করোনায় আড়াইশো জনেরও বেশি মৃত্যু ভারতে, তাও বিশ্বে মৃত্যুর হারের চেয়ে অনেক কম
করোনা ভাইরাসে প্রতিদিনই ভারতে আক্রান্তের সংখ্যার পাশাপাশি বাড়ছে মৃত্যুও। গত একমাসে ভারতে করোনায় মারা গিয়েছে ২০০ জনের বেশি। কিন্তু তবুও তা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকটাই কম। কিছু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে ভারতে মৃত্যুর হার ৩ শতাংশ কম অন্য দেশগুলির তুলনায়। এছাড়াও তা ব্রিটেন, ইতালি ও স্পেনের মতো বেশ কিছু ইউরোপিয়ান দেশের তুলনায়ও কম।
ভারতে মৃত্যুর হার ৩.১ শতাংশ
১০ মার্চ ভারতে প্রথম কোভিড-১৯-এ মৃত্যু হয়, যা ছিল কর্নাটক থেকে। জানা গিয়েছে যে মহামারিজনিত কারণে অপেক্ষাকৃত অল্প বয়স্ক ভারতীয় জনসংখ্যা কম মৃত্যুর হারের অন্যতম কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জন্য ইতালি এবং স্পেনের মতো দেশগুলিতে উচ্চ সংখ্যক প্রাণহানির কারণ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন যা সংক্রমণ হওয়ার পরে জটিলতা বৃদ্ধিতে বেশি সংবেদনশীল। এ সপ্তাহে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছিল যে ৬০ বছর বা তার ঊর্ধ্বে মৃত্যুর সংখ্যা ৬৩ শতাংশ, ৪০ থেকে ৬০ বছর বয়সীদের মৃত্যুর সংখ্যা ৩০ শতাংশ ও ৪০ বা তার নীচে বয়সের মৃত্যুর সংখ্যা ৭ শতাংশ। ভারতে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা সাত হাজারের ওপরে ও মৃত্যু ২০০-এর বেশি। এর অর্থ ভারতে মৃত্যুর হার ৩.১ শতাংশ।
বিশ্বে অন্যান্য দেশে মৃত্যুর হার
আমেরিকার সরকারি মতে, এই দেশে নিশ্চিত করোনা কেসের সংখ্যা ৪,২৭,৪৬০ এবং মৃত্যুর সংখ্যা ১৪,৬৯৭টি, মৃত্যুর হার ৩.৪ শতাংশ। যদিও জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মতে, কোভিড-১৯-এর নিশ্চিত কেসের সংখ্যা ৪,৬৬,২৯৯টি এবং মৃত্যুর সংখ্যা ১৬,৬৮৬ (মৃত্যুর হার ৩.৫৭ শতাংশ)। তবে মৃত্যুর হার বেশি ইউরোপে। স্পেনে মৃত্যুর হার ৯ শতাংশ। ইতালিতে মৃত্যুর হার ১২.৭২ শতাংশ (১৪৩,৬২৬ টি কেস ও ১৮,২৭৯টি মৃত্যু)। ব্রিটেনে মৃত্যুর হার ১২ শতাংশ (৬৫,০৭৭ কেস ও মৃত্যুর সংখ্যা ৭,৯৭৮টি)। প্রত্যেকটি দেশেই ভারতের থেকে বেশি মৃত্যুর হার। একমাত্র জার্মানিতেই অত্যন্ত দ্রুত করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করা গিয়েছে। এখানে ১,১৩,৫২৫টি নিশ্চিত কেসের সংখ্যা এবং মৃত্যু ২,৩৭৩টি, মৃত্যুর হার ২.০৯ শতাংশ, যা ভারতের চেয়ে সামান্য কম।
অন্যান্য দেশে ভারতের তুলনায় বয়স্করা বেশি মরেছে
তথ্য ও পরিসংখ্যানের ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের মতে ভারতে মৃত্যুর হার বিশ্বজুড়ে ৫.৯৮ শতাংশ মৃত্যুর হারের চেয়েও কম। গোটা বিশ্বে মৃত্যুর সংখ্যা ৯৬ হাজারের ওপর। ফরিদাবাদের ফর্টিস হাসপাতেল পরামর্শদাতা ডাঃ রবি শেখর ঝা জানিয়েছেন, ইতালি, স্পেন ও আমেরিকাতে ভারতের তুলনায় বয়স্ক নাগরিকদের মৃত্যু বেশি হয়েছে, কারণ আমাদের দেশে তরুণদের সংখ্যা বেশি। এছাড়াও করোনা সংক্রমণের প্রথম দিকে ভারত লকডাউন ঘোষণা করার ফলে মৃত্যুও অনেক কমেছে।