রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে অমীমাংসিত অবস্থায় পড়ে ৪,০০০-র বেশি মামলা, উদ্বেগ প্রকাশ সুপ্রিম কোর্টের
দেশজুড়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের বিরুদ্ধে ঝুলছে ৪ হাজারের বেশি মামলা! ‘ভয়াবহ’ বলল সুপ্রিম কোর্টের
'রক্ষকই ভক্ষক' - এই প্রবাদকে পুনরায় সত্য প্রমাণ করল শীর্ষ আদালতের সাম্প্রতিক তথ্যে। ২৪টি উচ্চ আদালতের তথ্যানুযায়ী,দেশের আইন প্রণেতাদের বিরুদ্ধেই ঝুলে আছে প্রায় ৪,৫০০-টিরও বেশি ফৌজদারি মামলা। অমীমাংসিত মামলাগুলির সম্পর্কে সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ে জমা পড়া একটি পিটিশনের সম্পর্কে বলতে গিয়ে এদিন শীর্ষ আদালত জানায়, রাজনৈতিক-সামাজিক ও ব্যক্তিগত প্রভাবের কারণেই রাজনৈতিক নেতৃত্বদের বিরুদ্ধে এই বড় অঙ্কের মামলাগুলি আজও আদালতে ঝুলছে।
১৭৪টি মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়ার সম্ভাবনা
সুপ্রিম কোর্টের তিন প্রধান বিচারপতি এনভি রামান, সূর্যকান্ত ও হৃষিকেষ রায়ের বক্তব্য অনুযায়ী, "বর্তমান ও প্রাক্তন আইনরক্ষকদের বিরুদ্ধে সর্বমোট ৪,৪৪২টি অমীমাংসিত মামলা রয়েছে, যার মধ্যে ১৭৪টি মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।" পাশাপাশি পুরনো তথ্য যাচাই করে তাঁদের বক্তব্য, "প্রায় ৩৫২টি মামলায় উচ্চ ও সর্বোচ্চ আদালতের তরফে স্থগিতাদেশ জারি রয়েছে।"
বাংলায় জমে আছে ৪০ বছর আগের মামলা
সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ ও পাঞ্জাবে এখনও অমীমাংসিত অবস্থায় ঝুলে রয়েছে ১৯৮১ ও ১৯৮৩ সালের মামলা। উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে সবথেকে পুরনো মামলা ১৯৯১ সালের। ফলত সাধারণ মানুষ ও আইনরক্ষকদের যে একই ধাঁচে বিচারধারা চলে না, তা সোজাভাবে বুঝিয়ে দিলেন স্বয়ং সর্বোচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিকে সুপ্রিম কোর্টে এই পিটিশনটি দাখিল করেছেন আইনজীবী তথা বিজেপি নেতা অশ্বিনী কুমার উপাধ্যায়। বর্তমানে কালো তালিকাভুক্ত নেতাদের ভোটাভুটিতে লড়ার ক্ষমতা প্রায় ৬ বছরের জন্য রদ করা হয়, কিন্তু অশ্বিনীবাবুর মতে এমন রাজনীতিকদের সারাজীবনের জন্য ভোটে দাঁড়ানোর ক্ষমতা হরণ করা উচিত।
২৪টি উচ্চ আদালতের রিপোর্ট খুঁটিয়ে দেখছে সুপ্রিম কোর্ট
সূত্রের খবর অনুসারে, পিটিশন দাখিলের পরেই বর্তমান/প্রাক্তন সাংসদ ও বিধায়কদের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলার তালিকা ফের খুঁড়ে বের করার নির্দেশ যায় ২৪টি উচ্চ আদালতের কাছে। টাকা তছরূপ, জালিয়াতির এবং করফাঁকির অমীমাংসিত মামলাগুলির সম্পর্কেও সুপ্রিম কোর্ট দ্রুত তথ্য সরবরাহের নির্দেশ দেয় ২৪টি হাইকোর্টকে। সূত্রের খবর, হাইকোর্ট গুলির থেকে এই তথ্য সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট বিজয় হানসারিয়া।
হানসারিয়ার রিপোর্টে আইনব্যবস্থার ফাঁক স্পষ্ট
উচ্চ আদালতগুলি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অ্যাডভোকেট বিজয় হানসারিয়া একটি রিপোর্ট তৈরি করেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রত্যেক জেলায় এই ধরনের অভিযুক্ত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের জন্য বিশেষ আদালত, বিচারপতি এবং সাক্ষ্যপ্রমাণের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। তারপরেই শুধুমাত্র রিপোর্ট দেখে কম সময়ে সর্বোচ্চ আদালত প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। বর্তমানে ১৬ই সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
লাদাখ নিয়ে মস্কোর বৈঠক শেষ হতেই দিল্লিতে সেনা প্রধান, অজিত ডোভালদের নিয়ে মিটিং-এ রাজনাথ