ওপেকের সিদ্ধান্তে সৌদি মার্কিন সম্পর্কের অবনতির সম্ভাবনা! তীব্র প্রতিক্রিয়া আমেরিকার
ওপেকের তেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্তে আমেরিকা ও সৌদি আরবের সম্পর্কের অবনতির সম্ভাবনা
গত সপ্তাহে সৌদি আরবের নেতৃত্বে আমেরিকার তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর বৈঠক হয়। এই ওপেকের বৈঠকের পরেই আমেরিকার সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। আমেরিকা অভিযোগ করেছে, সৌদি নেতৃত্বাধীন ওপেক রাশিয়ার স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও সৌদি আরব সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মার্কিন অভিযোগে সৌদি আরবের প্রতিক্রিয়া
গত সপ্তাহে ওপেক রাশিয়ার স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে আমেরিকা অভিযোগ করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সৌদি আরবের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক নিয়ে ভাবনা চিন্তা করবে বলেও হুমকি দেন। এরপরেই বৃহস্পতিবার সৌদি প্রশাসনের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে। সেখানে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানে রাশিয়ার পক্ষ নিচ্ছে বলে অভিযোগ অস্বীকার করেছে সৌদি আরব। সৌদি আরব বিবৃতিতে জানিয়েছে, ওপেকের প্রতিটি দেশ সর্ব সম্মতভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রিয়াদের একার সিদ্ধান্ত নয়। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের অস্থিরতা কমাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পাল্টা আমেরিকার দাবি
সৌদি আরবের বিবৃতির পরেই আমেরিকা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপদেষ্টা জন কিরবি প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ওপেকের সিদ্ধান্তের পরে রাশিয়া রাজস্ব বৃদ্ধি করবে। যার ফলে রাশিয়ার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, তা কার্যত মূল্যহীন হয়েছে। পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেছেন, সৌদি আরব অন্যান্য ওপেক দেশগুলোকে বাধ্য করেছে এই সিদ্ধান্ত মানতে। রাশিয়ার আগ্রাসনে ইউক্রেন বিপর্যস্ত হয়েছে। পশ্চিমি দেশগুলো নানাভাবে ইউক্রেনকে সাহায্য করছে। রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। কিন্তু সৌদি আরব পরোক্ষে রাশিয়াকে সাহায্য করেছে। যা কখনই কাম্য ছিল না।
বৈঠকে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর সিদ্ধান্ত
সৌদি নেতৃত্বাধীন তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর সম্প্রতি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে অন্যতম সদস্যদেশ রাশিয়ার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে নভেম্বর থেকে তেল উৎপাদন কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর তরফে জানানো হয়েছে, অপরিশোধিত তেলের আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও মনে করা হচ্ছে, এই প্রস্তাব রাশিয়ার থেকে এসেছে। এই সিদ্ধান্তে সব থেকে বেশি রাশিয়া লাভবান হবে। কারণ, রাশিয়ার ওপর ইতিমধ্যে পশ্চিমি দেশগুলো তেল ক্রয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। অন্যদিকে, তেল উৎপাদন কমে গেলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়বে। এই সম্মেলনের আগে জো বাইডেন সৌদি আরবের কাছে অনুরোধ করেছিলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম যাতে না বেড়ে যায়, সেই দিকে যেন নজর দেওয়া হয়।
সৌদি মার্কিন সম্পর্কের অবনতি!
সম্প্রতি কয়েক মাস আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি ক্রাউন প্রিন্স মহম্মদ বিন সলমনের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার কথা বলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে আমেরিকার সিল মোহর পড়ে। একদিকে, সৌদি আরবের তেল সংগ্রহ করবে আমেরিকা। অন্যদিকে, আমেরিকা সৌদি আরবকে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করবে। অগাস্টে নতুন করে আমেরিকার সঙ্গে সৌদি আরবের চুক্তি হয়। সেখানে আমেরিকার সৌদি আরবকে দূর পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সহ একাধিক সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করার চুক্তি করে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মতে আমেরিকার তাদের সামরিক সরঞ্জামের এক তৃতীয়াংশ সৌদি আরবকে বিক্রি করে। সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হলে, আমেরিকাও আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়বে, তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
উদ্বেগ বাড়াচ্ছে শহরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি, ফের পুরকর্মীদের ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত ফিরহাদ হাকিমের