পদ্মশ্রী মনজম্মার দৃপ্ত লড়াইয়ের অনুপ্রেরণাদায়ক কাহিনি একনজরে
Array
তাঁর জীবনের ঘটনা দক্ষিণী ছবি 'সুপার ডিলাক্স' -এ বিজয় সেতুপতির অভিনীত চরিত্রটি মনে করিয়ে দিতে পারে অনেককেই। কথা হচ্ছে, কর্ণাটকের পদ্মশ্রী মনজম্মা জোগথিকে নিয়ে। রূপান্তরকামী এই জোগম্মা যখন নিজের পরিবারকে নিজের লিঙ্গ পরিবর্তনের কথা জানিয়েছিলেন, তখন তাঁকে তাঁর পরিবার বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। এই খবর প্রকাশিত হয়েছে ইন্ডিয়া টুডের একটি এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে। সাক্ষাৎকারে মনজম্মা জানিয়েছেন যে তিনি যখন পরিবারের তরফে এমন একটি বার্তা পেয়েছেন। তখন তিনি আত্মহননের পথের কথাও ভাবেন।
সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, মনজম্মা একাধিকবার যৌন নির্যাতনের শিকার হন এবং একদিন বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তিনি যখন চিকিৎসার পর বেঁচে গিয়েছিলেন কিন্তু তার ২০ ভাইবোন সহ তাঁর পরিবারের কেউই হাসপাতালে আসেননি যেখানে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। কোনও মানুষের সিদ্ধান্তকে মান্যতা না দেওয়ার প্রবণতা দেখে হতবাক হয়েছিলেন মনজম্মা। সেই দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আজ মনজম্মা অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা। স্রোতের বিপরীতে লড়ে নিজের অধিকার জিতে নেওয়া মনজম্মা গতকালই রাষ্ট্রপতিভবনে রাষ্ট্রপতির হাত থেকে গ্রহণ করেছেন তাঁর পদ্ম সম্মান। পদ্মশ্রীপ্রাপক এই মহিলা কর্ণাটক জনপদ অ্যাকাডেমির একজন সদস্য হলেন মনজম্মা। এই অ্যাকাডেমির প্রধান তিনি। তিনিই প্রথম এই অ্যাকাডেমির রূপান্তরকামী সদস্য হিসাবে পরিগণিত হচ্ছেন।
রাষ্ট্রপতিভবনে মনজম্মা পদ্মসম্মান গ্রহণ করতে গিয়ে, এক অদ্ভুত ধরনের নজর কাড়া পদক্ষেপ নেন। যা সাড়া ফেলে দেয় ওই পাওয়ারপ্যাক অনুষ্ঠানে। এই পারফরম্যান্স রাষ্ট্রপতিকে সম্মান জানাতে করা হয়েছে বলে মনজম্মা জানান। যাতে রাষ্ট্রপতির কোনও খারাপ নজর না লাগে তার জন্য এমন ধরনের পারফরম্যান্স করেন মনজম্মা। এদিকে, নিজের কাজের জায়গা থেকে তিনি বারবার মানুষকে রুপান্তরাকামীদর প্রতি সম্মান দেখানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করেন মনজম্মা। যাতে এমন লিঙ্গ পরিবর্তন করতে চাওয়া মানুষদের তাঁদের পরিবার সম্মান জানায়, তার জন্য প্রচেষ্টার অবকাশ রাখেননি এই লড়াকু মহিলা। দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা মনজম্মা এককালে ভিক্ষাবৃত্তি করে দিন কাটিয়েছেন। সেই জায়গা থেকে এখন তিনি নিজের লড়াকে সম্মান জানিয়েছেন। নিজের অন্দরে যে সুপ্ত কন্যাটি রয়ে গিয়েছে, সেই হদিশ তিনি ১৫ বছর বয়স থেকে বুঝতে পারেন বলে জানিয়েছেন মনজম্মা। একথা জানান দিতে তিনি অকপট। মানজাম্মা রাস্তায় ভিক্ষা করে তার একাকী যাত্রা শুরু করেন। তিনিও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন এবং আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু জীবনে একটা সময় এক পিতা ও পুত্রের সাথে দেখা করেছিলেন যিনি তাকে নাচ শিখিয়েছিলেন, যা তাঁর জীবনে একটি নতুন সূচনা করেছিল।