সমুদ্রপথে দেশকে সুরক্ষা দেবে কলকাতা, প্রত্যয়ী প্রধানমন্ত্রীও
দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি অত্যাধুনিক রণতরী আইএনএস কলকাতাকে নৌসেনার হাতে তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার মুম্বইয়ে একটি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে তিনি জাহাজটিকে দেশের সেবায় নিয়োজিত করেন। এর বিশেষত্ব হল, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি সবচেয়ে বড় যুদ্ধজাহাজ এটি।
ভারতের তিনদিকে সমুদ্র। তাই সামুদ্রিক স্বার্থ (মেরিটাইম ইন্টারেস্ট) বিপুল। পশ্চিমে পারস্য উপসাগর থেকে পূর্বে মলাক্কা প্রণালী পর্যন্ত বিস্তৃত ভারতের সামুদ্রিক স্বার্থ। এই বিপুল জলরাশি যদি নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা হলে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে (এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিয়ন) ভারতই হবে দুর্বার শক্তি। গোটা ব্যাপারটা প্রথম উপলব্ধি করেছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। ২০০৩ সালে তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় 'প্রোজেক্ট ১৫-এ' হাতে নেওয়া হয়। এর আওতায় দেশীয় প্রযুক্তিতে তিনটি অত্যাধুনিক ও বৃহদাকার রণতরী বানানো হবে বলে ঠিক হয়। এগুলি হল: আইএনএস কলকাতা, আইএনএস কোচি ও আইএনএস চেন্নাই। খরচ ধরা হয় ১১৬৬২ কোটি টাকা। যদিও প্রশাসনিক জটিলতায় কাজ শুরু হয় ২০০৬ সালে, ইউপিএ আমলে। শেষ পর্যন্ত মাজাগাঁও ডকে তৈরি যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কলকাতা জলে ভাসল।
"এমন যুদ্ধজাহাজ থাকলে কেউ চোখ রাঙানোর সাহস পাবে না", বললেন প্রধানমন্ত্রী
৬৮০০ টন ওজনের এই জাহাজটি নির্মিত হয়েছে আমাদের নিজস্ব প্রযুক্তিতে। শুধু গ্যাস টার্বাইন দিয়েছে ইউক্রেন। তবে এই জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা আংশিকভাবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। কারণ বেশি দূরত্বের ভূমি-থেকে-আকাশ (লং রেঞ্জ সারফেস টু এয়ার) ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার কথা আছে ইজরায়েলের। এখন গাজায় সংঘর্ষ চলায় ইজরায়েল ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি দিতে পারেনি। আশা, খুব শীঘ্রই তারা ক্ষেপণাস্ত্রগুলি সরবরাহ করতে পারবে। আইএনএস কলকাতার আর একটি বৈশিষ্ট্য হল, দুশমনে রেডারে এটি ধরা পড়বে না।
এ দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, "আইএনএস কলকাতা দেশের গৌরব। এমন যুদ্ধজাহাজ থাকলে কেউ ভারতের দিকে চোখ রাঙানোর সাহস পাবে না।"
প্রসঙ্গত, ক্ষমতায় এসেই দেশের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। আইএনএস কলকাতা, আইএনএস কোচি এবং আইএনএস চেন্নাই ছাড়াও অনুরূপ আরও ৪১টি অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের। ৪৪টি যুদ্ধজাহাজ মিলিয়ে মোট খরচ ধরা হয়েছে দু'লক্ষ কোটি টাকা।
এ ছাড়াও কোচি শিপইয়ার্ডে তৈরি হচ্ছে ৪০ হাজার টন ওজনের আর একটি বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রান্ত। ইউপিএ আমলে টাকার অভাবে বারবার থমকে গিয়েছিল এক নির্মাণ কাজ। নরেন্দ্র মোদী কিছুদিন আগেই ১৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করায় ফের শুরু হয়েছে কাজ। ২০১৮ সালে এটি হাতে পাবে নৌসেনা।