ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি! কাকা শরদকে অনুসরণ করলেন ভাইপো অজিত
শনিবার এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারের যে কাজ নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে, আর শরদ পাওয়ার বলছেন, এই কাজের সঙ্গে কোনও যোগ নেই তাঁদের, সেই শরদ পাওয়ারই একসময় এই একই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে। এছাড়াও, এর আগে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে কাকার থেকে ভাইপোর আলাদা হয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

শনিবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ
এদিন সকাল ৭.৩০ নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন বিজেপির নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। সঙ্গে শপথ নেন এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ার। এনসিপির তরফে অজিত পাওয়ারকে এনসিপির পরিষদীয় দলের নেতা নির্বাচিত করা হয়েছিল। সূত্রের খবর অনুযায়ী, অজিত পাওয়ার এনসিপি বিধায়কদের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি চিঠি রাজ্যপালের হাতে তুলে দিয়েছেন। যদিও এনসিপির তরফে অজিত পাওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করা হয়েছে। কংগ্রেস নেতা আহমেদ প্যাটেল বলেছেন, এনসিপি সুপ্রিমো শারদ পাওয়ার ঠিক করবেন অজিত পাওয়ারের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শারদ পাওয়ার এবং ১৯৭৮-এ মহারাষ্ট্রের রাজনীতি
১৯৭৭ সালের লোকসভা নির্বাচনে জনতার পার্টির জোটের কাজে পরাজিত হয়েছিলেন কংগ্রেস নেত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তৎকালীন মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী শঙ্কররাও চবন দায়িত্ব নিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন। রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন বসন্তদাদা পাটিল। সেই সময় কংগ্রেস আড়াআড়ি দুভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছেন। কংগ্রেস আই এবং কংগ্রেস ইউ। শারদ পাওয়ার যোগ দিয়েছিলেন কংগ্রেস ইউতে।
১৯৭৮ সালে মহারাষ্ট্র বিধানসভার নির্বাচন হয়। জনতা পার্টি একক বৃহত্তম দল হয়েছিল। কিন্তু তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে গিয়ে কংগ্রেস ইউতে যোগ দিয়ে জনতা পার্টিকে নিয়ে জোট সরকার গঠন করেছিলেন শারদ পাওয়ার। জোটের নাম ছিল প্রোগ্রেসিভ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট। সেই সময়ে রাজ্যের নবীনতম মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন শারদ পাওয়ার মাত্রা ৩৮ বছর বয়সে।

মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে কাকা-ভাইপো
কাকার কাছ থেকে ভেঙে ভাইপোর বেরিয়ে যাওয়া মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন কিছু নয়। ২০০৬ সালে বাল ঠাকরের ভাইপো রাজ ঠাকরে শিবসেনা থেকে বেরিয়ে গিয়ে মহারাষ্ট্র নব নির্মাণ সেনা গঠন করেন। বাল ঠাকরে শিবসেনার শীর্ষ পদ থেকে সরে গিয়ে নিজের ছেলে উদ্ধবকে সেই জায়গায় বসান। কিন্তু রাজ ঠাকরেকে কোনও সুযোগ দেননি।

শারদ পাওয়ারের পরিচিতি
তিনবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন শারদ পাওয়ার। এছাড়াও কেন্দ্রে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং কৃষিমন্ত্রী পদও সামলেছেন। কংগ্রেস থেকে আলাদা হয়ে গিয়ে ১৯৯৯ সালে তিনি নতুন দল গঠন করেন। রাজনীতির বাইরে শারদ পাওয়ার বিসিসিআই-এর সভাপতি ছিলেন ২০০৫ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত। এছাড়াও তিনি আইসিসির প্রেসিডেন্টও ছিলেন ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত।