ঝাড়খণ্ডে রাজনৈতিক মাটি হারানোর ভয় ক্রমেই দানা বাঁধছে বিজেপির অন্দরে
ঝাড়খণ্ডে মাটি হারানোর ভয় ক্রমেই দানা বাঁধছে বিজেপির অন্দরে
মহারাষ্ট্র,
হরিয়ানা
সহ
একাধিক
রাজ্যে
ক্রমেই
পায়ের
তলার
মাটি
হারাচ্ছে
বিজেপি।
এনআরসি
ভয়
তাড়া
করে
বেড়াচ্ছে
বঙ্গবাসীকেও।
তার
ছাপ
গত
সপ্তাহের
পশ্চিমবঙ্গের
উপনির্বাচনের
ফলাফল
থেকেই
স্পষ্ট।
এবার
ঘরে
বাইরে
একাধিক
সমস্যায়
জেরবার
হয়ে
ঝাড়খণ্ডে
নিজেদের
শক্তি
ধরে
আরও
বেশ
কঠিন
হয়ে
যাচ্ছে
বিজেপির
কাছে।
ঝাড়খণ্ডে
৮১টি
বিধানসভা
আসনে
ভোট
গ্রহণ
প্রক্রিয়া
শুরু
হয়েছে
গত
মাসের
৩০
শে
নভেম্বর।
২০শে
ডিসেম্বর
পর্যন্ত
চলবে
ভোট
গ্রহণ
প্রক্রিয়া।
ভোটের
ফলাফল
প্রকাশিত
হবে
২৩শে
ডিসেম্বর।
চারটি বিষয়ের উপর দাঁড়িয়ে ঝাড়খণ্ডের বর্তমান রাজনৈতিক পটচিত্র
প্রথমত, সরকার গঠনের ক্ষেত্রে বিজেপির অনিবার্যতার কল্প কাহিনী এতদিন ঘোরাঘুরি করছিল লোকমুখে তা কার্যত নি:শেষ হয়ে গেছে শেষ কিছু রাজনৈতিক উত্থানপতনের পরেই। দ্বিতীয়ত, মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানাতেও ভালো ফলের আশা করেছিল বিজেপি। সেখানে ঝাড়খণ্ডের নির্বাচনী ইতিহাস বলছে ২০০৫ সালের প্রথম বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে কোনও দল বা প্রাক-জোট রাজ্যে সরকার গঠনের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।
তৃতীয়ত, রাজ্যের বিরোধী দলগুলির গুলির মধ্যে ভাঙন দেখা দিলেও তার ফায়দা তুলতে ব্যর্থ হয় বিজেপি। পাশাপাশি বিজেপির অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্য, শরিকি বিবাদ ও অন্তর্দ্বন্দ্ব বিজেপির জয়ের পথে প্রধান কাঁটা হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। চতুর্থত, ২০১৪ পরবর্তী সময়ে দেশ জুড়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার সূচনা হলে বেশ কিছু ক্ষেত্রে তার বিরূপ প্রভাব পড়তে দেখা একাধিক রাজ্যের শাসন কাঠামোর উপর।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি
ঝাড়খণ্ড তৈরির পর থেকে জাতীয় ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলি ক্ষমতায় এলেও শাসনব্যবস্থা খুব একটা আশাব্যঞ্জক কোনোকালেই ছিল না। কংগ্রেস, বিজেপি, জেএমএম, জেভিএমপি এবং এজেএসইউ সর্বদাই একাধিক ক্ষেত্রে রাজ্যের সামগ্রিক উন্নয়নের পরিবর্তে রাজ্যের মানুষের ঝাড়খণ্ডি পরিচয়কে বড় করে দেখানোর চেষ্টা করেছে।
অন্যদিকে ছোট ছোট রাজনৈতিক দল যেমন ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি (জেডিপি), ঝাড়খণ্ড জনধিকার পার্টি (জেজেপি), ঝাড়খণ্ড পিপলস পার্টি (জেপিপি), ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চা (জেভিএম-এস), এবং ঝাড়খণ্ড পার্টিও (জেপিপি) বিভিন্ন সময় ঝাড়খণ্ডের আদি বাসিন্দা ও উপজাতি তত্ত্বের উপর নির্ভর করে তাদের রাজনীতি বিস্তারের চেষ্টা করে।
বেশ কিছু নির্দল প্রার্থীও বর্তমান নির্বাচনে রাজ্যের একাধিক জায়গা থেকে ভাষা ও সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে নিজেদের পকেট ভর্তিতে সক্ষম। এজেএসইউ বর্তমানে নিজ ক্ষমতায় ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নিলেও চলতি নির্বাচনে বড়সড় প্রভাব নাও ফেলতে পারে। তবে উত্তর ছোট নাগপুর অঞ্চলে এর ফলে অন্য দলের থেকে বিজেপির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ঝাড়খণ্ডে ক্রমেই বাড়ছে অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা
এদিকে গত কয়েক বছরে ঝাড়খণ্ডে অনাহারে একাধিক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে বিজেপি শাসিত ঝাড়খণ্ডে গত পাঁচ বছরে ২২ জনের অনাহারে মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ২০১৮ সালেই মৃত্যুর সংখ্যা ১১ জন। অনাহারে মৃত্যু প্রসঙ্গে বিজেপিকে বারবার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে বিরোধীরা। প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন জন কল্যাণ মূলক প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়ে। এত কিছুর পরেও বিজেপি সরকার গঠন করতে পারে কি পারেনা, সেই দিকেই তাকিয়ে জনগণ।
অন্যদিকে বিজেপির অনেক প্রার্থীই বর্তমানে বিভিন্ন দুর্নীতির সাথে যুক্ত। একাধিক প্রার্থীর বিরুদ্ধে চলছে ফৌজদারি মামলা। বর্তমানে বিজেপিতে থাকা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার প্রাক্তন নেতা শশিভূষণ মেহতার বিরুদ্ধে চলছে খুনের মামলা।
বিরোধীদের ইস্যু ভিত্তিক রাজনীতি পিছনে ফেলতে পারে বিজেপিকে
এটি নিশ্চিত যে সমসাময়িক ইস্যুগুলি ক্ষমতাসীন বিজেপির নির্বাচনী ফলাফলে বেশ নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে চলেছে। কিছুদিন আগেই শতাব্দী প্রাচীন ছোটনাগপুর প্রজাস্বত্ব আইন (সিএনটি) এবং সাঁওতাল পরগনা প্রজাস্বত্ব আইন (এসপিটি) সংশোধন করার চেষ্টা করা হয়েছে। উপজাতি সম্প্রদায়ের জমি অধিগ্রহণে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও এই পদক্ষেপ নির্বাচনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে চলেছে বলে মত প্রায় সকলেরই। পাশাপাশি এই বিষয়গুলি সহ আরও একাধিক বিষয় নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা।
পাশাপাশি রাজ্যের পরিকাঠামোগত উন্নয়নে সমস্যা, পার্শ্ব শিক্ষকদের পদচ্যুতি, রাজ্যজুড়ে অগুনতি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বন্ধ হয়ে যাওয়া তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ক্ষমতাসীন বিজেপির এবারের নির্বাচনী লড়াইয়ে সমস্যার কারণ হতে চলেছে।