রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: ১৫ হাজার যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হওয়ার অভিযোগ
ইউক্রেনের প্রধান কৌঁসুলির অভিযোগ যে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় পনের হাজার যুদ্ধাপরাধের মতো ঘটনা সংঘটিত হয়েছে ইউক্রেনে।
দ্যা হেগ শহরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ইরিনা ভেনেডিকটভা বলেছেন, এসব ঘটনায় ছয়শ সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ৮০টি ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
আর এই সন্দেহভাজনদের তালিকায় রুশ সেনাবাহিনীর সিনিয়র পর্যায়ের কর্মকর্তারা ছাড়াও দেশটির রাজনীতিক ও রাশিয়ার পক্ষে কাজ করা 'প্রোপাগান্ডা এজেন্ট'দের নাম রয়েছে।
রাশিয়া অবশ্য বরাবরই বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন:
রাশিয়া থেকে তেল আমদানি দুই-তৃতীয়াংশ কমানোর সিদ্ধান্ত ইউরোপের
ডনবাস ও লুহানস্কে চল্লিশটির বেশি শহর ব্যাপক রুশ গোলাবর্ষণের মুখে
ইউক্রেন যুদ্ধে কী চায় রাশিয়া? কীভাবে এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটতে পারে?
রাশিয়ার বিরুদ্ধে চরম নিষ্ঠুরতার অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের
মিস ভেনেডিকটভা জানিয়েছেন যে, পনের হাজার যুদ্ধাপরাধের ঘটনা মধ্যে কয়েক হাজার হয়েছে পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস অঞ্চলে, যেখানে ইউক্রেনের সেনাদের সঙ্গে রুশদের তীব্র লড়াই হয়েছে।
ওই অঞ্চলে যুদ্ধাপরাধের যেসব ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে আছে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা।
বিশেষ করে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের রাশিয়ার দুটি আলাদা এলাকায় পাঠিয়ে দেয়া।
তিনি বলেন, নির্যাতন, বেসামরিক নাগরিক হত্যা, বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করাও সন্দেহভাজন যুদ্ধাপরাধের মধ্যে রয়েছে।
"লড়াই চলার সময় তদন্ত করা খুব কঠিন কাজ," ইরিনা ভেনেডিকটভাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ।
এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও স্লোভাকিয়াও এসব ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়া আগে থেকেই সহায়তা করছে।
দি ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম কোর্ট ইতোমধ্যেই ইউক্রেনকে 'অপরাধ ক্ষেত্র' হিসেবে বর্ণনা করেছে এবং ইতোমধ্যেই সংস্থাটির তদন্ত কর্মকর্তাদের একটি বড় দলকে ইউক্রেনের তদন্ত কার্যক্রমে সহায়তার জন্য ছেড়ে দিয়েছে।
এমনকি তারা কিয়েভে একটি কার্যালয় নেয়ারও আশা করছে।
এদিকে মঙ্গলবার দুজন রাশিয়ান সেনাকে কারাদণ্ড দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে বেসামরিক এলাকায় গোলাবর্ষণের দায়ে।
এছাড়া ইউক্রেনে আরও একজন রুশ সেনার বিচার শুরু হয়েছে গত সপ্তাহে।
তার বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিক হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ইউক্রেনের মানবাধিকার বিষয়ক ন্যায়পাল বরখাস্ত
ওদিকে ইউক্রেনের মানবাধিকার বিষয়ক ন্যায়পালকে দেশটির পার্লামেন্ট বরখাস্ত করেছে।
লুদমিলা ডেনিসোভার বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো তিনি মানবিক করিডোর তৈরি করে বন্দি বিনিময় কার্যক্রম সঠিকভাবে করতে পারেননি।
একইসাথে রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের যে অভিযোগ উঠেছে সেটিও ঠিকমতো সামাল দিতে পারেননি বলে স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে।
এদিকে পূর্বাঞ্চলীয় শহর সেভেরোদনিয়েস্কের নিয়ন্ত্রণ নিতে ইউক্রেন ও রুশ সৈন্যদের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে।
যদিও সেখানকার আঞ্চলিক গভর্নর জানিয়েছেন যে শহরটি ৭০-৮০ ভাগ এখন রুশদের নিয়ন্ত্রণে।
রাশিয়া এখন লুহানস্কের প্রায় পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করছে এবং পার্শ্ববর্তী দনেৎস্কের দিকে দৃষ্টি দিয়েছে।
ওদিকে হাঙ্গেরির বিরোধিতা সত্ত্বেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেতারা রাশিয়া থেকে আনা তেলের নব্বই শতাংশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে রাজনৈতিকভাবে একমত হয়েছে।
বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন:
যুদ্ধে জড়ানোর জের কতটা সামলাতে পারবেন ভ্লাদিমির পুতিন
গণতন্ত্রের সূচকে আবারো 'হাইব্রিড রেজিমের' তালিকায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশে হঠাৎ করে বেকারিতে ধর্মঘট, পাউরুটির সংকট
টেস্টে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেয়া নিয়ে যা বললেন মুমিনুল হক