গ্রামীণ ভারতে টিকাকরণের হার কম, ভ্যাকসিন সরবরাহে ঘাটতি, মেনে নিল কেন্দ্র
গ্রামীণ ভারতে টিকাকরণের হার কম
শহরের তুলনায় দেশের গ্রামগুলিতে টিকাকরণের হার যথেষ্ট কম। সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে কোউইন প্ল্যাটফর্মে গ্রামের বাসিন্দাদের টিকাকরণের রেজিস্ট্রেশনের জন্য কমন সার্ভিস সেন্টার (সিএসসিএস) একমাসের মধ্যে চালু করে দেওয়া হবে। সেখানে দেখা গিয়েছে এখনও পর্যন্ত ৩ লক্ষ সিএসসিএস অ্যাকাউন্টে ০.৫ শতাংশেরও কম মানুষ রেজিস্টার করেছেন টিকাকরণের জন্য।
রয়েছে ডেল্টা ভয়, সঙ্গে দ্রুত টিকাকরণে জোর! ফের ১ মাসের লকডাউন জারি ব্রিটেনে
ফাঁক থাকছে শহর ও গ্রামের মধ্যে
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ১২ জুন পর্যন্ত ২৮.৫ কোটি মানুষ যাঁরা টিকাকরণের জন্য নাম নথিভুক্ত করিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে মাত্র ১৪.২৫ লক্ষ নাম নথিভুক্ত হয়েছে সিএসসিএস-এর মাধ্যমে। সিএসসিএস-এ প্রত্যেক মাসে যেখানে নাম রেজিস্ট্রেশনের মোট সংখ্যা প্রান্তিক বৃদ্ধি পেয়েছে, সেখানে শহর ও গ্রামীণ ভারতের মধ্যে এখনও ফাঁক রয়েছে অনেকটাই এবং টিকাকরণের সম বন্টন নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
সিএসসিএ–এ নাম নথিভুক্তের হার খুব কম
জানা গিয়েছে, ১১ মে পর্যন্ত মাত্র ৫৪,৪৬০ সিএসসিএস সক্রিয় ছিল এবং সেখানে টিকাকরণের জন্য নাম রেজিস্ট্রেশন হয়েছে মাত্র ১.৭ লক্ষ জনের, যা গোটা দেশে টিকাকরণের নাম নথিভুক্তের ১৭ কোটির মধ্যে মাত্র ০.১ শতাংশ। টিকাকরণের জন্য এত ধীরগতিতে নাম নথিভুক্ত করা নিয়ে গ্রাম-স্তরের উদ্যোক্তা, যিনি হরিয়ানায় সিএসসি পরিচালনা করেন তিনি ব্যাখা করে বলেন, 'আমরা যদি মানুষকে টিকাকরণ করানোর জন্য নাম রেজিস্টার করার কথা বলি, তাঁরা আমাদের উল্টে জিজ্ঞাসা করেন ভ্যাকসিন উপলব্ধ কিনা এবং তাঁরা জানান যে ভ্যাকসিন যখন উপলব্ধ হবে তখন তাঁরা ফিরে আসবেন। আমাদেরকে তাঁদের সঙ্গেই থাকতে হয় তাই আমরা রেজিস্টারের জন্য খুব বেশি চাপ তাঁদের দিতে পারি না।'
গ্রামে ঘাটতি রয়েছে ভ্যাকসিনের
তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের কর্মকর্তারা এটা নিশ্চিত করেছেন যে ভ্যাকসিনের ঘাটতির বিষয়টি গ্রামে সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছে। তবে তাঁরা এ বিষয়ে আশাবাদী যে ভ্যাকসিনের সরবরাহ পুনঃস্থাপনের পর টিকাকরণের রেজিস্ট্রেশন বৃদ্ধি পাবে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'টিকাকরণ নিয়ে সংশয় খুব বড় একটা কারণ। গ্রামে সব ধরনের প্রচলিত ধারণা ঘুরে বেড়াচ্ছে। বহু প্রচারের পরে ভ্যাকসিনের দাম কম-বেশি নিয়ে বিভ্রান্তি দূর হয়েছে। কিন্তু কীভাবে একজন মানুষকে বোঝাবেন যে ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে তা বিপদে ফেলবে না।'
সর্বাধিক রেজিস্ট্রেশন উত্তরপ্রদেশে
সাম্প্রতিক পাওয়া তথ্য অনুযায়ী (১২ জুন), উত্তরপ্রদেশের সিএসসিএসে সবচেয়ে বেশি নাম নথিভুক্ত হয়েছে। এই রাজ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রাম রয়েছে, এখানে কোইউন প্ল্যাটফর্মে নাম নথিভুক্ত হয়েছে ৫,১৮,৪২২ জনের। এরপরই রয়েছে পাঞ্জাব, যেখানে ৭৭,৩০৩ জনের নাম নথিভুক্ত হয়েছে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের গ্রামগুলিতে আরও কম নাম নথিভুক্ত হয়েছে। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, লাক্ষাদ্বীপ, দাদরা ও নগর হাভেলি, দমন ও দিউ এবং লাদাখে সিএসসিএস-এ মাত্র ৫৭, ১০, ৩৯, ৫৮ ও ৬৮ জন মানুষের নাম নথিভুক্ত হয়েছে। গোয়া, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম এবং নাগাল্যান্ডের মতো ছোট শহরগুলির প্রদর্শনও বেশ খারাপ। এখানে সিএসসিএস-এ নাম রেজিস্টার হয়েছে ১৬৫, ১,১৬৫, ১,৩৫০, ১,২৫৮ এবং ১,৫৮২। এই রাজ্যগুলিতে মোট টিকাকরণ হয়েছে ৬.৫৭ লক্ষ, ৫.৪৩ লক্ষ, ৫.১৬ লক্ষ, ৩.৫৭ লক্ষ এবং ৩.৪৮ লক্ষ।