কোভিড–১৯–এর প্রভাব, চিন–উৎপাদিত ফোনের সরবরাহ কমে গিয়েছে ভারতে
কোভিড–১৯–এর প্রভাব, চিন–উৎপাদিত ফোনের সরবরাহ কমে গিয়েছে ভারতে
চিনে করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাবের ফলে ভারতের বাজারে আইফোন ও অন্যান্য ফোনের সরবরাহ অনেকটাই কমে গিয়েছে। এর পাশাপাশি শাওমি, টিসিএল ও রিয়ালমি ফোনের সরবরাহ কমে গিয়েছে বলে জানিয়েছে বিক্রেতারা। সেলফোন ও বৈদ্যুতিন গ্যাজেটের খুচরো বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহ থেকে ১০ দিনে সাধারণভাবে ১০–২০% ফোনই দোকানে পাঠানো হয়েছে।
অ্যাপেলের ওপর বেশি প্রভাব
তিনজন শীর্ষ ইন্ডাস্ট্র এক্সিকিউটিভ জানিয়েছেন যে অ্যাপেল ব্র্যান্ডের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে। অনেক বিক্রেতাই জানিয়েছেন যে অ্যাপেল ঘড়ির পাশাপাশি আইফোন ১১ ফোনও তাঁদের কাছে প্রায় শেষের দিকে। বিক্রেতারা জানিয়েছে, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত আইফোন এক্সআর এবং সেভেন-এর সরবরাহগুলি প্রভাবিত হয়নি। তবে টিসিএল ও শাওমি টিভির সরবরাহ অনেক কমে গিয়েছে। শাওমি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এসি নিয়ে আসার কথা জানালেও তা কয়েক সপ্তাহের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে। এক্সিকিউটিভ জানিয়েছেন, চতুর্থ বৃহত্তম স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি-এর সিথ্রি এবং ফাইভআই এর মতো নতুন স্মার্টফোন মডেলগুলির সরবরাহের উপর চাপ পড়ছে। খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, পণ্যের উপর ছাড় হ্রাস পেয়েছে এবং আইফোন, ম্যাকবুক কম্পিউটার এবং অ্যাপল ঘড়ির মতো কিছু পণ্য এখন অফলাইনে স্টোরগুলিতে স্থায়ী দামে বিক্রি হচ্ছে।
দাম বাড়ছে টিভি, স্মার্ট ফোন ও এসির
চিনে করোনাভাইরাস প্রকোপের মধ্যেও কাজ শুরু হলেও তারা প্রায় ৩৫-৫০% ক্ষমতার সঙ্গে কাজ করছে। যার ফল হিসাবে বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়ে গিয়েছে, টিভি, বেশ কিছু স্মার্ট ফোন ও এসির দাম এ মাসে বেড়েছে ৫-১০ শতাংশ, তাও নির্মাতাদের বাধ্যতার কারণে। মুম্বই ও দিল্লির শীর্ষ ইলেকট্রনিক খুচরো বিক্রেতা বিজয় সেলসের ডিরেক্টর নীলেশ গুপ্তা বলেন, ‘বেশ কিছু ব্র্যান্ডের পম্য সরবরাহ নিয়ে সমস্যা রয়েছে। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা নিয়ে স্পষ্টভাবে জানা যাচ্ছে না। যদি দ্রুত পরিস্থিতি না শুধরোয় তবে আগামী মাস থেকে মজুত শেষ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।'
খুচরো ব্যবসায়ীরা মজুত করতে শুরু করেছে
মুম্বইয়ের শীর্ষ ইলেকট্রনিক চেইন কোহিনুর ইলেকট্রনিক্সের ডিরেক্টর বিশাল মেওয়ানি জানান, রিয়ালমি, টিসিএল ও শাওমির ওপর বেশি প্রভাব পড়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রয়োজনীয় পরিমাণের ১০-২০% পাচ্ছি।' শাওমি ব্র্যান্ডের ভারতের মুখপাত্র জানান চিনের বর্ধিত শাটডাউন মার্চের গোড়ার দিকে টেলিভিশনগুলির সরবরাহ চেইনের উপর সামান্য প্রভাব ফেলেছে। তিনি বলেন, ‘ভারতে এর চাহিদা পূরণের সামঞ্জস্যকে বজায় রাখার জন্য আমরা কাজ করছি, পরিস্থিতি শীঘ্রই স্বাভাবিক হবে।' যদিও এসির বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি ওই ব্যক্তি। রিয়ালমি ইন্ডিয়া জানিয়েছে যে সম্প্রতি বেশ কিছু দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে কিছু উপাদান আমদানিতে ঘাটতি ছিল। কিন্তু অধিকাংশ সরবরাহকারীরাই কাজে ফিরে এসেছেন এবং পরিস্থিতি তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক হবে। রিয়ালমি জানিয়েছেন যে তাদের কর্মীরা দিনরাত এক করে একাধিক শিফটে কাজ করছেন এবং শীঘ্রই নতুন কিছু লঞ্চ করা হবে। অ্যাপেল এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি এবং টিসিএল মন্তব্য করতে চায়নি।
কোভিড–১৯–এর প্রভাব
ইলেকট্রনিক ও স্মার্টফোন তৈরির উপভোক্তারা পণ্যের শেষের দিকের উৎপাদন ও কোনও উপাদানের জন্য চিনের ওপরই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নির্ভরশীল থাকেন। চিন ছাড়াও কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়েছে স্যামসাং ও এলজির হাব দক্ষিণ কোরিয়াতেও।