ক্যানসারের ‘অ্যানসার’ এক ট্রায়ালেই! পরীক্ষার অপ্রত্যাশিত ফলে প্রতিটি রোগীই উপকৃত
মাত্র একটি ছোট্ট পরীক্ষা। তাতেই ১৮ জন রেকটাল ক্যান্সার রোগী উপকার পেলেন হাতেনাতে। প্রত্যেকেই একই ওষুধ গ্রহণ করেছিল। তার চমকপ্রদ ফল পেলেন রোগীরা। বিস্ময়কর বললেও কম বলা হয়। প্রতিটি রোগীর ক্যান্সার উধাও।
মাত্র একটি ছোট্ট পরীক্ষা। তাতেই ১৮ জন রেকটাল ক্যান্সার রোগী উপকার পেলেন হাতেনাতে। প্রত্যেকেই একই ওষুধ গ্রহণ করেছিল। তার চমকপ্রদ ফল পেলেন রোগীরা। বিস্ময়কর বললেও কম বলা হয়। প্রতিটি রোগীর ক্যান্সার উধাও হয়ে গিয়েছে ওই এক ট্রায়ালেই। বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা, এন্ডোস্কোপি, পিইটি স্ক্যান বা এমআরআই পরীক্ষার পরও আর শনাক্ত করা যাচ্ছে না ক্যানসার।
নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে রবিবার প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণাপত্র। সেই গবেষণাপত্রের লেখক মেমোরিয়াল স্লোয়ান কেটারিং ক্যান্সার সেন্টারের ডক্টর লুইস এ দিয়াজ জুনিয়র ক্যানাসর নিয়ে গবেষণার ফলাফল বর্ণনা করেন। ওষুধ কোম্পানি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন দ্বারা স্পনসর করা হয়েছিল এই গবেষণা।
ডা. দিয়াজ বলেন, তিনি অন্য কোনও গবেষণার বিষয়ে জানেন না, যা একটি চিকিৎসা প্রতিটি রোগীর ক্যানসারকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে পারে। আমি বিশ্বাস করি ক্যান্সারের ইতিহাসে এই প্রথম এমন ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেছে। ক্যালিফোর্নিয়া সান ফ্রান্সিসকো বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কোলোরেক্টাল ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ড. অ্যালান পি. ভেনুক এই গবেষণার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তিনিও বলেন এটিই প্রথম। প্রত্যেক রোগীর ক্যানসার সম্পূর্ণ নির্মূল হয়ে গিয়েছে।
এই রেকটাল ক্যান্সারের রোগীরা কঠিন চিকিৎসার মুখোমুখি হয়েছিল। কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন এবং জীবন-পরিবর্তনকারী অস্ত্রোপচার হয়েছিল। যার ফলে অন্ত্র, প্রস্রাব এবং যৌন কর্মহীনতাও দেখা দিত তাঁদের। তাঁদেরকে নিয়েই শুরু হয়েছিল নতুন গবেষণা। সেখানে নয়া এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে সুফল মিলেছে। তাঁরা কেউই ভাবেননি তাঁদের টিউমারগুলি অদৃশ্য হয়ে যাবে। তাঁরা এখন এটা ভেবেই বিস্মিত হচ্ছে যে, তাঁদের আর কোনও চিকিৎসার প্রয়োজন নেই।
মেমোরিয়াল স্লোন কেটারিং ক্যান্সার সেন্টারের একজন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ এবং গবেষণাপত্রের একজন সহ-লেখক ডাঃ আন্দ্রেয়া সেরসেক রবিবার আমেরিকান সোসাইটি অফ ক্লিনিক্যাল অনকোলজির বার্ষিক সভায় উপস্থাপন করেছিলেন ক্যানসার-মুক্ত রোগীদের। তিনি বলেন, আরেকটি আশ্চর্য যে, রোগীদের কারোরই চিকিৎসাগতভাবে উল্লেখযোগ্য জটিলতা ছিল না।
গড়ে প্রতি পাঁচজন রোগীর মধ্যে একজনের ওষুধের প্রতি একধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ডস্টারলিম্যাব, চেকপয়েন্ট ইনহিবিটর নামে পরিচিত ওষুধটি রোগীরা গ্রহণ করেন। ওষুধটি ছয় মাসের জন্য প্রতি তিন সপ্তাহে দেওয়া হয়েছিল এবং প্রতি ডোজের দাম প্রায় ১১ হাজার ডলার। এটি ক্যান্সার কোষের মুখোশ উন্মোচন করে, ইমিউন সিস্টেমকে শনাক্ত করে এবং ধ্বংস করে দেয়। ফলে ক্যানসার রোগীরা সম্পূর্ণ সেরে যাচ্ছেন এই ট্রায়ালে।