প্রশান্ত কিশোরের ৫ দফা দাওয়াইয়েই জারিজুরি শেষ বিজেপির! কেজরিকে জিতিয়ে জয়ী নিজেও
পিকের ৫ দফা দাওয়াই, কেজরিকে ভারতের ‘আত্মা’য় জিতিয়ে বড় জয় পেলেন নিজেও
দিল্লি নির্বাচনে জয়জয়কার হয়েছে আম আদমি পার্টির। মাত্র আট মাস আগে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে যে দিল্লিতে মুখ থুবড়ে পড়েছিল শাসক দল আম আদমি পার্টি, তৃতীয় স্থান অধিকার করতে হয়েছিল বেশিরভাগ আসনে, সেখানে কী এমন জাদুকাঠির ছোঁয়ায় প্রাণ ফিরে পেলেন আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল!
পিকের পেপ-টকে কেজরি চূড়ায়
মাত্র কয়েকটি ‘পেক-টক'ই ফের দিল্লির নির্বাচনে স্ব-মহিমায় ফিরিয়ে আনল আম আদমি পার্টিকে। আবারও সেই ২০২১৫-র পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে বিপুল জয় পেলেন কেজরিওয়াল। প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেই তিনি ম্যাজিক ফিগার ছাড়িয়ে নিজের দলকে ফের চূ়ড়ায় তুলে ধরলেন।
কেজরি একা নন, জিতলেন পিকেও
এই ভোটে শুধু অরবিন্দ কেজরিওয়াল জিতলেন না, জিতলেন প্রশান্ত কিশোরও। ২০১২ সালে তাঁর জয়যাত্রা শুরু হয়েছিল, ২০২০-তেও তিনি ঈর্ষণীয় ট্র্যাক রেকর্ড গড়ে কেজরিকে জয়ের দিশা দেখিয়ে দিলেন। ফল নিশ্চিত হতেই প্রশান্ত কিশোরের টুইট বুঝিয়ে দেয় তিনি কতটা উদগ্রীব ছিলেন।
প্রথম পরামর্শ
তিনি টুইট করে ভারতের ‘আত্মা'কে রক্ষা করার জন্য দিল্লিবাসীকে ধন্যবাদ। কিন্তু দিল্লিবাসীকে এই পথে নিয়ে আসতে তিনি কী করেছেন, কী পরামর্শ দিয়েছেন কেজরিকে? কেজরিকে দেওয়া পিকের প্রথম পরামর্শ ছিল, নিজেকে উন্নয়নমুখী করে তুলতে হবে। প্রচার হবে শুধু উন্নয়নকে হাতিয়ার করে।
দ্বিতীয় পরামর্শ
দ্বিতীয়ত তাঁর পরামর্শ ছিল, বিজেপি যত বিদ্বেষ ছড়া ছড়াক, কোনও কান দিলে চলবে না। ওদের সমস্ত বিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িক কচকচানি, ধর্মীয় মেরুকরণের একটাই জবাব কোনও জবাব না দেওয়া। অর্থাৎ দ্বন্দ্ব নয়, ধৈর্য্য ধরতে হবে। কেজরি ধৈর্য্য ধরতেই বিজেপির জারিজুরি শেষ।
তৃতীয় পরামর্শ
তৃতীয়ত, পিকের পরামর্শ ছিল মোদী-শাহ ওঁদের হাইভোল্টেজ প্রচারক। ওঁদের কোনও আক্রমণ নয়। মোদীকে পাল্টা আক্রমণ করে লোকসভায় ভুল করেছিল রাহুল। সেই ভুল করলে চলবে না। ওঁদের হাতে কোনও ইস্যু নেই, কিন্তু কেজরির কাছে উন্নয়নের হাতিয়ারি ছিল। সেই হাতিয়ারেই জব্দ বিজেপি।
চতুর্থ পরামর্শ
পিকের পরামর্শ মেনে আরও উন্নয়নের বার্তা দিয়েছিলেন কেজরিওয়াল। মহিলা নিরাপত্তায় জোর দিয়ে সিসিটিভি বসানো, বিনামূল্যে বাস পরিষেবা, আরও বিদ্যুৎ ফ্রিতে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন কেজরি। তাতেই কেজরিওয়ালের পালে হাওয়া বয়ে গেল।
শেষ পরামর্শে বাজিমাত
আর একেবারে শেষে পিকে পরামর্শ দিলেন হনুমান চালিশা পাঠের। বিজেপিকে আরও ধর্মী মেরুকরণের দিকে টেলে দিলেন পিকে। বিজেপি কেজরির হনুমান চালিশা নিয়ে পড়লেন। আপ সুপ্রিমোর প্রচার হতে শুরু করল ফলাও করে। এইসব গুগলিতেই বিজেপিকে বেঁধে ফেললেন পিকে। কেজরি করলেন কিস্তিমাত।