লাল কেল্লা কাণ্ডের নেপথ্যে একজন পাঞ্জাবি অভিনেতা! ষড়যন্ত্রের পর্দা ফাঁস কৃষক নেতাদের
লাল কেল্লায় যে স্থানে ভারতীয় পতাকা ওড়ার কথা, সেই স্থানেই প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন উড়ল খালসা এবং কৃষক সংগঠনের পতাকা। যা নিয়ে বিতর্কের কোনও শেষ নেই। অনেকেই এই ঘটনাকে মার্কিন মুলুকের 'ক্যাপিটল হিল ঘটনা'-এর সঙ্গে তুলনা করছেন। তবে এই ঘটনার নেপথ্যে কি কৃষকরা ছিলেন? যে কৃষকরা এত ঠান্ডার মধ্যেও বিগত দুই মাস ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে দেশের মন জয় করেন, তাঁরাই কি এই ঘটনা ঘটিয়েছেন? জবাব : না।
দীপ সিধু আন্দোলনকারীদের উস্কানি দিয়েছেন
ভারতীয় কিষাণ সংগঠনের হরিয়ানা ইউনিটের প্রধান গুরনাম সিংহ চাঁদুনি এই পুরো ঘটনার জন্যে দায়ী করেছেন পাঞ্জাবি অভিনেতা দীপ সিধুকে। অভিযোগ, দীপ সিধু আন্দোলনকারীদের মধ্যে হিংসাত্মক মনোভাব জন্ম দিয়ে আন্দোলনকে লাইনচ্যুত করতে চেয়েছেন। দীপের নেতৃত্বেই কৃষকদের একটা অংশ লাল কেল্লা 'দখল' করেন। এবং দীপের উস্কানিতেই নাকি দিল্লি জুড়ে কাল অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করেন আন্দোলনকারীদের একাংশ।
দীপ সিধুর নেতৃত্বে কৃষকদের একাংশ লালকেল্লা যায়
এদিন এই বিষয়ে ভারতীয় কিষাণ সংগঠনের হরিয়ানা ইউনিটের প্রধান গুরনাম সিংহ চাঁদুনি বলেন, 'দীপ সিধুর নেতৃত্বে কৃষকদের একাংশ লাল কেল্লায় যায়। আন্দোলনকারী কৃষকরা কোনওদিনই লাল কেল্লায় যেতে চায়নি।' এদিকে প্রজাতন্ত্র দিবসের এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন স্বারাজ ভারতের নেতা যোগেন্দ্র যাদবও। তিনি বলেন, 'লাল কেল্লার ঘটনার সময় দীপ সিধু লাল কেল্লায় উপস্থিত ছিলেন। আমরা প্রথম থেকেই ওঁর বিরোধিতা করে এসেছি।'
লজ্জায় মাথা নত যোগেন্দ্র যাদবের
এদিন যোগেন্দ্র যাদব বলেন, 'আমি আজকে লজ্জিত। লজ্জায় আমার মাথা নত হয়ে গিয়েছে। লাল কেল্লায় যেই মানুষরা ছিলেন, তাঁরা আসল আন্দোলকারী নন। তাঁরা 'দেশবন্ধু' ছিলেন, যাঁরা প্রথম দিন থেকে এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। কিন্তু যখন খৃঘটনা ঘটে গিয়েছে, আমি সেখান থেকে পালাতে পারি না। এটা আন্দোলনের গায়ে একটা কালো দাগ।'
দীপ সিধু কী করে লালকেল্লা পৌঁছল?
এদিন যোগেন্দ্র যাদব আরও বলেন, 'দীপ সিধু কী করে লাল কেল্লা পর্যন্ত পৌঁছাল, তা নিয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। সে একটা মাইক বাজাতে বাজাতে লাল কেল্লায় পৌঁছল, আর কেউ ওঁকে থামাতে পারল না?' এদিন যোগেন্দ্র যাদব আরও বলেন, 'আমরা এরকম ঘটনার আশঙ্কা করেছিলাম। তাই আগেই এটা নিয়ে পুলিশকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তাও এখনও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। বিজেপির সঙ্গে ওঁর যোগ রয়েছে।'
ইতিমধ্যেই ২২টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে
এদিকে দিল্লিতে কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিল ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় ইতিমধ্যেই ২২টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে৷ আরও এফআইআর দায়ের হতে পারে দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর ৷ তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়নি৷ দিল্লি পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, 'ইস্টার্ন রেঞ্জে 5টি এফআইআর দায়ের হয়েছে৷ দ্বারকায় তিনটি ও শাহদরা জেলায় একটি এফআইআর দায়ের হয়েছে৷'
ব্যাকফুটে পড়ে গেল কৃষক আন্দোলন
লালকেল্লার দখল নেওয়ার পর কার্যত কিছুটা ব্যাকফুটেই পড়ে গেল কৃষক আন্দোলন। মুখ ফিরিয়েছেন সারা ভারত কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লাও। ট্রাক্টর ব়্যালির নামে রাজধানীতে দিনভর যে তাণ্ডব চলল, তাতে হান্নান মোল্লার মন্তব্য, 'এই ধরনের কাজ সমাজবিরোধীদের। এরা কৃষকদের শত্রু। সরকারের দালালি করছেন।'