‘ভাং ছাড়া হোলি যেন বেরঙীন!’ কিন্তু ভাং কীভাবে হোলির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠল জেনে নিন
‘ভাং ছাড়া হোলি যেন বেরঙীন!’ কিন্তু ভাং কীভাবে হোলির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠল জেনে নিন
ভাং ও হোলির এই দুরন্ত সমাহার বছরের পর বছর তাতের রেকর্ড অক্ষুন্ন রেখেছেন। খেলব হোলি ভাং খাব না তা আবার হয় নাকি। কিন্তু আপনি কী জানেন ভাং কীভাবে হোলির এই রকম অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠল। আজ সেই সেই বিষয়েই না হোক দু এক কথা হোক।
দেবতাদের সমুদ্র মন্থন পর্ব থেকে ভাংয়ের উত্পত্তি
যদিও ভাংয়ের সম্পর্ক ভারতীয় সংস্কৃতিতে হোলির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এই সাইকেডেলিক ড্রাগের প্রথম উল্লেখটি পাওয়া যায় পুরাণে দেবতাদের "সমুদ্র মন্থন" পর্বে। কথিত আছে সেই সময় অসুরদের হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে দেবতারা সমুদ্র থেকে অমৃতের মন্থন করেছিলেন। পরবর্তীতে এই অমৃত মাটিতে ছড়িয়ে পড়ে যা থেকে গাঁজা গাছের জন্ম হয়েছিল। যেখান থেকেই পরবর্তীতে ভাংয়ের প্রচলন হয়।
অনেকেই মনে করেন এর আবিষ্কার করেন শিব
অথর্ববেদের মতো প্রাচীন হিন্দু গ্রন্থ গুলিতেও উদ্বেগমুক্তি এবং ক্লান্তি উপশমের জন্য ভাংয়ের ব্যবহারের কথা লেখা হয়। যদিও বেশ কিছু কিংবদন্তি মনে করেন শিবই এটি আবিষ্কার করেছিলেন। বাস্তবে, সাধারনত গাঁজা ও শিবের সাথে একটা দৃঢ় সম্পর্ক আছে বলে শোনা যায়। যদিও মহাশিবরাত্রিতে, এমনকি প্রধান শিব মন্দিরগুলিতে সাধারণ দিনেও ভাংকে প্রায়শই প্রসাদ হিসাবে দেওয়া হয়।
আইনের ফাঁকতাল গলে চলছে ভাং ব্যবসা
এদিকে ১৯৮৫ সালে মাদকদ্রব্য ও সাইকোট্রোপিক পদার্থ আইনে গাঁজার চাষ, বা পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারমধ্যে কেবল গাঁজা গাছের কিছু অংশ পড়ে, যেমন এর কুঁড়ি এবং রজনের মতোই পদার্থকে মাদক হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়। কিন্তু এই গাছের পাতাকে মাদক তালিকাভুক্ত করা হয় না, যা দিয়ে আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সহজেই ভাং তৈরি করা যায়।
বনাঞ্চলে ভাং চাষ নিয়ে নেই কোনও বিধিনিষেধ
ভারত হয়ত এখনও সেই দেশে হয়ে ওঠেনি যেখানে আপনি নিজের ঘরে বসে আপনার বাবা-মায়ের সঙ্গেই আপনি আপনার জীবনের প্রথম নেশার পানীয় খেতে পারবেন। কিন্তু দোলের দিন যেন এই বেঁড়াজাল গুলো খানিক উঠে যায়। ভাং যোগে হোলিতে মাতোয়ারা হতে দেখা যায় আট থেকে আশি সকলকেই।
অন্যদিকে বাণিজ্যিক ভাবে গাঁজা চাষ সম্পূর্ণ ভাবে বেআইনী ঘোষণা করেছে সরকার। অন্যথায় ১০ বছর পর্যন্ত জেলের বিধানো রয়েছে। কিন্তু বুনো জায়গায় বা বনাঞ্চলে এই গাছ কাটা বা ফসল তোলার ক্ষেত্রে কোনও আইনই নেই। যারফলে আইনের ফাঁকতাল গলে রমরমিয়ে চলে এই ব্যবসা।