তিন বছর পর প্রকাশিত কেন্দ্রীয় রিপোর্ট জানাচ্ছে প্রতিদিন গড়ে ৩১ জন কৃষক আত্মহত্যা করেন দেশে
দীর্ঘ তিন বছর পরে শেষ পর্যন্ত দেশের কৃষক আত্মহত্যার পরিসংখ্যান প্রকাশ করল কেন্দ্রীয় সরকার।
দীর্ঘ তিন বছর পরে শেষ পর্যন্ত দেশের কৃষক আত্মহত্যার পরিসংখ্যান প্রকাশ করল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অন্তর্গত ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর প্রকাশিত রিপোর্টের তথ্যে জানা জাচ্ছে যে ২০১৬ সালে ভারতে মোট ১১,৩৭৯ কৃষক আত্মহত্যা করেন। অর্থাৎ গড়ে প্রতি মাসে ৯৪৮ জন কৃষক আত্মহত্যা করেন। আর দিনে গড়ে ৩১ জন কৃষক নিজের প্রাণ দিয়েছেন। এর আগে শেষবার কৃষক আত্মহত্যার তথ্য প্রকাশিত হয় ২০১৫ সালে।
শীর্ষে মহারাষ্ট্র, দ্বিতীয় স্থানে কর্নাটক
রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী কৃষক আত্মহত্যার নিরিখে দেশের মধ্যে শীর্ষে মহারাষ্ট্র। দ্বিতীয় স্থানে আছে কর্নাটক। এর আগে গতবছর বর্ষাকালীন অধিবেশনে সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল যে ২০১৬ সালে ১১,৩৭০ জন কৃষক আত্মহত্যা করেন। তবে তারা জানিয়েছিল এনসিআরবি রিপোর্ট তখনও প্রকাশিত না-হওয়ায়, এই তথ্য চূড়ান্ত নয়।
দুই দশকে ৩ লক্ষ কৃষক আত্মহত্যা করেন
১৯৯৫ থেকে এই রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে। সেই সময় থেকে ২০১৬ পর্যন্ত, গত দুই দশকে ৩ লক্ষ ৩৩ হাজারের বেশি কৃষক আত্মঘাতী হয়েছেন। অবশ্য সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে কৃষক আত্মহত্যার কোনও কারণ উল্লেখ করা নেই। তবে ২০১৬ সালে কৃষক মৃত্যু ২০১৪ ও ২০১৫ সালের নিরিখে কম বলে জানা গিয়েছে। ২০১৪-তে ১২,৩৬০ জন এবং ২০১৫-তে ১২,৬০২ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছিলেন।
মহিলাদের কৃষক হিসাবে গণ্য করা হয় না
২০১৬ সালে আত্মঘাতী কৃষকদের ৮.৬ শতাংশ মহিলা। তবে বিশেষজ্ঞদের মত, এই সংখ্যা আরও বেশি। তাদের এই আশঙ্কার কারণ, কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত মহিলাদের কৃষক হিসাবে ধরা হয় না। ২০১৬ সালে সরকারি হিসাব অনুযায়ী মোট ৩৬৬১ মহিলা কৃষক নিজের প্রাণ দিয়েছে। ২০১৬ সালে শুধুমাত্র কর্নাটকে এই সংখ্যাটি ২০৭৯।
২০১৬ সালে কোনও রাজ্যে কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেনি
এদিকে গত কয়েক বছরের নিরিখে উল্লেখযোগ্য ভাবে কৃষক আত্মহত্যার সংখ্যা কমেছে তেলঙ্গানায়। পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যাচ্ছে ২০১৬ সালে এই দুই রাজ্যে কোনও কৃষক আত্মহত্যা করেননি। এদিকে মহারাষ্ট্রে ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ১৫ হাজার ৩৫৬ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন।
যেই সব কারণে কৃষকরা বেছে নেন মৃত্যুর পথ
বিশেষজ্ঞদের মতে কৃষক আত্মহত্যার কারণগুলির অন্যতম, সময়মতো কৃষিঋণ শোধ দিতে না পারা, ফসলের ফলন আশানুরূপ না হওয়া, আবহাওয়ার কারণে ফসলের ক্ষতি হওয়া, সেচের জন্য প্রয়োজনীয় জলের অভাব এবং খরাজনিত পরিস্থিতি। প্রসঙ্গত, ভারতের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ মানুষ কৃষিজীবী।