কোন যুক্তিতে অযোধ্যায় পুরো জমি রামলালাকে? জেনে নিন সুপ্রিমকোর্টের বক্তব্য
আদালতের ১০৪৫ পাতার রায়তে বলা হয়, জমির উপর মালিকানার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মুসলিমদের দেওয়া প্রমাণের চেয়ে আরও ভালো প্রমাণ দিয়েছিল হিন্দু পক্ষ।
অবশেষে শনিবার বহু প্রতিক্ষিত অযোধ্যা জমি বিতর্কের রায় ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিমকোর্টের এই ঐতিহাসিক রায়ে বিবাদের মূলে থাকা ২.৭৭ একর জমিটি হিন্দুদের দেওয়ার কথা বলা হয়। এবং তা তৈরির জন্য তিনমাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে ট্রাস্ট গঠন করতে হবে বলেও জানিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি শীর্ষ আদালত জানায়, ১৯৯২ সালে মসজিদ ভাঙা বেআইনি ছিল। তবে মন্দির ভাঙা বেআইনি হলে কী করে জমি দেওয়া হয় রামলালাকে?
আদালতের ১০৪৫ পাতার রায়তে বলা হয়, জমির উপর মালিকানার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মুসলিমদের দেওয়া প্রমাণের চেয়ে আরও ভালো প্রমাণ দিয়েছিল হিন্দু পক্ষ। জমির মালিকানা কখনও বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে দেওয়া যায় না। মালিকানা স্থির করতে দরকার প্রমাণ। তাই বিতর্কিত জমি মন্দিরের জন্য হস্তান্তর করা হচ্ছে।
পাশাপাশি রায়দানে উল্লেখ করা হয় এএসআই-এর জমা করা খনন বিষয়ক রিপোর্টেরও। রায় ঘোষণার সময় শীর্ষ আদালত জানায় বিতর্কিত জমির গভীরে যে প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে তাতে মুসলিম স্থাপত্যের প্রমাণ মেলেনি। এবং এএসআই এর রিপোর্টে স্পষ্ট যে খালি জমিতে তৈরি হয়নি ওই মসজিদের।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, বিতর্কিত জমিতে রামের জন্ম হয়েছিল একথা দাবি করেছে হিন্দুরা। মুসলিমরাও এই দাবির বিরোধিতা করেনি। তবে সেখানে যে মসজিদে তারা প্রার্থনা করত এমন দাবি জানিয়েছে মুসলিমরা। তবে এই বিচর্কিত জমিতে যে রামের জন্ম হয়েছিল এই নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই।
বিতর্কিত জমিতে সীতা রসুই, ভান্ডার গৃহ, রাম চাবুতরার অস্তিত্ব ধর্মীয় বিশ্বাসের মধ্যে পড়ে। তবে কোর্টের এই রায় কোনও রকম ধর্মীয় বিশ্বাসের দ্বারা প্রভাবিত নয়। পুরোটাই প্রমাণ সাপেক্ষে করা হয়েছে। সেকারণেই শীর্ষ আদালত বারবার জানিয়েছে প্রত্নতাত্বিক পরীক্ষায় বিতর্কিত জমি খুঁড়ে পাওয়া ভগ্নাবশেষে ইসলামিক স্থাপত্যের নিদর্শন মেলেনি। সেকারণেই অনেকটা ফিকে হয়েছে মুসলিম পক্ষের দাবি।