কেরলে বাড়ছে শিশু পর্নোগ্রাফি, নিয়ন্ত্রণ করছে ৫০ হাজার সদস্যের সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ
কেরলে বাড়ছে শিশু পর্নোগ্রাফি, নিয়ন্ত্রণ করছে ৫০ হাজার সদস্যের সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে শিশু পর্নোগ্রাফি। কেরল পুলিশ সম্প্রতি এই শিশু পর্নগ্রাফি আপলোড এবং ডাউনলোড করার অপরাধে ১২জনকে গ্রেফতার করেছে। রাজ্য পুলিশের আধিকারিক সোমবার জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় ৭–৮টি গ্রুপ রয়েছে, যেখানে এ ধরনের শিশুদের যৌনছবির ভিডিও দেওয়া হয়।
কেরলের এডিজি তথা সাইবার ক্রাইমের নোডাল অফিসার মনোজ আব্রাহাম জানান, রাজ্যে খুব দ্রুতহারে অনলাইনের মাধ্যমে শিশু পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, 'গত বছর কেরল পুলিশ তিনটি অভিযান চালিয়েছিল এবং সেখান থেকে ৩৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। সম্প্রতি ১২ অক্টোবর ফের একটি অভিযান চালায় পুলিশ, যেখান থেকে ১২ জনকে ধরতে পেরেছে পুলিশ। এদের মধ্যে অপ্রাপ্তবয়স্ক একজন রয়েছে। এরা প্রত্যেকেই অনলাইনে শিশুদের যৌনছবি দেখে এবং অনলাইনে তা ছড়িয়েও দেয়।’ পুলিশ আধিকারিক আরও বলেন, 'সমস্যাটা প্রচণ্ডভাবে বেড়ে গিয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে যে ৫০ হাজার সদস্যের একটি গ্রুপ গোটা ব্যাপারটি নিয়ন্ত্রণ করে এবং শিশু পর্ন ছড়িয়ে দেয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই তল্লাশি অভিযানে আমরা কিছুজনকে আটকও করেছি। তবে এই ঘটনার পর প্রায় ২৫ হাজার সদস্য ওই গ্রুপ ছেড়ে দিয়েছে বলে খবর রয়েছে।’ পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা কেউই অতীতে কোনও অপরাধের সঙ্গে যুক্ত নয়।
কেরল পুলিশ জানায়, কিছু কিছু সোশ্যাল মিডিয়ার গ্রুপ গোটা বিশ্বজুড়ে রয়েছে। যার মধ্যে হয়ত কিছু গ্রুপের সদস্যরা কেরল থেকে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর এটাই মনে হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় এইসব গ্রুপের ওপর সর্বক্ষণ নজরদারি করতে হবে। তার জন্য ইন্টারপোলের সহায়তা দরকার। পরবর্তী পদক্ষেপ হল আক্রান্তদের চিহ্নিত করা। কিভাবে আক্রান্তদের কোনও ধরনের মানসিক সমস্যা তৈরি না করে চিহ্নিত করবে তারজন্য ইন্টারপোল কেরল পুলিশকে প্রশিক্ষণ দিতে রাজি হয়েছে। মনোজ আব্রাহাম বলেন, 'আমরা আক্রান্ত শিশুদের বাঁচাতে চাই। অনেক শিশুই হয়ত এ বিষয়ে জানেই না, হয়ত এখনও অনেক শিশু এভাবেই যৌন হেনস্থার শিকার হচ্ছে। যে কারণে এই ঘটনাগুলি প্রকাশ্যে আসছে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সব শিশুর ছবি ও ভিডিও শেয়ার হয় তাদের বয়স ছয় বা তার বেশি।’ কেরল পুলিশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে বিশেষ এক ইউনিট সিসিএসই (কাউন্টার চাইল্ড সেক্সুয়াল এক্সপ্লয়টেশন)। যারা অনলাইনে শিশুদের যৌনছবি এবং শিশুদের ওপর যৌন হেনস্থা প্রতিরোধে কাজ করে। এই বিশেষ দলটির সঙ্গে ইন্টারপোলেরও যোগাযোগ রয়েছে। অভিযুক্তদের ধরার জন্য কেরল পুলিশ ইন্টারপোলের সফটওয়্যার ব্যবহার করছে। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে পুলিশ সঠিক আইপি অ্যাড্রেসের হদিশ পাবে যেখান থেকে এই পুরো বিষয়টি চালিত হচ্ছে।
গত দু’বছর ধরে কেরল পুলিশ ইন্টারপোলের থেকে রাজ্যে অনলাইনে শিশু পর্নোগ্রাফির বিষয়ে তথ্য পেয়ে চলেছে। ভিডিও এবং ছবির পেছনে মালায়ালাম ক্যালেন্ডার এবং খবরের কাগজ দেখার পরই ইন্টারপোল নিশ্চিত হয় যে পুরো বিষয়টি কেরলেই হচ্ছে।