লোকসভা ভোটের দৌড়ে শামিল ২৫ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী এবং এখন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন, এ কথা তো সবার জানা। কিন্তু ২৫ জন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সংসদে ঢুকতে গুঁতোগুঁতি শুরু করেছেন, এই তথ্য হয়তো সর্বজনবিদিত নয়। আবার এই ২৫ জনের তালিকায় ৬ জনই রয়েছেন কর্নাটক থেকে!
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবেগৌড়া ১৯৯৬ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তার আগে তিনি ছিলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী। এবার তিনি লড়ছেন হাসান লোকসভা আসন থেকে। ৫২ বছরের দীর্ঘ রাজনীতিক জীবনে এটাই তাঁর শেষ ভোটযুদ্ধ বলে জানিয়েছেন ঘনিষ্ঠ মহলে। তাঁর পুত্র এইচ ডি কুমারস্বামীও এক সময় কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তিনি লড়ছেন চিক্কবল্লাপুর আসন থেকে। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী তথা কংগ্রেসের হেভিওয়েট বীরাপ্পা মইলির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন তিনি। দেবেগৌড়া এবং কুমারস্বামী দু'জনই লড়ছেন জেডি-এস টিকিটে। প্রসঙ্গত, বীরাপ্পা মইলিও এক সময় কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
কর্নাটকের আরও দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা এবং ডি ভি সদানন্দ গৌড়া-ও এবার লোকসভা ভোটে প্রার্থী হয়েছেন। প্রথমজন লড়ছেন শিমোগা থেকে বিজেপি টিকিটে। দ্বিতীয়জনও বিজেপি টিকিটে লড়ছেন ব্যাঙ্গালোর উত্তর আসন থেকে। দু'জনে জেতার ব্যাপারে আশাবাদী। আর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এন ধরম সিং দাঁড়িয়েছেন বিদর থেকে কংগ্রেস টিকিটে। অবশ্য তিনি এখন সাংসদও বটে।
গোয়া থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে লড়ছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চার্চিল আলেমাও। তিনি দক্ষিণ গোয়া আসনে প্রার্থী হয়েছেন।
অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুও লোকসভা ভোটে প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর আশা, টিডিপি এবার সীমান্ধ্রে খুব ভালো ফল করবে।
চমকপ্রদ বিষয় এই ২৫ জন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর তালিকায় ৬ জনই রয়েছেন কর্নাটক থেকে
মহারাষ্ট্রের নান্দেদ আসনে কংগ্রেসের টিকিটে লোকসভা ভোটে লড়ছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চবন। তিনি আদর্শ আবাসন দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত। রাজ্য কংগ্রেসের নেতারা ভেবেছিলেন, তিনি টিকিট পাবেন না। কিন্তু সবাই চমকে দিয়ে কংগ্রেস হাইকমান্ডের কাছ থেকে টিকিট আদায় করে নিয়েছেন তিনি।
ওডিশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গিরিধর গোমাং লড়ছেন কংগ্রেসের টিকিটে। প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন নিজেরই স্ত্রী হেমা গোমাং।
গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শঙ্কর সিং বাঘেলা সবরকণ্ঠ লোকসভা আসনে কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে তিনি মাত্র পাঁচ হাজার ভোটে হেরে গিয়েছিলেন।
উত্তরপ্রদেশ থেকেও লোকসভা ভোটে লড়ছেন অন্তত চারজন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। এঁরা হলেন বিজেপি-র রাজনাথ সিং এবং উমা ভারতী, সমাজবাদী পার্টির মুলায়ম সিং যাদব এবং আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়াল। রাজনাথ সিং এবং মুলায়ম সিং এক সময় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। রাজনাথ সিং লড়ছেন লখনউ থেকে। মুলায়ম সিং যাদব লড়ছেন দু'টি আসনে। মৈনপুরী এবং আজমগড়। মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লড়ছেন ঝাঁসি থেকে। দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বারাণসী থেকে লড়বেন নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে।
বিহারের সরন আসন থেকে লড়ছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়িদেবী। ভাই সাধু যাদব দাঁড়িয়েছেন দিদির বিরুদ্ধে। এ ছাড়া সংযুক্ত জনতা দলের টিকিটে হাজিপুর থেকে লড়ছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রামসুন্দর দাস। এঁর বয়স ৯০ বছর এবং সবচেয়ে বয়স্ক প্রার্থী এবারের লোকসভা ভোটে।
পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং কংগ্রেসের তরফে লড়ছেন অমৃতসর থেকে। তাঁর বিরুদ্ধে লড়ছেন বিজেপি-র অরুণ জেটলি।
জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা লড়ছেন শ্রীনগর থেকে। তিনি এখন সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীও বটে। কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ লড়ছে উধমপুর-ডোডা লোকসভা আসন থেকে। ইনিও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। এখন সাংসদ।
এ ছাড়াও যে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীরা লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন, তাঁরা হলেন উত্তরাখণ্ডের বি সি খাণ্ডুরি, বি এস কোশিয়ারি এবং রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক। এঁরা সবাই বিজেপি টিকিটে লড়ছেন।
ঝাড়খণ্ডের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মারান্ডি এবং শিবু সোরেনও শামিল ভোটের দৌড়ে।