আর্থিক প্যাকেজ নিয়ে মোদী সরকারকে তুলোধোনা! কেন্দ্রের কাছে কী দাবি জানালেন চিদাম্বরম?
আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের লক্ষে ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এরমধ্যে গত পাঁচদিনে কোন খাতে কত টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ দেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। এবার এই অর্থনৈতিক প্যাকেজ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম।
এই প্যাকেজ অত্যন্ত হতাশাজনক
এদিন তিনি এই বিষয়ে বললেন, 'এই প্যাকেজ অত্যন্ত হতাশাজনক। রাজস্ব ঘাটতির ক্ষেত্রে সরকার যে বরাদ্দ অর্থ ঘোষণা করেছে তাতে সমাজের বহু অংশকে গুরুত্বই দেওয়া হয়নি। যার মধ্যে দেশের গরিব-পরিযায়ী শ্রমিকরাও রয়েছেন।'
ঘোষিত আর্থিক প্যাকেজে গরিবদের গুরুত্ব দেওয়া হয়নি
চিদাম্বরম বলেন, 'ঘোষিত আর্থিক প্যাকেজে গরিব, কৃষক, শ্রমিক শ্রেণিকে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তাই এনিয়ে পুনর্বিবেচনা করা উচিত সরকারের।' রাজস্ব ঘাটতি খাতে ১,৮৬,৬৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, 'এই বরাদ্দ অর্থ জিডিপি-র ০.৯১ শতাংশ হবে। বর্তমান যে পরিস্থিতিতে দেশ রয়েছে বা অর্থনীতির যা অবস্থা, সেই অনুযায়ী এই প্যাকেজ অপর্যাপ্ত। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ০.৯১ শতাংশ বরাদ্দ হল।' ফলে তাঁর আবেদন, সরকার যেন পুনরায় আরেকটা নতুন অর্থনৈতিক প্যাকেজের ঘোষণা করে। যা জিডিপি-র ১০ শতাংশের সমান হয়।
মোদীর আত্মনির্ভর ভারত অভিযান
সম্প্রতি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের কথা ঘোষণা করেন। যার অঙ্গ হিসেবে ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজের কথা বলেন। যা কোরোনা পরিস্থিতিতে অনেক সাহায্য করতে পারে। এই পুরো টাকার বিভাজন ক্ষেত্রবিশেষে গত পাঁচদিন ধরে বিশ্লেষণ করেন নির্মলা সীতারমন।
কী ছিল এই ঘোষণায়?
তাতে এমএসএমই থেকে শুরু করে, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, বেসরকারি সংস্থা, ছোটো প্রতিষ্ঠানের খাতে অর্থ বরাদ্দ করেন তিনি। এই ক্ষেত্রগুলিকে উজ্জীবিত করতে একাধিক প্যাকেজের ঘোষণা করেন।
কী বলেন চিদাম্বরম?
আজ ভিডিয়ো কনফারেন্সে এক বিবৃতি দিয়ে চিদাম্বরম বলেন, 'রাজস্ব ঘাটতির যে প্যাকেজ সরকার অনুমোদন করেছে বা বরাদ্দ করেছে তাতে সমাজের বহু অংশের আশা পূর্ণ করতে ব্যর্থ হবে । যে দেশের জনসংখ্যার নিম্নস্তরে প্রায় ১৩ কোটি পরিবার রয়েছে। এদের মধ্যে কেউ কৃষক, পরিযায়ী শ্রমিক, কেউ দিনমজুরি করেন । সে দেশে এমন প্যাকেজ হতাশাজনক।'
অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ
এই প্যাকেজ সম্বন্ধে বলতে গিয়েই তিনি সংসদীয় কমিটির বিষয় তুলে ধরেন। বলেন, 'এই আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণার আগে সংসদীয় কমিটির সঙ্গে বৈঠক করা দরকার ছিল। কিন্তু অর্থমন্ত্রী তা করেননি। এতে আদতে বোঝাই যাচ্ছে সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে সংসদকে এড়িয়ে যাচ্ছ। সরকার সংসদীয় কমিটিকে এড়িয়ে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে।'