অমিত শাহের প্রস্তাবিত সারা দেশব্যাপী এনআরসি চালুর প্রস্তাব কেন সমালোচিত হচ্ছে জেনে নিন
অমিত শাহের প্রস্তাবিত সাড়া দেশব্যাপী এনআরসি চালুর প্রস্তাব কেন সমালোচিত হচ্ছে জেনে নিন
গত
৩১শে
আগস্ট
অসমে
চূড়ান্ত
এনআরসি
তালিকা
প্রকাশিত
হয়।
জাতীয়
নাগরিক
তালিকা
থেকে
বাদ
পড়েছেন
প্রায়
১৯,০৬,৬৫৭
মানুষ।
তারপরই
বিভিন্ন
রাজ্যে
এনআরসি
ইস্যুতে
বিজেপির
বিরুদ্ধে
আওয়াজ
তুলতে
দেখা
যায়
বিরোধীদের।
এরপর
গত
১৯শে
নভেম্বর
সংসদে
দেশব্যাপী
এনআরসি
চালু
করার
প্রস্তাব
দেন
স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রী
অমিত
শাহ।
এই
ইস্যুতে
জ্বলতে
থাকা
আগুনে
যেন
এরপরই
ঘৃতাহুতি
দেন
স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রী
নিজেই।
উত্তাল
হয়
রাজ্য
রাজনীতি।
অসম
সহ
একাধিক
রাজ্যে
রাস্তায়
নামে
সাধারণ
মানুষ।
অমিত শাহের ঘোষণার পরই সাংবাদিক বৈঠকে অসমের অর্থমন্ত্রী
সংসদে অমিত শাহের ঘোষণার পরই পরেই তড়িঘড়ি একটি সাংবাদিক সম্মেলন ডাকেন অসমের অর্থমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা। অসম সরকার সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশিত এনআরসি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ওই দিন তিনি জানান। এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "এই তালিকায় অনেকেরই নাম বাদ যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু যায়নি। আবার অনেকের নাম থাকার কথা ছিল কিন্তু নেই।" চূড়ান্ত এনআরসি তালিকার ফলাফলে কেউই সন্তুষ্ট নয় বলে জানান তিনি। খুব শীঘ্রই নতুন একটি এনআরসি তালিকা প্রকাশিত হবে বলেও জানান তিনি।
অনুপ্রবেশ সম্পর্কে অসমের মানুষের প্রচলিত ধারণা
অন্যদিকে এই রাজ্যের মানুষের মধ্যে একটা প্রচলিত ধারণা রয়েছে যে বর্তমানে অসমে প্রায় ৪০ লক্ষ থেকে ১ কোটি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী রয়েছে। যার মধ্যে বেশিরভাগই মুসলিম। দীর্ঘদিন থেকে তারা অসমের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিসরকে ধ্বংস করছেন। পাশাপাশি অসমের আদি বাসিন্দাদের সংস্কৃতির কাছে এই অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা হুমকির স্বরূপ বলে মনে করেন অনেকে। কিন্তু চূড়ান্ত এনআরসি তালিকা প্রকাশের পর দেখা যায় তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন অসমের অসংখ্য আদি বাসিন্দা। এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তারা।
এনআরসি তালিকা বাদ যাওয়া নাগরিকদের মধ্যে অধিকাংশই হিন্দু
অসমর্থিত সূত্রে খবর, এনআরসি তালিকা থেকে বাদ যাওয়া ১৯ লক্ষ নাগরিকের প্রায় ৫০ শতাংশই হিন্দু। তাই গেরুয়া শিবিরের ভোট ব্যাংকে ভাঙন এড়াতেই এবার তড়িঘড়ি নতুন সিদ্ধান্ত অমিত শাহের। এই কারণেই অমিত শাহ এবং হেমন্ত শর্মা উভয়ই জোরের সঙ্গে বলেন দ্রুত দেশব্যাপী নতুন করে এনআরসি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হবে। যার মধ্যে থাকছে অসমও।
যদিও নতুন করে কীভাবে এনআরসি তালিকা তৈরি হবে সেই বিষয়ে কোনও স্বচ্ছ ধারণা না পাওয়া গেলেও এটা পরিষ্কার যে এই ক্ষেত্রে আর অসমকে আর মডেল রাজ্য হিসাবে দেখাবে না কেন্দ্র সরকার।
একাধিক অসঙ্গতি এনআরসি তালিকা প্রস্তুতিতে
১৯৫১ সালে অসমে শেষ এনআরসি প্রকাশিত হয়েছিল। সেই বছরের আদমশুমারিতে লিপিবদ্ধ থাকা নাম অনুযায়ীই তৈরি হয়েছিল ওই তালিকা। কিন্তু চলতি বছরের সদ্য প্রকাশিত নতুন এনআরসি তালিকায় অনেক ক্ষেত্রেই বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়ে। অভিযোগ ওঠে একাধিক বেনিয়মের। অনেকেই এটাকে অসাংবিধানিক বলে আখ্যায়িত করেন। সমালোচকদের মতে প্রধানত মুসলিমদের কোণঠাসা করতেই বিজেপি বর্তমানে এই ‘চক্রান্ত' করছে।
চলতি বছরেই পাস ‘বিতর্কিত’ নাগরিকত্ব সংশোধন বিল
এদিকে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও রাজ্যসভায় জোরদার সওয়াল করতে দেখা যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, খ্রিস্টান এবং পার্সি শরণার্থীরা,যারা পাকিস্তান, বাংলাদেশ বা আফগানিস্তানে ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্যের শিকার তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণের সুবিধার্থে এই বিলের বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
অন্যদিকে এই বছরের জানুয়ারি মাসের ৮ তারিখ লোকসভায় পাস হয় নাগরিকত্ব সংশোধন বিল ২০১৬। ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ এর আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে মুসলিম ছাড়া অন্যান্য ধর্মের যে সমস্ত মানুষেরা ভারতে এসেছিলেন তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানের উদ্দেশ্যেই মূলত এই বিলটি পাস করানো হয় বলে সরকারি ভাবে জানানো হয়।