সরকারি প্রকল্পে গরীবদের মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ ডাল বিতরণ হয়েছে
সরকারি প্রকল্পের অন্তর্গত গরীবদের মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ বিনামূল্যে ডাল বিতরণ করা হয়েছে
করোনা ভাইরাস সংক্রমণে দেশে মহামারির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দেশে লকডাউন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে সকলেই তাঁদের প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারবে। প্রায় এক মাস আগে কোভিড–১৯ ত্রাণ প্যাকেজের অংশ হিসাবে ঘোষিত, জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের (এনএফএসএ) সুবিধাভোগীদের কাছে পরিবার প্রতি ১ কেজি বিনামূল্যে ডাল পৌঁছে দেওয়ার কথা থাকলেও এখনও অর্থনৈতিকভাবে দরিদ্র স্তরের অনেক পরিবার সেই ডাল পায়নি।
বরাদ্দ ডালের পরিমাণ ১.৯৫ লক্ষ মেট্রিক টন
ক্রেতা সুরক্ষা বিভাগ, খাদ্য ও গণ সরবরাহ , যারা এই লকডাউনের সময় প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের ওপর নজর রাখছে, তাদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা (পিএমজিকেএওয়াই)-এর অন্তর্গত মাসে ১.৯৫ লক্ষ মেট্রিক টন (এলএমটি) ডাল বরাদ্দ করা হয়েছে, যার মধ্যে বুধবার পর্যন্ত ১৯,৪৯৬ টন ডাল বিতরণ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল কো-অপারেটিভ মার্কেটিং ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড (নাফেড), যা এই সব জিনিস মজুত রাখার রক্ষণাবেক্ষণ করে তাদেরকে ডাল সরবরাহ নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ডাল বন্টন নিয়ে দুই মন্ত্রকের ভিন্ন সুর
এক বিবৃতিতে বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ যোজনা প্যাকেজে অগ্রগতি হয়েছে। ১,০৯,২২৭ মেট্রিক টন ডাল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে।' যদিও খাদ্য মন্ত্রকের তথ্য অন্য কথাই বলছে। প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনার অন্তর্গত এনএফএসএ-এর অন্তর্ভুক্ত ১৯.৫৫ কোটি পরিবারের ডাল পাওয়ার কথা ১,৯৫,৫৩১ মেট্রিক টন, কিন্তু রাজ্যগুলির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১,২২,৩১২ মেট্রিক টন। এছাড়াও গন্তব্য রাজ্যগুলিতে পাঠানো হয়েছে ৪৪,৯৩২ মেট্রিক টন ডাল, কিন্তু দেখা গিয়েছে ওইসব রাজ্যগুলি পেয়েছে ৩৪,৭৬৮ মেট্রিক টন ডাল ও সুবিধাভোগীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ১৯,৪৯৬ মেট্রিক টন ডাল।
নাফেডের গাফিলতিতে বিতরণে দেরি
খাদ্য মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে যে লকডাউন ঘোষণার একদিন পরই ২৬ মার্চ পিএমজিকেএওয়াই-এর ঘোষণা করা সত্ত্বেও নাফেড নিজেদের উদাসীনতার কারণে ডাল বিতরণে করতে দেরি করে। নাফেডের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ‘৩৬টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১৯.৫৫ কোটি পরিবারের মধ্যে গত তিনমাস ধরে আমরা বিনামূল্যে ডাল বিতরণ করেছি। বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানের মতো বড় রাজ্যগুলিতে যোগ্য সুবিধাভোগীর সংখ্যা বেশি, তাই চাহিদাও বেশি, সে কারণে আমরা কিছুটা সময় নিচ্ছি।' তিনি যদিও এটা জানিয়েছেন যে নাফেড এইসব রাজ্যগুলিতে ডাল পাঠিয়ে দিয়েছে।
কেন্দ্রশাসিত ও ছোট রাজ্যগুলিতে ডাল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে
সরকারিভাবে জানা গিয়েছে, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, পুদুচেরি ও চণ্ডীগড়ের মতো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ও মণিপুর, নাগাল্যান্ড ও ত্রুপুরার মতো ছোট রাজ্যগুলিতে ডাল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, ‘ডালের বাফার মজুতগুলি সবসময় না ভাঙা (পুরো) অবস্থায় থাকে, সেগুলি ভাঙতে কিছুটা সময় লাগে।'
করোনার জেরে সোনার ১০ গ্রামের দাম ১ লাখের কাছাকাছি যেতে পারে!বিশ্লেষণ ঘিরে উদ্বেগ