নিপীড়নের প্রমাণের বদলে যে তিনটি নথি দিতে হবে শরণার্থীদের, জানালেন অসমের বিজেপি মন্ত্রীর
ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে যে সমস্ত অমুসলিম শরণার্থীরা ভারতে এসেছেন, তাঁদের প্রত্যেককেই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। নতুন নাগরিকত্ব সংশোধিত আইনে এই কথাই বলা হয়েছিল। তবে এবার নতুন দাবি করলেন অসমের অর্থমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি দাবি করেন, ধর্মীয় নিপীড়ন না হলেও যে সকল অ-মুসলিম শরণার্থী বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে এসেছেন তাদের ভারত নাগরিকত্ব দেবে।
নিপীরণের কী প্রমাণ দেবে?
একটি সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় অসমের এই বিজেপি নেতা বলেন, 'অনেকেই আছেন যারা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। সেই সকল শরণার্থীরা সেই দেশে ধর্মীয় নিপীরণের কী প্রমাণ দেবে? সেদেশের পুলিশ স্টেশন তো সেই সকল নথি তাদের হাতে তুলে দেবে না।' তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ধর্মীয় নিপীড়নের নথি জারি করতে হবে। বাংলাদেশ কখনই তা করবে না। যদি তা হয়, তবে এটি প্রতিষ্ঠিত হবে যে তাদের দেশে ধর্মীয় নিপীড়ন হয়েছিল এবং এটি বিশ্বব্যাপী দেশের ভাবমূর্তিটিকে কলঙ্কিত করবে।'
যে তিনটি নথি লাগবে
এরপর তিনি বলেন, 'সিএএ-তে আবেদনকারী শরণার্থীদের শুধু মাত্র তিনটি নথি জমা দিতে হবে। এমন একটি নথি তাদের দেখাতে হবে যাতে প্রমাণ হয় যে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে তারা ভারতে এসেছে। একটি নথি যাতে প্রমাণ হয় যে তারা হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, পারসি বা জৈন ধর্মের কোনও একটির অবলম্বন করেন। আর শেষ নথিতে তাদের প্রমাণ করতে হবে যে কোনও এক সময় তারা পাকিস্তান, বাংলাদেশ বা আফগানিস্তানের বাসিন্দা ছিলেন।'
নাগরিকত্ব সংশোধিত আইনের শর্ত
নতুন নাগরিকত্ব সংশোধিত আইনের শর্ত, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ বা তার আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে যে সমস্ত অমুসলিম শরণার্থীরা ভারতে এসেছেন, তাঁদের প্রত্যেককেই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। অর্থাৎ, হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, পারসি বা জৈন ধর্মের যেই লোকেরা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে থেকে ভারতে বসবাস করেছেন, তারা ভারতের নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন। বিলটি লোকসভায় ৩১১-৮০ ব্যবধানে পাশ হয়। এরপর রাজ্যসভায় এটি পাশ হয় ১২৫-৮২ ব্যবধানে।
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা দাবি করেছিলেন ...
এর আগে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা দাবি করেছিলেন, অসমে পাঁচ লক্ষেরও বেশি একটি ব্যক্তিকেও নাগরিকত্ব দেওয়া হলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কোনওভাবেই অসম চুক্তিকে লঙ্ঘন করেনি বলে দিবা জানিয়ে তিনি বলেন, 'যদি রাজ্যের পাঁচ লক্ষেরও বেশি একজনকেও নাগরিকত্ব দেওয়া হয় তবে আমি রাজনীতি ছাড়ব। পাঁচ লক্ষ জনগণের মধ্যে অতিরিক্ত একজনও যদি যোগ হয়, তবে তার দায়িত্ব নেবে অসম সরকার।'