ধর্নায় বসায় হেফাজতে দিগ্বিজয়! বেঙ্গালুরুতে চূড়ান্ত নাটকের মধ্যে মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক মোড় নির্ধারণ
মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক কেন্দ্রস্থল যে সেই ব্যাঙ্গালোর তা ফের স্পষ্ট হয়ে যায় বুধবার সকাল সকাল। একদিকে যখন মধ্যপ্রদেশের আস্থা ভোট নিয়ে কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে গিয়েছে বিজেপি, অপরদিকে নাটকীয় পরিস্থিতি বেঙ্গালুরুতে। এদিন সকালে বেঙ্গালুরুর রামাদা হোটেলের সামনে ধর্নায় বসেন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং। আর এর জেরেই প্রতিরোধমূলক ভাবে দিগ্বিজয়কে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নেয়।
বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের আস্তানা
প্রসঙ্গত, বেঙ্গালুরুর রামাদা হোটেলেই রয়েছেন কংগ্রেসের ২২ জন বিধায়ক। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরেই এইসব বিধায়ক মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সরকারের প্রতি সমর্থন তুলে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এর আগে দিগ্বিজয় সিংকে পুলিশ হোটেলে ঢুকতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। তারপরই তিনি ধর্নায় বসেন। তবে তাও সরিয়ে দেয় পুলিশ।
সুপ্রিমকোর্টে বল গড়িয়েছে মধ্যপ্রদেশের নাটকের
এদিকে মধ্যপ্রদেশের লড়াই এখন পুরো মাত্রায় সুপ্রিমকোর্টের অধীন। আস্থা ভোট ১০ দিন পিছিয়ে যেতেই সুপ্রিমকোর্টে গিয়েছিল বিজেপি। সেই মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিমকোর্ট এদনি মধ্যপ্রদেশ সরকারকে নোটিশ জারি করে। এরপর বিজেপির বিরুদ্ধে আদালতে দ্বারস্থ হল কংগ্রেস। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি তাদের বিধায়কদের অপহরণ করে রেখে দিয়েছে।
কংগ্রেসের অস্বস্তি
কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়ে একটি ভিডিও বার্তায়। মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস যতই বলুক যে ইস্তফা দেওয়া বিধায়করা তাদের সঙ্গেই আছেন, সেই দাবি যে সত্যি নয় তা প্রমাণ করে দিল একটি ভিডিও বার্তা। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার সঙ্গে কংগ্রস ত্যাগী ২১ বিধায়কের সেই ভিডিও বার্তায় আরও ঘোলাটে হয়ে যায় মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক সমীকরণ। এক ভিডিও বার্তায় বিক্ষুব্ধ বিধায়করা জানিয়ে দিয়েছেন যে এখনও তাঁরা বেঙ্গালুরুতেই রয়েছেন। তাঁদের পূর্ণাঙ্গ সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা হলে তবেই তাঁরা ভোপাল ফিরে যাবেন।
সুযোগের সন্ধানে বিজেপি
এদিকে এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করা খুব কঠিন হয়ে পড়বে। ২২৮ সদস্যের বিধানসভায় ৬ জন বিধায়কের ইস্তফা ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছেন অধ্যক্ষ। এর জেরে সদস্য সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ২২২-এ। যার অর্থাৎ ম্যাজিক ফিগার ১১২। তবে ২১ জন বিধায়ক ছাড়া সেই সংখ্যার ধারের কাছেও পৌঁছাবে না কমলনাথের সরকার। সেই সুযোগেই রয়েছে বিজেপি।
ফ্যাক্টর জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া
এর আগে অবশ্য কংগ্রেস দাবি করেছিল পদত্যাগী ২২ জন বিধায়কের মধ্যে ১২ জন বিজেপিতে যেতে চান না। তাঁদের স্পষ্ট দাবি, আমরা মহারাজের সঙ্গে এসেছি, কিন্তু আমরা বিজেপিতে যেতে চাই না। এর ফলে মধ্যপ্রদেশ অঙ্ক বদলাচ্ছে। কংগ্রেস জানায়, এই ১২ বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের বাড়িতে বৈঠকে বসেন। আর এই বৈঠকের পরই পাল্টা চাপে পড়ে বিজেপি। এদিকে বেঙ্গালুরুতে থাকা বিধায়কদের দাবি তাঁরা এখনও সেখানেই আছেন। যা নিয়ে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হচ্ছে। এখন দেখার কোন দল কোন সমীকরণের সাহায্যে মসনদ দখল করে। তবে এরই আগে এই বিধায়কদের আটকে রাখার দায়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে যায় কংগ্রেস। আর বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের ফেরাতে শেষ চেষ্টা করলেন দিগ্বিজয়। তবে তুরুপের তাস সেই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।