তৃণমূলের সাংসদ, মুখ্যমন্ত্রীকে কিন্তু দিল্লি আসতে হবে! ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে হুঁশিয়ারি বিজেপি সাংসদের
ভোটের ফলাফল বেরোনোর পর থেকে রাজ্য জুড়ে হিংসা অব্যাহত। বিভিন্ন জেলায় আক্রান্ত হচ্ছে বিজেপি কর্মীরা। ইতিমধ্যে রাজ্যপালের কাছে দেখা করেছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকে ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে ছ' জন বিজেপি কর্ম
ভোটের ফলাফল বেরোনোর পর থেকে রাজ্য জুড়ে হিংসা অব্যাহত। বিভিন্ন জেলায় আক্রান্ত হচ্ছে বিজেপি কর্মীরা। ইতিমধ্যে রাজ্যপালের কাছে দেখা করেছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।
ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকে ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে ছ' জন বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
পরিস্থিতি খারাপ থেকে ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। এই অবস্থায় পালটা তৃণমূলকে চরম হুঁশিয়ারি বিজেপি সাংসদের।
বিজেপি সাংসদ পরভেশ সাহিব সিংহের দাবি, বাংলায় নির্বাচনে জিতেই তৃণমূলের গুন্ডারা আমাদের কর্মীদের খুন করছে। বিজেপি কর্মীদের গাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে, ঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। না থেমেই ক্রজত তৃণমূলকে চরম হুঁশিয়ারি দেন বিজেপির এই সাংসদ।
তাঁর হুঁশিয়ারি, খেয়াল রাখবেন, তৃণমূলের সাংসদ, মুখ্যমন্ত্রী, বিধায়কদের কিন্তু দিল্লি আসতে হবে। আমি আপনাদের সতর্ক করছি। নির্বাচনে হার-জিত হতে পারে কিন্তু খুন নয়। বিজেপি সাংসদ তাঁর ট্যুইটে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যাগ করেছেন।
বিজেপি সাংসদের হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে পালটা তৃণমূলের দাবি, এটাই বিজেপির সংস্কৃতি। বাংলার মানুষ ওদের ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। ২০২৪ এ দেশের মানুষ ওদের কেন্দ্র থেকে ছুঁড়ে ফেলবে। দাবি তৃণমূলের।
তবে রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে শাসকদলের দাবি, খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবাইকে শান্ত থাকার কথা বলেছেন। এমনকি প্রয়োজনে পুলিশকেও জানানোর জন্যে বলেছেন। তাহলে সমস্যা কোথায়? প্রশ্ন শাসকদলের।
ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে উত্তপ্ত বাংলা। যা নিয়ে উবিগ্ন কেন্দ্রও। ইতিমধ্যে রাজ্যপালকে ফোন করে বাংলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বিস্তারিত খোঁজ নিয়েছেন উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী। কেন এমন অবস্থা সে বিষয়ে দীর্ঘক্ষণ কথাবার্তা হয় দুজনের। শুধু তাই নয়, রাজ্যের কাছে বিস্তারিত রিপোর্টও তলব করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কেন এখানে বিরোধীরা আক্রান্ত হচ্ছেন সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নবান্নের কাছে তলব করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
উল্লেখ্য, বিজেপিরম রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, ভোটের ফল প্রকাশের পর তাঁদের ছয় কর্মী খুন হয়েছেন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগে বুধবার দেশজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার ডাক দিয়েছে বিজেপি।
এই পরিস্থিতিতে আজ, মঙ্গলবার, দুদিনের সফরে রাজ্যে আসলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি।
অন্যদিকে, এদিন সকালেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি নেতা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় এবং সম্বিত পাত্র দুজনই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
বিজেপি নেতা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "বাংলার 'নিজের মেয়ে' যখন থেকে নির্বাচিত হলেন তখন থেকে পশ্চিমবঙ্গে মা-বোনদের অবস্থা অসহ্য হয়ে গেছে। পশ্চিমবঙ্গে ফ্যাসিজিমের নগ্ন নাচ দেখতে পাচ্ছি গত কয়েকদিন ধরে। এটা যে সুপরিকল্পিত ও সুনিয়োজিত চেষ্টা সেটা পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে।"
শুধু তাই নয়, রাজ্যে পুলিশ তৃণমূলে চাপে কোনও দায়িত্ব পালন করতে পারছে না বলে মন্তব্য করেন বিজেপি নেতা অর্নিবান গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, 'পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ২ মে বিকেল থেকে পুলিশের গাফিলতি চোখে পড়ছে। পুলিশের ওপর চাপ বাড়ানো হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেও এটা করেছে, এখনও সেটাই করছে।'
মুখ্যসচিবের কাছে আর্জি জানিয়ে বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র বলেন, 'রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বদল হতেই পারে। তাই বলে এই ভাবে অন্য দিকে তাকিয়ে থাকবেন না।' অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় নেতা সম্বিত পাত্র বলেন, 'মমতা জি, আপনারা জয়ের মর্যাদা পেয়েছেন। আপনি নিজে একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। যে মায়েদের আজ ধর্ষণ করা হচ্ছে, যে মেয়েদের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে, তারা কি বাংলার মেয়ে নয়? তাদের প্রতি কি এই জাতীয় আচরণ করা উচিত?'
একই সঙ্গে বিজেপির এই কেন্দ্রীয় নেতার দাবি, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকেও পাথর ছোঁড়া হয়েছিল। রাজ্যে বিজেপির কর্মীরা বছরের পর বছর এ ভাবে আক্রমণের শিকার হয়েও ধৈর্য্য ধরে কাজ করছেন, হাতে অস্ত্র তুলে নেননি বলে উল্লেখ করেন সম্বিত পাত্র।
সম্বিত পাত্রের দাবি, 'বিজেপি আর তৃণমূলের একটাই তফাৎ। তৃণমূলে পিসি-ভাইপোর পরিবারই একটা দল। আর বিজেপিতে গোটা দলটাই একটা পরিবার।'