যে ভাবে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে হিংসা ছড়ায় রাজধানী দিল্লিতে! তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর খোলসা পুলিশের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরকালীনই হিংসার আগুনে জ্বলে ওঠে দিল্লি। সিএএ সমর্থনকারী ও বিরোধীদের সংঘাত ক্রমেই সাম্প্রদায়িক হিংসায় পরিণত হয়। প্রসঙ্গত, সিএএ-র সমর্থনে বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রর এক জনসভার পর থেকেই দিল্লির উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে উত্তেজনা ছড়ায়। এই কারণে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়তে হয় বিজেপিকে। তবে তদন্তে নেমে পুলিশ জানাচ্ছে যে দিল্লির এই হিংসার পিছনে রয়েছে বেশ কয়েকটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ।
হোয়াটসঅ্যাপে ছড়ানো হয় পুরোনো ভিডিও
জানা গিয়েছে ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি দিল্লির উত্তর-পূর্ব এলাকায় অনেক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে পুরোনো অনেক ভিডিও ফরোয়ার্ড করা হয় যেগুলি আদতে দিল্লি হিংসার সঙ্গে যুক্ত নয়। পুরোনো ভিডিও দেখিয়ে সেই গ্রুপগুলিতে ক্রমাগত উস্কানিমূলক বার্তা ছড়ানো হয়। এই হোয়াটসঅ্যাপ গুরুপগুলি বানানোর দায় অবশ্য দুই পক্ষেরই।
দিল্লি পুলিশের ভিডিও ব্যহবার করে উত্তেজনা ছড়ানো হয়
দিল্লি পুলিশ জানাচ্ছে যে তদন্তে নেমে তারা জানতে পারে যে তাদেরই একটি ভইডিও সেই গ্রুপগুলিতে ছড়ানো হয়েছিল। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে ঘিয়ের টিন থেকে একের পর এক বন্দুক বের করা হচ্ছে। আদতে সেই ভিডিওটি গত বছরের একটি তল্লাশির। দিল্লি পুলিশ এক বেআইনি অস্ত্র কারখানায় অস্ত্র উদ্ধার করতে গিয়ে প্রমাণ স্বরূপ সেই ভিডিওটি করেছিল। পরে তা সাংবাদিক সম্মেলনে দেখানো হয়েছিল।
দিল্লির ঘটনায় আটক অন্তত ১৪০০
এদিকে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে ইতিমধ্যেই দিল্লিতে হিংসা ছড়ানোর ঘটনায় যু্ক্ত থাকার অভিযোগে ১৪০০ জনকে গ্রেফতার বা আটক করা হয়েছে। এই আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়েই হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে এরকম উত্তেজনা ছড়ানোর বিষয়টি সামনে আসে। আরও জানতে আটক ব্যক্তিদের জেরা করছে পুলিশ।
প্রুচুর বেআইনি অস্ত্র ঢোকে দিল্লিতে
এছাড়া দিল্লি পুলিশ জানাচ্ছে, ৪৩৬টিরও বেশি অভিযোগ দায়ের হয়েছে হিংসা সম্পর্কিত ঘটনায়। এই মামলাগুলির মধ্যে ৪৫টি হল বেআইনি ভাবে অস্ত্র রাখার দায়ে। তবে এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ শান্ত আছে বলে দাবি করা হয়। গত ছয় দিনে কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি বলেও তারা জানায়।
সিএএ ঘিরে দিল্লিতে মৃত কমপক্ষে ৪৭
সিএএ ঘিরে দিল্লিতে বেশ কয়েকদিন ধরে চলে হিংসার ছবি। এখনও পর্যন্ত এই হিংসার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭। জখম হয়েছেন আরও ৩৫০ জন। যাদের মধ্যে অনেকেই এখনও মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। তবে দিল্লি হিংসার সব থেকে ভয়ানক ছবি ভেসে আসছে রাজধানীর ড্রেনগুলি থেকে। দিল্লিতে হিংসায় মৃতদের মধ্যে থেকে এখনও পর্যন্ত ১১ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে নালা থেকে। যার জেরে চাঞ্চল্য বেড়েছে।
সদ্য বিবাহিত থেকে ৮৫-র বৃদ্ধা, হিংসা থেকে রেহাই পায়নি কেউ
দিল্লির হিংসায় যেমন মারা গিয়েছেন এক পুলিশ কনস্টেবল ও আইবি অফিসার, তেমনই মৃতদের মধ্যে রয়েছেন সদ্য বিবাহিত এক ব্যক্তি, একজন ডিজে, এক ব্যবসায়ী, একজন বাবা যে তাঁর সন্তানদের জন্য টফি কিনতে বেরিয়েছিলেন, একজন ৮৫ বছরের বৃদ্ধা। রেহাই পাননি সাংবাদিকরাও। দিল্লি হিংসা চলাকালীন অশান্ত এলাকায় খবর সংগ্রহে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের রোষের সামনে পড়েছেন সাংবাদিকরা।