কোন দলের সাংসদ ছিলেন সোমনাথ! সিপিএমের শোক-বার্তাতেও স্পষ্ট বহিষ্কার-বিতর্ক
পলিটব্যুরোর বৈঠক শেষে যে বার্তা দিল দল সেখানেও সিপিএম নেতা বলে উল্লেখ করা হল না সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁকে আখ্যায়িত করা হল প্রাক্তন স্পিকার হিসেবেই।
লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণেও বহিষ্কার-বিতর্ক পিছু ছাড়ল না। সোমনাথ জায়া রেণু চট্টোপাধ্যায় আগেই সিপিএমের পতাকা ফিরিয়েছিলেন। এবার পলিটব্যুরোর বৈঠক শেষে যে বার্তা দিল দল সেখানেও সিপিএম নেতা বলে উল্লেখ করা হল না সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁকে আখ্যায়িত করা হল প্রাক্তন স্পিকার হিসেবেই।
সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পরও চরম ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল সিপিএমের অন্দরে। কী অবস্থান নেবে লাল পার্টি, তা নিয়েই যখন ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল, তখন বঙ্গ সিপিএম পার্টির পতাকা দিয়ে মুড়ে দিতে চেয়েছিল প্রাক্তন সাংসদের দেহ। মুলতুবি করে দেওয়া হয়েছিল রাজ্য কমিটির বৈঠক। লাল সেলাম জানাতে চেয়েছিল সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে।
প্রত্যেকেই উপস্থিত হয়ে ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেও সোমনাথের মরদেহে লাল পার্টির কোনও চিহ্ন রাখতে দেননি সোমনাথ-জায়া রেণু চট্টোপাধ্যায় বা সোমনাথ কন্যা অনুশীলা বসু। কেন্দ্রীয় সিপিএমের তরফে কোনও বার্তা এসেছিল না তখনও। অবশেষে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর দলের তরফে শোক-বার্তা দেওয়া হল।
সেই শোকবার্তা লেখা হয়েছে- লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার ১০ বারের সাংসদের প্রয়াণে সিপিএম পলিটব্যুরের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করা হচ্ছে ও সমবেদনা জানানো হচ্ছে। তিনি ভারতীয় সংবিধানের ভিত্তি রক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। বিশেষত ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক ভিত্তি এবং জাতীয়তাবাদের সুরক্ষায় তিনি যে ভূমিকা পালন করেছিলেন, তা অপরিহার্য।
CPIM PolitBuro expresses its grief & sorrow at the death of former Speaker &10 time Lok Sabha MP, #SomnathChatterjee.
— CPI (M) (@cpimspeak) August 13, 2018
He played an important role in defending the foundations of the Indian Constitution particularly its secular democratic foundations and federalism.
[আরও পড়ুন:জ্যোতি বসুও সহমত ছিলেন সোমনাথের সঙ্গে! বহিষ্কার-বিতর্ক উসকে নবতম সংযোজন]
পলিটব্যুরোর শোকবার্তায় বিতর্ক ঢাকতে রাজ্য কমিটি সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ বলে উল্লেখ করল ভিন্ন এক শোকবার্তায়। সেখানে বলা হয়, সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদের প্রয়াণে আমরা গভীর শোকাহত, আমরা দুঃখপ্রকাশ করছি। তবে কেন্দ্রীয় কমিটিকে এড়িয়ে এই শোকবার্তায় সমালোচিত হবে বাংলা কমিটি।
প্রশ্ন উঠতে পারে রাজ্য কমিটির বৈঠক মুলতুবি নিয়েও। যেখানে কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁকে সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ বলেই উল্লেখ করতে চায় না, সেখানে বঙ্গ সিপিএম সেই আস্পর্ধা দেখিয়েছে। আবার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণে তাঁদের রাজ্য কমিটির বৈঠক মুলতুবি করেছে শোকপ্রস্তাবের পর। এর ফলে বাংলার সিপিএম ফের সমস্যায় পড়তে পারে।
যদিও বাংলার সিপিএম বরাবর অন্তরালে চলে যাওয়া সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের ব্যাপারে নমনীয় ছিল। তাঁরা চাইতেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় ফের নেতৃত্ব দিন তাঁদের। কিন্তু সংখ্যালঘু হওয়ায় তাঁদের আওয়াজ পৌঁছয়নি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পর্যন্ত। সিপিএমে ব্রাত্যই রয়ে গিয়েছেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। মৃত্যুর পরও বদলাল না চিত্রটা।
[আরও পড়ুন:সোমনাথ-প্রয়াণে কেন ব্রাত্য রয়ে গেল আলিমুদ্দিন, খোলসা করলেন স্বয়ং কন্যা অনুশীলা]