সংখ্যালঘুদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে নামিয়ে আনা উন্নতির প্রধান বাধা, মন্তব্য আরবিআইয়ের প্রাক্তন গভর্নরের
সংখ্যালঘুদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে নামিয়ে আনা উন্নতির প্রধান বাধা, মন্তব্য আরবিআইয়ের প্রাক্তন গভর্নরের
দেশের সংখ্যালঘু নাগরিকদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকত্বে নামিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর তার ফলেই দেশের অভ্যন্তরে সম্প্রীতির ফাটল তৈরি হচ্ছে। দেশ বিভক্ত হয়ে পড়ছে বলে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর মন্তব্য করেন। ছত্তিশগড়ের রায়পুরে অন ইন্ডিয়া প্রফেশনাল কংগ্রেসের (এআইপিসি)-এর সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে এসেছিলেন রঘুরাম রাজন।
সংখ্যালঘুদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করা হচ্ছে
রায়পুরের সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রঘুরাম রাজন সংখ্যালঘুদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিত্বে পরিণত করার চেষ্টার তুমুল বিরোধিতা করেন। তিনি মনে করছেন, এই প্রচেষ্টাই দেশের মধ্যে ফাটল ধরাবে। ভারতকে টেনে নিচের দিকে নামাবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর মনে করেন, ভৌগলিক ও রাজনৈতিক বিকাশের যুগে এই ধরনের চেষ্টা আমাদের দূর্বল করে দেবে। যা বিদেশি হস্তক্ষেপের রাস্তাকে প্রশস্ত করে তুলবে। এই প্রসঙ্গে তিনি প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কার উদাহরণ দেন।
সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণের ফল ভালো হয় না
রঘুরাম রাজন বলেন, শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতি দেখলে আঁতকে উঠতে হয়। শ্রীলঙ্কার সঙ্কুচিত অর্থনীতির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, 'আমাদের দেশ যখন ক্রমাগত সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করে, যখন দেশের কর্মসংস্থান করতে ব্যর্থ হয়, তখন পরিণাম ভালো হয় না। বৈদেশিক অর্থের ভাণ্ডার শেষ শ্রীলঙ্কার। বর্তমানে শ্রীলঙ্কার খাদ্যদ্রব্য, ওষুধ, জ্বালানি সহ একাধিক জরুরি পণ্যের আকাল দেখা দিয়েছে। দেশের মুদ্রাস্ফীতি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কট করোনা মহামারী ও লকডাউনের জেরে আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন।
উদার গণতন্ত্র দেশকে শক্তিশালী করে
রায়পুরে এআইপিসির পঞ্চম সম্মেলনে রঘুরাম রাজন বলেন, দেশের ভবিষ্যত উদার গণতন্ত্র ও শক্তিশালী সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। কাউকে দুর্বল প্রতিপন্ন করার মধ্যে দেশের ভবিষ্যত নির্ভর করে না। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমি জোর দিয়ে বলতে চাই উদারনীতি কখনও ধর্মবিরোধী নয়। প্রতিটি ধর্মের এক সার কথা। প্রত্যেকের মধ্যে ভালো গুন সন্ধান করা। এটি একটি উদার গণতন্ত্রের সারমর্ম।' তিনি বলেন, এখন উদার গণতন্ত্র বোঝাতে গেলেই সাধারণ মানুষ ধর্মবিরোধী বলে ভুল বোঝে। উদার গণতন্ত্রে নিজের ধর্মকে সম্মান করে অন্য ধর্মকে সম্মান করা শেখায়। নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার অর্থ অন্যের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া নয়। তিনি বলেন, 'ভারতকে উন্নতির শিখরে পৌঁছতে গেলে কর্তৃত্ববাদের প্রয়োজন রয়েছে বলে আমি মনে করি না। কর্তৃত্ববাদের মাধ্যমে দেশের উন্নতি একটি পুরনো মডেল। সেই মডেল সাধারণ পণ্য ও পুঁজির ওপর জোর দেয়। দেশের সাধারণ মানুষ, তাঁদের ধারণা, তাদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে গুরুত্ব দেয় না।'
দরজায় কড়া নাড়ছে বন্ধুত্ব দিবস, রাশি অনুযায়ী চিনে নিন আপনার সত্যিকারের বন্ধুকে