সন্ত্রাসবাদ দমনে জোর, শ্রীলঙ্কাকে ৪৫ কোটি ডলার সাহায্য প্রদানের ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী মোদীর
নির্বাচনে জয়ের পর বৃহস্পতিবার প্রথমবারের জন্য ভারত সফরে আসেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষে। তিন দিনের সফরের দ্বিতীয় দিনে, অর্থাৎ শুক্রবার দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সন্ত্রাস দমন সহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শ্রীলঙ্কাকে ৪৫ কোটি ডলার আর্থিক সহায়তা প্রদানের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। প্রধানমন্ত্রী জানান, এর মধ্যে ৫ কোটি ডলার দেওয়া হবে সন্ত্রাসবাদ দমনের খাতে।
বৈঠকে আলোচনা হয় তামিলদের দাবি প্রসঙ্গ
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আরও জানান শ্রীলঙ্কার নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বেশ কয়েকটি বিষয়ে। জঙ্গি দমন, উন্নয়ন ছাড়াও শ্রীলঙ্কার তামিল সম্প্রদায়ের দাবি পূরণ, নিরাপত্তা বৃদ্ধি, বাণিজ্য চুক্তি, মত্স্যজীবীদের ঠিকানা সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় দুই রাষ্ট্র্রধানের মধ্যে।
শ্রীলঙ্কায় আটক ভারতীয় মৎসজীবীদের ছেড়ে দেওয়া হবে
সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, তিনি রাষ্ট্রপতি রাজাপক্ষেকে নিশ্চিত করেছেন, তার দেশকে এগিয়ে যেতে সম্পূর্ণ ভাবে সহায্য করবে ভারত। এদিকে বৈঠকের পর শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি জানিয়ে দেন যে তাদের দেশে আটক থাকা ভারতীয় মৎসজীবী ও তাদের নৌকা ছেড়ে দেওয়া হবে। এই বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ নিতে চলেছে তাঁর সরকার। প্রসঙ্গত, ১০ দিন আগেই শ্রীলঙ্কার প্রশাসনিক প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তিনি।
ফলপ্রসূ হয় আলোচনা
গত এপ্রিলে কলম্বোয় একের পর এক বোমার আঘাতে ২৫০ জন মানুষ প্রাণ হারান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আমি রাষ্ট্রপতি রাজাপক্ষের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছি কীভাবে যৌথভাবে সন্ত্রাসের দমন করা যায়।" এদিকে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি বলেন, "প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। ভারতের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আমি অত্যন্ত উঁচু স্থান দেই।"
চিন ঘনিষ্ঠ গোতাবায়ার সঙ্গে কেমন হবে দিল্লির সম্পর্ক?
রাজাপক্ষে ও তাঁর পরিবারকে চিনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে ভাবা হয়। শ্রীলঙ্কায় তামিলদের গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযানে চিনের নিরঙ্কুশ সমর্থন পেয়েছিল তৎকালীন মহিন্দা রাজাপক্ষে সরকার। গোতাবায়া সেই সময় ছিল দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় বিভিন্ন মহল থেকে। পাশাপাশি তাঁর নির্বাচনের প্রচারে চিনের প্রভাব চিন্তার ভাঁজ ফেলেছিল দিল্লির কপালে। তবে গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর উপমহাদেশীয় রাজনীতি কোন দিকে গড়ায় এখন সেটাই দেখার।