এনডিএ-র চিড়ে ঢুকল পঙ্গপাল! কৃষি বিলের আঁচে ছিন্নভিন্ন বিজেপির জোট সমীকরণ
পাঞ্জাব ও হরিয়ানাতে বাড়তে থাকা প্রতিবাদের জেরে কৃষি বিলগুলিকে কৃষকদের স্বার্থের পরিপন্থী বলে ব্য়াখ্যা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কউর বাদল। এই ইস্যুতে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। কৃষি বিল সংক্রান্ত আলোচনার জন্য বাড়ানো হয় লোকসভার অধিবেশনের সময়সীমা। চূড়ান্ত নাটকীয়তার শেষে লোকসভায় ধ্বনিভোটে পাশ হয় কৃষি বিল।
হরসিমরত কউর বাদলের বিস্ফোরণ
কৃষি সংক্রান্ত বিলগুলি সবে ঘোষণা হয়েছে। বিলের পক্ষে-বিপক্ষে ভোটাভুটি শুরু হওয়ার মুহূর্তে। কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী দলের নেতারা তখন বিলের বিরোধীতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর ঠিক সেই সময়েই কেন্দ্রের বিড়ম্বনা শতগুণে বাড়িয়ে এই বিলগুলিকে কৃষক স্বার্থের পরিপন্থী বলে বসেন শিরোমণি অকালি দলের নেত্রী হরসিমরত কউর বাদল। আর এতেই আরও চরমে পৌঁছায় নাটক।
কৃষকদের স্বার্থের পরিপন্থী
কেন্দ্রের আনা কৃষি সংক্রান্ত বিলগুলি কৃষকদের স্বার্থের পরিপন্থী বলেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কউর বাদল৷ এই কৃষক বিরোধী বিলের কারণেই মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন আকালি দলের নেত্রী তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কউর বাদল। যদিও সবকিছুর মধ্যেই লোকসভায় ধ্বনিভোটের মাধ্যমে পাশ হয় কৃষি বিল।
এখানে রাজনীতির কী আছে!
এদিকে সদ্য মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের পর অকালি দলের নেত্রী আজ জানিয়েছেন, 'আমি বলছিলাম বিলগুলি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের মানুষদের সঙ্গে আলোচনা করে তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। এখানে রাজনীতির কী আছে! শুধুমাত্র পাঞ্জাবই নয়, হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের কৃষকরা এই বিলগুলির বিরোধিতা করছেন। দক্ষিণী রাজ্যগুলিতেও বিলগুলির বিরোধিতা শুরু হয়েছে।'
পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় কৃষক প্রতিবাদ
সংসদে বিলগুলির ঘোষণা করার পরেই হরসিমরতের স্বামী এবং অকালি দলের প্রধান সুখবীর বাদল বলেন, 'কৃষি ক্ষেত্রে পঞ্জাব সরকারের ৫০ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম এই প্রস্তাবিত বিল ধ্বংস করবে৷' প্রসঙ্গত, বিগত প্রায় কয়েক সপ্তাহ ধরেই পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় কৃষক বিরোধী' এই বিলগুলির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলছিল।
পাঞ্জাবে বাড়তে থাকা প্রতিবাদের জেরে পিছপা অকালি দল
অকালি দল শুরুতে এই বিলের সমর্থনেই ছিল। কিন্তু পাঞ্জাবে বাড়তে থাকা প্রতিবাদের জেরে বিলটি আপাতত স্থগিত রাখার জন্য কেন্দ্রকে আবেদন করেছিল অকালি দল। কিন্তু কেন্দ্র সংসদে এই বিলগুলি পেশ করার সিদ্ধান্ত থেকে পিছপা হয়নি। এই কারণে নিজেদের সমর্থন তুলে নিতে বাধ্য হয় আকালি দল। সুখবীর বাদল এই কৃষিসংক্রান্ত বিলগুলিকে কৃষক বিরোধী বলে আখ্যা দেন। তবে সরকার থেকে বেরিয়ে এলেও, আকালি দল বাইরে থেকে সরকারকে সমর্থন করে যাবে বলে জানান সুখবীর বাদল।
হরিয়ানার জোট সমীকরণ
এদিকে পাঞ্জাবে বিজেপির জোট শরিকদের তৈরি করা চাপে দুমড়ে যাচ্ছে হরিয়ানার উপ-মুখ্যমন্ত্রী দুষ্মন্ত চৌতালা। প্রশ্ন উঠছে হরিয়ানার সরকার কি আদৌ টিকে থাকবে! কারণ, এবার বিজেপির হাত ছাড়তে পারে জেজেপি। কারণ এদের মূল ভোটব্যাঙ্ক কৃষক। এসবের মধ্যে আবার দলের অন্দরে চাপ বাড়ছে। দলের ১০ বিধায়কের মধ্যে দু'জন রামকুমার গৌতম এবং দেবেন্দ্র সিং ইতিমধ্যেই দুষ্মন্তর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন। যদিও এখনও পর্যন্ত দুষ্মন্ত চৌতালা কৃষি অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলেননি। তবে বিশেষজ্ঞদের মত, তা কেবলমাত্র সময়ের অপেক্ষা।
একনজরে দেখে নিন দেশবাসীকে দেওয়া প্রধানমন্ত্রী মোদীর কয়েকটি বিশেষ উপহার