বেজিংয়ের নজরে লাদাখ সীমান্তের দু'টি সেক্টর, বিবাদ মেটাতে ফের বৈঠকে ভারত-চিন
লাদাখের দু'টি সেক্টরে এখনও সেনা প্রত্যাহার করেনি চিন। প্যানগংয়ের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হওয়ার পর মাস পার হয়ে গেলেও বাকি দুই সেক্টরে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে উচ্চবাচ্য নেই চিনা সেনার। এই আবহে এবার ১১তম কমান্ডর স্তরের বৈঠকে বসতে চলেছে ভারত ও চিনা সেনা। জানা গিয়েছে ৯ এপ্রিল এই বৈঠক হতে পারে ভারতীয় সীমানায়।
গোগরা, হট স্প্রিং নিয়ে আলোচনা হবে
লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার গোগরা, হট স্প্রিং এবং ডেপসাঙে এখনও সেনা প্রত্যাহার করা হয়নি চিনের তরফে। এই এলাকাগুলি নিয়ে এখনও যে বিবাদ রয়েছে, তা নিয়েই আলোচনা হতে চলেছে বৈঠকে। এছাড়া প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ডেপসাং বালজে টহলদারির ইস্যুটিও আলোচনায় উত্থাপন করতে পারে ভারতীয় সেনা। এই এলাকাটি নিয়ে ভারত-চিন বিবাদ ২০১৩ সাল থেকে।
ফেব্রুয়ারিতেও আলোচনায় বসেছিল ভারত-চিন
এর আগে দশম দফার কমান্ডর স্তরের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ২১ ফেব্রুয়ারি। সেই বৈঠকটি প্রায় ১৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলেছিল। সেই বৈঠকেও গোগরা, হট স্প্রিং এবং ডেপসাং নিয়ে আলোচনা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছিল। তবে চূড়ান্ত সমাধান সূত্র বের হয়ে আসেনি সেই বৈঠকে। তবে যেখানে আলোচনা শেষ হয়েছিল, ঠিক সেখান থেকেই ফের আলোচনা শুরু করতে চাইছে ভারত-চিন।
একটি সেক্টরে সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন
উল্লেখ্য গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ভারত ও চিন প্যানগংয়ের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। সেই সময় ভারতের তরফে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পিজিকে মেনন আলোচনা চালিয়েছিলেন চিনা সেনার সঙ্গে। চিনের তরফে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছিলেন মেজর জেনারেল জেন লিউ লিন। তিনি দক্ষিণ জিনজিয়াং প্রদেশে চিনা সেনার সর্বোচ্চ দায়িত্বে রয়েছেন।
সংসদে শান্তি ফেরার বার্তা দিয়েছিলেন রাজনাথ সিং
এর আগে সংসদে দাঁড়িয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি জানিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি জানিয়েছিলেন যে গোগরা, হট স্প্রিং এবং ডেপসাং নিয়ে চলমান বিবাদ নিয়ে আলোচনায় বসতে চলেছে ভারত এবং চিন। উল্লেখ্য, গত বছরের ১৫ জুন লাদাখ সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। তারপর থেকেই সীমান্তে পারদ চড়তে শুরু হয়। সীমান্তে সেনা বাড়াতে শুরু করে দুই দেশ। বিভিন্ন সামরিক নির্মাণ করতে শুরু করে চিন। তবে পরবর্তীতে বিভিন্ন স্তরের আলোচনার মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত লাদাখে শান্তি ফেরানোর পথে হেঁটেছে ভারত এবং চিন।
২০২০ সালের ১৫ জুন
উল্লেখ্য, গতবছর ৬ জুন প্রথমবার ভারত ও চিনা সেনার মধ্যে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সীমান্ত সমস্যা ও স্পর্শকাতর অঞ্চলগুলি নিয়ে দু'পক্ষের মধ্যে বৈঠক হয়। ভারতের তরফে জানানো হয়, চিনের সেনা ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে। এরপর ১৫ জুন দুই দেশের সেনার মুখোমুখি সংঘর্ষে শহিদ হন ২০ জন ভারতীয় সেনা। তবে প্রথম দিকে চিনের তরফে অবশ্য তাদের কোনও সেনার মৃত্যুর খবর স্বীকার করা হয়নি। কিন্তু পরবর্তীতে প্রতিবেশী দেশ এই বিষয়ে কিছুটা খোলসা করে। চিনের পক্ষ থেকে মৃত চার সেনা আধিকারিক ও সেনাকর্মীর নাম প্রকাশ করা হয়। যদিও বিভিন্ন সূত্র থেকে দাবি করা হয় চিনের অন্তত ৪০ জন সেনা এই সংঘর্ষে হতাহত হয়েছেন।