিন চার বন্ধু শুভজিৎ নস্কর, সুরজিৎ নস্কর, দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য এবং চিরঞ্জিৎ নন্দীর সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন রমিত। বালিগঞ্জের এক জমি লেনদেন কারবারীর সঙ্গে চিরঞ্জিতের ঘনিষ্ঠতা ছিল। সে কামালগাজির ছেলে হলেও মাঝে মধ্যেই ম্যাডক্স স্কোয়ারে আসতেন। স্থানীয় কিছু যুবক হয়তো এই বাড়ির লেনদেনের বিষয়ে চিরঞ্জিতের উপর আক্রোশ ছিল। টার্গেট ছিল সে, কিন্তু ভুল করে চিরঞ্জিতের জায়গায় রমিতের মৃত্যু হয়। এই বিষয়গুলি তদন্তে খতিয়ে দেখা হবে। চিরঞ্জিতের কথায় অসঙ্গতিও মিলেছে।
অন্যদিকে দেবজ্যোতির বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে তার এক আত্মীয় জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের করেছিল থানায়। সে বিষয়টিও আবার দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে ওই আত্মীয়ের সঙ্গে কথাও বলবে পুলিশ।
আর একটি বিষয়ে পুলিশ গুরুত্ব দিচ্ছে, তা হল, কীভাবে মারা হয়েছে রমিতকে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারী অথচ ভোতা কিছু দিয়ে মাথায় মারা হয়েছিল রমিতের। ফলে মাথা থেঁতলে যায়। প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণের ফলে মারা যান রমিত মন্ডল। ঘটনাস্থল থেকে ইঁট ও বাঁশ পাওয়া গিয়েছে। তাতে পুলিশের অনুমান আরও প্রবল হয় যে রমিতের খুন পরিকল্পনামাফিক খুন। পাশাপাশি স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, মোটরবাইকের কোনও আওয়াজ তারা না পেলেও অশান্তি, কথাকাটাকাটিক আওয়াজ তারা পেয়েছিলেন।
আজই ধৃতদের আদালতে তোলা হবে। সেখানে তাদের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানানো হবে। পরে হেফাজতে নিয়ে তিনজনকে মুখোমুখি বসিয়ে এবং আলাদা আলাদা করে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে পুলিশের সূত্রের তরফে জানানো হয়েছে।