কংগ্রেস ছাড়ায় জ্যোতিরাদিত্যকে কটাক্ষ, 'গান্ধী-সিন্ধিয়া' বিতর্ক উস্কে কী বললেন প্রশান্ত কিশোর?
১৮ বছর পর কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করে হোলির দিন বিজেপির পথে হাঁটা লাগিয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। আর জ্যোতিরাদিত্যর কংগ্রেস ত্যাগের এই সিদ্ধান্তকে কটাক্ষের সুরে বিঁধলেন নির্বাচন স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোর। প্রশান্তের মতে, জননেতা, সংগঠক বা প্রশাসক হিসেবে জ্যোতিরাদিত্যর অবদান খুবই সামান্য।
সিন্ধিয়াকে প্রশান্তের কটাক্ষ
আজ টুইট করে প্রশান্ত কটাক্ষর সুরে বলেন, 'গান্ধী পদবিতে যাঁদের আপত্তি তাঁরাই সিন্ধিয়ার মধ্যে এক জননেতাকে খুঁজতে চাইছেন। কিন্তু বাস্তব হল সিন্ধিয়া পদবি হলেও জননেতা, সংগঠক ও প্রশাসক হিসেবে জ্যোতিরাদিত্যের অবদান সামান্য।'
২২ বিধায়ক নিয়ে বিজেপির পথে জ্যোতিরাদিত্য
বিজেপির পথে পা যে বাড়িয়ে দিয়েছেন তা স্পষ্ট হয়ে যায় হোলির দিন সকালেই। মঙ্গলবার সকাল সকাল প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে যান প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধ্যা। সিন্ধিয়া যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই মোদীর বাসভবনে ঢোকেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। জল্পনা ছিল আগেই। তবে এই ছবি সামনে আসতেই আর সব সন্দেহ চলে যায়। এর পরপরই কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দেন সিন্ধিয়া ঘনিষ্ঠ ১৯ জন বিধায়ক। পরে আরও দুই জন পদত্যাগ করেন। এদের সকলেরই পরবর্তী গন্তব্য বিজেপি। এরপর হয়ত কর্নাটক মডেলেই এই বিধায়কদের সিন্ধিয়ার সঙ্গে বিজেপিতে অন্তর্ভুক্তি হবে।
মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সরকার পতনের মুখে
ইতিমধ্যে ২২ জন কংগ্রেস বিধায়ক ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কমল নাথ সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যরাও আছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত কমল নাথ সরকারের সঙ্গে ১২০ জন বিধায়কের সমর্থন ছিল। সেখানে বিজেপির সদস্য সংখ্যা ১০৭। সরকার গড়তে দরকার ১১৫-জন বিধায়কের সমর্থন। সেক্ষেত্রে কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করা ২২ জন বিজেপিতে যোগ দিলে সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে কমল নাথের সরকার। পাশাপাশি একধাক্কায় সরকার গড়ার ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে যাবে বিজেপি।
কী কারণে কংগ্রেস ত্যাগ সিন্ধিয়ার?
৪ বার মধ্যপ্রদেশের গুনা আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন সিন্ধিয়া। তবে ২০১৯ সালে হেরে গিয়েছিলেন জ্যোতিরাদিত্যে। লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই মধ্যপ্রদেশে ধীরে ধীরে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব সামনে আসতে থাকে। এই অন্তর্দ্বন্দ্ব সামনে চলে এসে বহুবার কংগ্রেস ও কমলনাথকে অস্বস্তিতে ফেলে। তবে প্রতিবারই টিকে থাকে মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সরকার। তবে শেষ পর্যন্ত কমলনাথ-জ্যোতিরাদিত্য মনমালিন্যর জেরেই কংগ্রেস ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন সিন্ধিয়া, এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
সনিয়াকে কড়া ভাষায় আক্রমণ সিন্ধিয়ার!
এদিকে, সনিয়া গান্ধিকে পাঠানো পদত্যাগপত্রে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া লিখেছেন, 'আমি কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছি। গত ১৮ বছর ধরে দলের অনুগত সৈনিক হিসেবে কাজ করেছি। আমার লক্ষ্য মানুষের স্বার্থে কাজ করা। আগেও করেছি, আগামী দিনেও করব। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে কংগ্রেসে থেকে সেই লক্ষ্যপূরণ সম্ভব না। তাই সময় এসেছে এগিয়ে যাওয়ার।'